রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন
ফতুল্লা প্রতিনিধিঃ ফতুল্লার আল আমিন ভান্ডারি (৪৮) নামের এক কবিরাজকে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার ৮ সেপ্টেম্বর ভোররাতের যে কোন সময়ে ধর্মগঞ্জ চতলার মাঠ এলাকায় মৃত তৈয়ুবআলী মেম্বারের বাড়ীর নীচ তলায়। সে তার তৃতীয় স্ত্রী ও প্রথম সংসারের পুত্রকে নিয়ে এই বাড়ির নিচ তলায় ভাড়ায় বসবাস করতো। আল আমিন ভান্ডারির গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর জেলার সদর থানার দক্ষিন পুকুরিয়ায়। তার বাবার নাম হারুনুর রশীদ। সে পেশায় একজন কবিরাজ। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহতের ভাই আলিম শেখ জানায়,তার বড় ভাই আল আমিন ভান্ডারি বর্তমানে কবিরাজি করলেও এক সময় জাহাজে বাবুর্চি হিসেবে কাজ করতো। তিন বছর পূর্বে সে জাহাজের চাকুরি ছেড়ে দিয়ে নোয়াখালি তার শ্বশুড় বাড়ী এলাকায় বসবাস করতে শুরু করে। দেড় বছর পূর্বে সে ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ চতলারমাঠ এলাকায় এসে বসবাসের পাশাপাশি কবিরাজি শুরু করে। জাহাজে চাকুরি করাকালীন সময়ে একই জাহাজে কর্মরত হাফেজ মাস্টার নামের একজনের সাথে আল আমিনের পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে হাফেজ মাস্টার প্রায় সময় আল আমিনের নিকট আসতো এবং রাত্রি যাপন করতো। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১০ টার দিকে হাফেজ মাস্টার আল আমিনের নিকট আসে। তার সাথে একটি কালো ব্যাগও ছিলো। তখন আল আমিন ভান্ডারি স্ত্রী ও ছেলেকে পাশের রুমে ঘুমানোর জন্য বলে। রাত ৪টার দিকে আল আমিন ভান্ডারি তার স্ত্রীকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে ভাত তরকারী নিজ রুমে দিয়ে সেমাই রান্না করে নিয়ে আসতে বলে। রান্না করা ভাত এবং সেমাই খেয়ে আল আমিন ভান্ডারি নিজ রুমের দরজা লাগিয়ে হাফেজ মাস্টারকে নিয়ে শুয়ে পড়ে। সকাল আটটার দিকে আল আমিনের স্ত্রী দরজা খোলা দেখতে পেয়ে উঁকি মেরে দেখে আল আমিনের রক্তাক্ত দেহ খাটের উপর পড়ে আছে।
আলিম শেখ আরো জানান, তার ভাইয়ের সাথে থাকা হাফেজ মাস্টার চারটার পরে কোন এক সময়ে তার ভাইকে গলাকেটে জবাই করে পালিয়ে গেছে। হাফেজ মাস্টার সাথে করে নিয়ে গেছে তার নিহত ভাইয়ের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন।
ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মফিজুল ইসলাম নিহত আল আমিনের স্ত্রী রোকসানার বরাত দিয়ে জানান, নিহত আল আমিন ভান্ডারীর পূর্ব পরিচিত হাফেজ মাস্টার রাত দশটার দিকে বাসায় আসে। পরে রাত একটার দিকে হাফেজ মাস্টারকে নিয়ে আল আমিন তার শ্বাশুড়িকে গ্রামের বাড়ী নোয়াখালীতে যাওয়ার জন্য পঞ্চবটী বাসট্যান্ড থেকে বাসে তুলে দেয়। সেখান থেকে তারা নদীর ঘাটে যায়। পরবর্তীতে রাত তিনটার দিকে বাসায় এসে আমাকে বলে সে অসুস্থবোধ করছে এবং মাথা ঝিমুনি দিচ্ছে। সে ভাত খেয়ে মেহমান হাফিজের জন্য খাবার নিজ রুমে দিয়ে আসতে বলে। স্ত্রী খাবার দিয়ে এসে দরজার বাইরে সিড়িতে বসে থাকলে তাকে গালমন্দ করে শালিকার ঘরে পাঠিয়ে দেয়। পরে সে দরজা লাগিয়ে দেয়। রোকসানা আল আমিন ভান্ডারির তৃতীয় স্ত্রী। গত রমজান ঈদের পর রোকসানাকে বিয়ে করে আল আমিন।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আযম মিয়া পিপিএম জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যা কান্ডের রহস্য উদঘাটনসহ ঘটনার সাথে জড়িত খুনিকে গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/alokitonarayanga/public_html/wp-includes/functions.php on line 5609caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/alokitonarayanga/public_html/wp-includes/functions.php on line 5609
আপনার মতামত লিখুন........