আলোকিত নারায়ণগঞ্জ : পাগলী মায়ের সন্তান ইয়াসিন। শ্যাম বর্ণের ছোট্ট শিশু। ৬ বছর বয়সী এই শিশু বড় হয়েছে চাষাঢ়া রেলস্টেশনে। রেলওয়ে ষ্টেশনে বেড়ে ওঠা এই বাচ্চাটিকে কম বেশি সবাই চেনে টাইগার নামে। আর টাইগারই হলো চাষাঢ়া ষ্টেশনের এক টুকরো ভালোবাসা।
নিস্পাপ চেহারার এই ছোট্ট শিশুটির ভাঙা ভাঙা আদুরে কথা অজানা পথচারীকেও তাকে একটু ছুঁয়ে দিতে বাধ্য করে। কিন্তু গত ৪ দিন তার যাবৎ নিষ্পাপ হাসি ও দুরন্তপনা শূন্য চাষাঢ়া রেলস্টেশন।
শিশু টাইগারকে আর চাষাঢ়া স্টেশনে দেখা যায় না। যে বাচ্চাটি সারাদিন ছোট দুটি পায়ে ষ্টেশনের এক মাথা থেকে অন্য মাথা ছুটে চলত বিরামহীন ভাবে আজ সে শান্ত।
অচেতন ভাবে পড়ে আছে ঢাকার মহাখালিতে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের পঞ্চম তলায় ৫নং ওয়ার্ডের ১৫ নাম্বার বেডে। ছোট্ট কোমল হাতে পরানো হয়েছে ক্যানেলা। টাইগারের শরীরে একসাথে বাসা বেঁধেছে হাম, লাং ইনফেকশন, ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া, ডেংগু জ্বর। নিস্পাপ মুখটিতে যেন রাজ্যের ক্লান্তি ভর করেছে।
সমাজের মানুষরূপী হায়নাদের নির্মমতার প্রমাণ ইয়াসিন। চাষাঢ়া ষ্টেশনে এক হত দরিদ্র দম্পতির মেয়ে মানুসিক প্রতিবন্ধী সোনিয়া। কখন যে সমাজের পাষন্ড পিপাসার বলী হয়েছিল সেটা বলার ক্ষমতা তার নেই। কিন্তু সেই নির্মমতার ফলেই প্রতিবন্ধী মায়ের কোল জুড়ে আসে ফুটফুটে শিশু সন্তান ইয়াসিন।
বাবা নেই, মা থেকেও না থাকার শামিল। মা মানুসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় সে তার নানা কমরুদ্দিন মিয়ার কাছেই বড় হচ্ছে। মায়ের আদর কি ঠিক করে বলতেও পারে না। তবুও দারিদ্র্যতা ও বাবা-মায়ের মমতাহীন এই বাচ্চাটির মুখে সব সময় লেগে থাকত এক চিলতে হাসি।
কমরুদ্দিন মিয়া নাতির চিকিৎসার সবরকম চেষ্টাই করছে। কিন্তু দারিদ্যের কাছে তার হাত দুটি বাঁধা। সমাজের সকলের কাছে টাইগারকে সুস্থ হওয়ার সাহায্য চাইছে।
কমরুদ্দিন মিয়া জানান, টাইগারের পরীক্ষা সব হাসপাতালের বাহিরের ডায়গনষ্টিক সেন্টার থেকে করানো হচ্ছে। প্রতিদিন রক্ত পরীক্ষা (সি ভি সি) করাচ্ছে। টাইগারের জ্বর সাময়িকভাবে কমে বাড়ে।
প্রতিদিন স্যালাইন দিলেও নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে তার শরীর। বাচ্চাটির জন্য প্রতিদিন অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। চাষাঢ়ার কয়েকজন সেচ্ছাসেবী টাকার যোগানের চেষ্টা করছে। কমরুদ্দিন মিয়া সকলের কাছে তার নাতির কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করেছেন।
কথায় আছে “দশের লাঠি, একের বোঝা” সবাই মিলে যদি একটু একটু করে সাহায্য করি তবে বাচ্চাটির চিকিৎসা তার নানা-নানির জন্য বোঝা হবে না।
আমরা সবাই মিলে চাইলেই হয়তো পারি সেই নিস্পাপ মুখের অনাবিল হাসিটুকু আবার ফিরিয়ে আনতে। আমাদের সকলের চাওয়াতেই হয়তো মহান আল্লাহ পাক এই প্রানবন্ত হাসিটুকু বাঁচিয়ে রাখবেন।
আপনাদের সকলের কাছে একটাই আবেদন, বাচ্চাটাকে একবার নিজ চোখে দেখে আসবেন, তারপর না হয় সাহায্যের কথা ভাববেন। যোগাযোগ ও সাহায্যের জন্য- ইফতেকার আহমেদ (বিকাশ নাম্বার- ০১৯৩২৩৩৬৪৬৭)।
আপনার মতামত লিখুন........