মো. মনির হোসেন: দীর্ঘ প্রতিক্ষিত প্রায় ৩০ বছর পর অবশেষে নির্বাচনের স্বাদ উপভোগ করতে যাচ্ছেন ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ মানুষ।
নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৩ ডিসেম্বর উক্ত ইউনিয়নের নির্বাচনের ভোট গ্রহনের দিন নির্ধারন করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বুধবার(১০ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন (ইসি) সভায় অনুমোদনের পর চতুর্থ ধাপের ভোটের তফসিল ঘোষণা করেন ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খন্দকার। চতুর্থ ধাপে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাসহ জেলার আরও ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ২৯ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ধার্য করা হয়েছে। মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই ৩০ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর এবং প্রত্যাহারের শেষ দিন ৬ ডিসেম্বর।
মামলার জটিলতা নেই, আর তাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিলে ফতুল্লা ইউনিয়ন বাসীর মাঝে স্থানীয় নির্বাচনের গুরুত্ব অনেকটাই বেশী। সর্বক্ষেত্রেই ভোটের হাওয়া বইছে। তবে অনেকটাই একপক্ষীয়। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছাড়া অন্যদের ভোটে তেমন আগ্রহ নেই।
তবে নৌকা প্রতিক পেতে ফতুল্লা ইউনিয়নে চার শীর্ষ নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। এই চার শীর্ষ নেতার মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। সম্প্রতি বিএনপি এই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ায় শাসক দলের নেতারা মনোনয়নকেই ভোটে জেতার নিশ্চয়তা মনে করচ্ছে। তাই নির্বাচনের মাঠে ভোটের চেয়ে বেশি লড়াই নৌকা পেতে। তবে কে হবেন নৌকার মাঝি তা অনেকটাই নির্ভর করছে স্থানীয় এম পি শামীম ওসমানের উপর।
চার নেতার মধ্যে সবচাইতে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন ফতুল্লা ইউনিয়নের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন। ১৯৯২ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে প্রয়াত চেয়ারম্যান নূর হোসেন নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি মারা গেলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে লুৎফর রহমান স্বপন দায়িত্ব পালন করছেন। তবে তারসমর্থকরা তার পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারনা শুরু করে দিয়েছে।
নৌকা প্রতিক নির্বাচন করার আশায় ইতোমধ্যেই লবিং শুরু করেছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফতুল্লা থানার যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল আলী। তার সমর্থকরাও তার পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ ব্যানার ফেস্টুন করে প্রচারনা শুরু করে দিয়েছেন।
ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফরিদ আহম্মেদ লিটনও নৌকা প্রতিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই কাজ করে যাচ্ছেন। তার সমর্থকরাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ব্যানার, ফেস্টুন করে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন।
ফতুল্লা থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাইজুল ইসলাম ও নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করার জন্য লবিং করছেন।তার সমর্থকরাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ব্যানার, ফেস্টুন করে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন।
ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি অবু মো: শরিফুল হকেরসমর্থকরাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ব্যানার, ফেস্টুন করে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে।
তবে মীর সোহেল আলী বা ফরিদ আহম্মেদ লিটনের মতো প্রচারনায় নেই তারা।
ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদবাসী ১৯৯২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারীর নির্বাচনের পর অদ্যাবধি কোন নির্বাচনী আমেজ পায়নি। তাই সরকার কর্তৃক স্থানীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণায় ফতুল্লাবাসীর মাঝে দেখা গেছে ভিন্ন আমেজ। আসন্ন ইউপি নির্বাচনে বিএনপির কোন প্রার্থীর নাম এখনো শোনা যাচ্ছেনা। তবে সরকারদলীয় আওয়ামীলীগের অনেকেই নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচনের আশা প্রকাশ করলে ও সরকারদলীয় প্রভাবশালী শীর্ষ স্থানীয় চার নেতার মধ্যেই মূল লড়াই হচ্ছে। তবে প্রকাশ্যে কেউ মুখ না খুললেও স্থানীয় সাংসদের আশীর্বাদ পেতে ইতোমধ্যেই জোড় লবিং শুরু করে দিয়েছেন তারা। কেউ কেউ আবার নিজ সমর্থকদের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আপনার মতামত লিখুন........