আলোকিত নারায়ণগঞ্জ :সদ্য বিদায়ী জেলা পুলিশ সুপার হারুনুর রশিদের বদলীর রেশ কাটতে না কাটতেই বন্দরে স্বল্পেরচক এলাকায় পিতা-পুত্রকে রাতের আধারে ঘর থেকে তুলে নিয়ে ৫হাজার টাকায় মুক্তি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বন্দর থানার এসআই আবু তালেবের বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ২টায় স্বল্পেরচক থেকে যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় ওয়ারেন্টের আসামী জুম্মনকে না পেয়ে পুলিশ তার পিতা ইমরান ও ছোট ছেলে অন্তরকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধানের কার্যালয়ে আটক করে।
জানা গেছে,বন্দরের ২২নং ওয়ার্ডস্থ স্বল্পেরচক এলাকার মোঃ ইমরান হোসেনের ছেলে মোঃ জুম্মন তার স্ত্রী সূবর্না আক্তার মুক্তির সাথে পারিবারিক কলহের জের ধরে বাকবিতন্ডা হয়। পরে জুম্মনের স্ত্রী সূবর্না আক্তার মুক্তি তার মাকে ফোন করলে দাওয়াতের অযুহাত দিয়ে মেয়েকে তার সাথে নিয়ে যায়। এরপর কয়েকদিন পূর্বে নারায়ণগঞ্জ ম্যাজিস্টেট কোর্টে গিয়ে জুম্মনের স্ত্রী স্বামী জুম্মনকে আসামী করে যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় মামলা করে। ওই মামলার ওয়ারেন্টে গত শুক্রবার রাত ২টায় বন্দর থানার এসআই আবু তালেব ও তার সঙ্গীয় ফোর্স স্বল্পেরচক এলাকার মোঃ ইমরান হোসেনের বাড়িতে গিয়ে ওয়ারেন্ট তামিল অভিযানের নামে তান্ডব চালায়। ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী জুম্মনকে না পেয়ে তার পিতা ইমরান ও ছোট ছেলে অন্তরকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে নাসিক ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধানের অফিসে নিয়ে আটক করে রাখে।
এদিকে কাউন্সিলর দুলাল প্রধানের সহযোগী মাদক স¤্রাট কুদ্দুছ আটককৃত পিতা-পুত্রের কাছে ২০হাজার টাকা দিলে তারা পুলিশের ঝামেলা থেকে মুক্ত করে দিবে বলে প্রস্তাব করে। অসহায় পিতা-পুত্র গ্রেফতারের ভয়ে কাউন্সিলর দুলাল প্রধানের পা ধরে কান্নাকাটি করে। একপর্যায়ে কাউন্সিলর সহযোগী মাদক স¤্রাট কুদ্দুছ ৫হাজার টাকার বিনিময়ে পিতা-পুত্রকে পুলিশের হাত থেকে মুক্ত করে ও ঘটনাটি গোপন রাখতে তাদের বলে।
এ বিষয়ে ভূক্তভোগী ইমরান হোসেন গনমাধ্যমকে জানায়,এটা দেশের কেমন আইন। ছেলের অপরাধে পিতাকে গ্রেফতার করবে। দেশে কি কোন আইনের শাষন নেই। পুলিশ মানুষের সেবার জন্য কাজ করবে সে জায়গায় তারাই যদি ভক্ষক হয় তাহলে সাধারন মানুষ কোথায় যাবে। আর আমি কাউন্সিলর দুলাল প্রধানের এলাকায় থাকি। একজন প্রতিনিধি হয়ে পুলিশের পক্ষে সাফাই গেয়ে মানুষের দূর্বলতার সুযোগ নেয়া কোন ধরনের সেবা।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি জানান,সবেমাত্র এসপি হারুনের বদলী হল এরমধ্যেই শুরু হয়ে গেল পুলিশের বানিজ্য। আর দারোগা তালেবের কথা কি বলব। সে তো ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর দুলাল প্রধানের চাকুরী করে বেড়ায়। প্রতিদিন একবার হলেও কাউন্সিল দুলাল প্রধানের অফিসে সে হাজিরা দিবে। দুলাল প্রধানের প্রশাসনিক সচিব হয়ে সে কাজ করে। বন্দর থানা অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলামকে একাধিকবার দারোগা তালেবের বিরুদ্ধে নালিশ করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। তাই মানুষ প্রশাসনের কাছ থেকে মূখ ঘুরিয়ে নিয়েছে।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার এসআই আবু তালেবের মুঠোফোনে আলাপকালে টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, জুম্মনকে না পেয়ে তার বাবাকে কাউন্সিলরের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়েছে তার ছেলে যেন দ্রত কোর্ট স্যারেন্ডার করেন।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুলের ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমরা আইনের লোক হয়েতো বেআইনী কাজ করতে পারিনা। যার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকবে তাকেই ধরতে হবে এবং পরিবারের কাউকে হেনস্থা করা যাবেনা। বিষয়টি আমার জানা ছিলনা।
আপনার মতামত লিখুন........