রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩৬ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধিঃ পদ্মা বহুমুখী সেতুতে সড়ক পথে যানবাহন চালুর পরে এবার রেল চলাচলের জন্য পরীক্ষামূলক চালু হয়েছে ট্রেন চলাচল। আজ বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৭ মিনিটে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনটি যাত্রা করে।
এদিন দুপুর ১২টি ১৭ মিনিটে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছায়। ২ ঘণ্টা ১০ মিনিটে ৮২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয় ট্রেনটি।
ট্রেনটি ফরিদপুরের ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছালে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হওয়া মানুষ ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে স্বাগত জানান।
যাত্রা শুরুর আগে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, এই রেললাইন উদ্বোধনের ফলে দক্ষিণ অঞ্চলে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন হবে। এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা সহজ হবে, এর সুফল পাবে সারাদেশের মানুষ।
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের সঙ্গে পরীক্ষামূলক ট্রেনযাত্রায় আরও উপস্থিত রয়েছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীসহ রেলওয়ে ও প্রকল্পের কর্মকর্তারা পরীক্ষামূলক এই যাত্রায় সবকিছু পর্যবেক্ষণ করবেন।
জানা গেছে, পদ্মা সেতু হয়ে আগামী অক্টোবরেই ঢাকা থেকে ট্রেন যাবে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত। আগামী ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন দেশের সবচেয়ে বড় মেগা প্রকল্পের ট্রেন চলাচল। উদ্বোধনের দিন সুধী সমাবেশও হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এখনো সেটি চূড়ান্ত হয়নি।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ৪ মে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় সরকার। এছাড়া ৪৩ কিলোমিটার লুপ লাইন (স্টেশনের আগে-পরে বাড়তি লাইন) নির্মাণসহ নতুন ট্রেন চালুর জন্য ১০০টি আধুনিক যাত্রীবাহী বগি কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই মধ্যে প্রকল্পের ৮২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
এই পথে ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচলের লক্ষ্যে কোনো রেলক্রসিং রাখা হয়নি। ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত আগের ৬টিসহ ২০টি আধুনিক স্টেশন করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয় ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। পরে বেড়ে প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকায়।
চীনের অর্থায়নে জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের) ভিত্তিতে প্রকল্পের কাজ করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ (সিআরইসি)। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দিচ্ছে ২৬৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। বাকি অর্থ ব্যয় করছে বাংলাদেশ সরকার।
সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের জুন মাসে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ২০৩০ সাল নাগাদ রেলপথটির ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে প্রতিদিন ১৩ জোড়া, ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে ৭ জোড়া ও কাশিয়ানী-যশোর অংশে ৫ জোড়া ট্রেন চলবে। এ সময়ের মধ্যে ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে বছরে ৪০ লাখ, ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে বছরে ১৭ লাখ ও কাশিয়ানী-যশোর অংশে বছরে সাড়ে ১৩ লাখ যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব বলে ধরা হচ্ছে।
পদ্মা সেতুর সড়ক পথ সাধারণ জনগণের জন্য খুলে দেওয়ার পর থেকে রেলওয়ে বাড়তি গুরুত্ব দেয় মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের কাজে। এরপরও ঢাকা থেকে যশোর অংশের কাজ শেষ করতে না পারায় পুরো পথের পরিবর্তে প্রথমে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, স্টেশনগুলোর কাজ চলছে। উদ্বোধনের তিন মাসের মধ্যে প্রধান প্রধান স্টেশনগুলো চালু হয়ে যাবে। তখন ট্রেনের সংখ্যাও বাড়বে। আগামী বছর যশোর পর্যন্ত রেল চালুর লক্ষ্য নিয়ে কাজ এগিয়ে চলছে।
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/alokitonarayanga/public_html/wp-includes/functions.php on line 5609caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/alokitonarayanga/public_html/wp-includes/functions.php on line 5609
আপনার মতামত লিখুন........