আলোকিত নারায়ণগঞ্জ:করোনা পরিস্থিতির কারনে নারায়ণগঞ্জ টু ঢাকা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার দীর্ঘ ১৭০ দিন পর অবশেষে বৃহস্পতিবার থেকে চালু হতে যাচ্ছে । স্বাস্থ্যবিধি মেনে এক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী উঠানোর নিয়ম থাকলেও ভাড়া থাকবে আগের মতোই। তবে, কমবে ট্রেনের সংখ্যা।
করোনা পরিস্থিতির কারণে গত ২৪ মার্চ থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ১৭০ দিন পরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রোডে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর চালু হতে যাচ্ছে ট্রেন সার্ভিস।
গত ৯ সেপ্টেম্বর রেলওয়ের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক ট্রান্সপোটেশন) মো. খায়রুল কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রথম ধাপে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর থেকে চলবে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটে লোকাল ট্রেন। এ জন্য যাত্রীদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জারিকৃত নির্দেশনাসমূহ ও স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে এক আসন ফাঁকা রাখতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ স্টেশনের মাস্টার গোলাম মোস্তফা জানান, এক আসন ফাঁকা রেখেই ট্রেন চালুর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে, ভাড়া থাকছে পূর্বের মতোই। ডেমু ট্রেনের জন্য নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকার ভাড়া হবে ২০ টাকা আর সাধারণ ট্রেনের জন্য ভাড়া হবে ১৫ টাকা করে।
এদিকে, অন্য সময় ১৬ জোড়া ট্রেন চলাচল করলেও ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ জোড়া চলবে। সকালের প্রথম ট্রেনটি না চলার সম্ভাবনাই বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানান , প্রথম ধাপে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর থেকে চলবে চট্টগ্রাম-ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, আখাউড়া-ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা-আখাউড়া রুটে তিতাস কমিউটার, ঢাকা-জয়দেবপুর-ঢাকা রুটে তুরাগ কমিউটার, নারায়ণগঞ্জ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে লোকাল ট্রেন।
দ্বিতীয় ধাপে ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে চলবে চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে জালালাবাদ এক্সপ্রেস, ঢাকা-সিলেট-ঢাকা রুটে সুরমা মেইল, নোয়াখালী-ঢাকা-নোয়াখালী রুটে ঢাকা/নোয়াখালী এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম-বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-চট্টগ্রাম রুটে ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস, ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ বাজার-ঢাকা রুটে ভাওয়াল এক্সপ্রেস, ময়মনসিংহ-বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব-ময়মনসিংহ রুটে ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস, চাঁদপুর-লাকসাম-চাঁদপুর রুটে চাঁদপুর কমিউটার, নোয়াখালী-লাকসাম-নোয়াখালীর রুটে নোয়াখালী কমিউটার।
তৃতীয় ধাপে আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে চলবে চট্টগ্রাম-নাজিরহাট-চট্টগ্রাম রুটে নাজিরহাট কমিউটার, চট্টগ্রাম-দোহাজারী-চট্টগ্রাম রুটে লোকাল ট্রেন, মোহনগঞ্জ-ময়মনসিংহ-মোহনগঞ্জ রুটে লোকাল ট্রেন, ঝারিয়া ঝাঞ্জাইল-ময়মনসিংহ-ঝারিয়া ঝাঞ্জাইল রুটে লোকাল ট্রেন, সান্তাহার-বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশন-সান্তাহার রুটে উত্তরবঙ্গ মেইল, পার্বতীপুর-বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশন পার্বতীপুর রুটে কাঞ্চন কমিউটার, লালমনিরহাট-বিরল-লালমনিরহাট রুটে দিনাজপুর কমিউটার, লালমনিরহাট-বুড়িমারী-লালমনিরহাট রুটে বুড়িমারী কমিউটার, কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট-কুড়িগ্রাম রুটে কুড়িগ্রাম মেইল, রাজবাড়ী-ভাঙ্গা-রাজবাড়ী রুটে রাজবাড়ী এক্সপ্রেস, রাজবাড়ী-ভাটিয়াপাড়া-রাজবাড়ী রুটে ভাটিয়াপাড়া এক্সপ্রেস।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, যাত্রীদের সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতে কোচের ধারণক্ষমতার ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি করতে হবে। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনাসমূহ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন পরিচালনা করতে হবে।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে দুই মাস বন্ধ থাকার পর ৩১ মে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। করোনা সংক্রমণ এড়াতে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে প্রথমে আট জোড়া এবং পরে ৩ জুন আরও ১১ জোড়া ট্রেন যাত্রী পরিবহন শুরু করে।
১৫ আগস্টের পর পর্যায়ক্রমে সব আন্তঃনগর ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১৬ আগস্ট ১৩ জোড়া এবং ২৭ আগস্ট থেকে আরও ১৯ জোড়া ট্রেন চালু হয়। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সর্বশেষ ৫ সেপ্টেম্বর আরও ১৯ জোড়া ট্রেন যুক্ত হয় ট্রেনের বহরে। এছাড়া ৫ সেপ্টেম্বর থেকে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিধি-নিষেধের কিছু বিষয় শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেয় রেলপথ মন্ত্রণালয়।
আপনার মতামত লিখুন........