আলোকিত নারায়ণগঞ্জঃনোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বিবস্ত্র করে এক নারীকে নির্যাতনের ঘটনার মামলার প্রধান আসামিসহ দুইজনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১১)।
সোমবার (৫ অক্টোবর) ভোরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
এরপর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর বিশেষ আভিযানিক দল রোববার ৪ অক্টোবর দিনগত রাত আড়াইটায় নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন চিটাগাংরোড এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে দেলোয়ার হোসেনকে (২৬) গ্রেফতার করা হয়। এসময় চাঞ্চল্যকর নারী নির্যাতনের ঘটনায় সম্পৃক্ত ‘দেলোয়ার বাহিনী’র প্রধান দেলোয়ার হোসেনের কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীকালে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সোমবার ভোর সাড়ে ৫টায় ঢাকা জেলার কামরাঙ্গীচর থানাধীন কামরাঙ্গীচর ফাঁড়ির গলি এলাকা থেকে এ মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন বাদলকে (২০) আটক করা হয়।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ‘দেলোয়ার বাহিনীর’ কয়েকজন সদস্য ওই গৃহবধূর ঘরে ঢুকে তাকে বিবস্ত্র করে বিভিন্নভাবে শারিরীকভাবে নির্যাতন করে। তখন ওই ঘটনার ভিডিও করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে পরবর্তীকালে টাকা দাবি করে। গত ৪ অক্টোবর ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সারাদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, ‘দেলোয়ার বাহিনী’ ওই এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা এবং নানা সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত। তাদের ভয়ে এলাকার লোকজন ভীতসন্ত্রস্ত। দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে দুটি হত্যা মামলা রয়েছে।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যম থেকে সরিয়ে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ঘটনায় জড়িত অন্য অপরাধীদের আটক করতে র্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে নিজ ঘরে এক নারীর স্বামীকে বেঁধে রেখে আসামিরা তাকে ধর্ষণর চেষ্টা করেন। তারা এ ঘটনার ভিডিওচিত্র ধারণ করেন। গত এক মাস ধরে তারা এ ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে তাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তারা এ ভিডিও ছেড়ে দেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী গতকাল রাত পৌনে ১২টায় পৃথক দুটি মামলা করেন। একটি মামলা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ও অন্যটি পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে। দুই মামলায় নয়জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় রহমত উল্লাহ (৪১) ও আবদুর রহিম (২০) নামে দুইজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক একজন নারীকে বিবস্ত্র করে মারধর করছে। তাদের একজন পা দিয়ে ওই নারীর মুখ চেপে ধরেছে। বারবার আকুতি জানানোর পরও নির্যাতন করা বন্ধ করেনি তারা।
ওই নারীর বাবা সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা ‘প্রভাবশালী হওয়ায়’ এতদিন ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সাহস হয়নি তাদের।
আপনার মতামত লিখুন........