স্টাফ রিপোর্টার :নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলায় ২০ জন নিহতের দুটি মামলায় ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক শাহ মোহাম্মদ জাকির হাসানের আদালতে ২জন আসামির উপস্থিতিতে এ সাক্ষ্য নেয়া হয়।
সাক্ষ্যদাতারা হলেন তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের পিএ হুমায়ুন কবির, বাদল চন্দ্র রায়, তৎকালীন যুবলীগ নেতা খালিদ হাসান, সৈয়দ মোঃ লুৎফর রহমান, শফিকুজ্জামান, আ.স.ম মোকারম হোসেন আজম, সুলতান ফারুক, তানজিলুর রহমান, মোঃ হুমায়ুন কবির ও সরদার ফরিদ উদ্দিন।
অভিযুক্তদের মধ্যে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন আদালতে শওকত হাশেম শকু ও নিহত যুবদল ক্যাডার মমিনউল্লাহ ডেভিডের ভোট ভাই শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল উপস্থিত ছিলেন।
বাকী আসামীদের মধ্যে হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর হয়েছে এবং ওবায়দুল্লাহ রহমান পলাতক রয়েছে।
এছাড়া আনিসুল মোরসালিন ও মুহিবুল মুত্তাকিন ভারতের দিল্লী কারাগারে আটক রয়েছে। আগামী ১ এপ্রিল মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।
গতকাল মামলার উপস্থিত আসামী পক্ষের আইনজীবী হিসেবে ছিলেন অ্যাডভোকেট রফিক আহমেদ ও অ্যাডভোকেট আলী আকবর। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে ছিলেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুর রহিম ও অ্যাডভোকেট মাকসুদা আহমেদ।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের ১৬ জুন চাষাড়া বোমা হামলার পর দিন তৎকালীন শহর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় পৃথক দুইটি (একটি বিস্ফোরক অন্যটি হত্যা) মামলা দায়ের করে।
মামলায় জেলা বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক তৈমূর আলম খন্দকারকে প্রধান আসামী করে বিএনপি ও এর অঙ্গ দলের মোট ২৭ জনকে আসামী করা হয়।
ঘটনার দীর্ঘ ২২ মাস পর ২০০৩ সালের এপ্রিল মাসে বোমা ট্রাজেডি মামলা দুইটির ফাইনাল রিপোর্টে বলা হয়, উল্লেখিত ২৭ জনের কেউই চাষাড়া আওয়ামী লীগ অফিসে ১৬ জুন ২০০১ সালের বোমা হামলায় জড়িত নয়। যদি ভবিষ্যতে অত্র মামলার তথ্য সম্বলিত ক্লু পাওয়া যায় তবে মামলাটি পুনরুজ্জিবিত করার ব্যবস্থা করতে হবে।
দীর্ঘ প্রায় ছয় বছর মামলাটি হিমাগারে থাকার পর সিআইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ২ জুন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করে সুষ্ঠু তদন্ত করে মামলাটি নিষ্পত্তি করার জন্য সরকারকে আদেশ দেয়।
ঘটনার দীর্ঘ ১২ বছর পর দুটি মামলায় ২০১৩ সালের ২ মে ৬ জনকে অভিযুক্ত ও ৩১ জনকে অব্যাহতি প্রদান করে।
নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুইটি মামলার প্রত্যেকটির ৯৪৭ পাতার চার্জশীট দাখিল করা হয়।
এতে মামলা থেকে চার্জশীট থেকে তৈমূর আলম খন্দকার সহ ৩১ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আর অভিযুক্ত ৬ জন হলো নারায়ণগঞ্জে ক্রসফায়ারে নিহত যুবদল ক্যাডার মমিনউল্লাহ ডেভিডের ভোট ভাই শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান, ওবায়দুল্লাহ রহমান, ভারতের দিল্লী কারাগারে আটক সহোদর আনিসুল মোরসালিন, মুহিবুল মুত্তাকিন এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু।
আপনার মতামত লিখুন........