নারায়ণগঞ্জমঙ্গলবার , ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

প্রসংগঃ শিক্ষা ও সু-শিক্ষা

Alokito Narayanganj24
ফেব্রুয়ারি ১, ২০২২ ৭:৫৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মো. মনির হোসেন: শিক্ষা নিয়ে লেখার মত যোগ্যতা আমার মত এমন একজন কম জানা লোকের পক্ষে কখনও সম্ভব নয়, কারণ পৃথিবীর শেষ্ঠ মানব মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, যদি জ্ঞান বা শিক্ষা অর্জন করতে চাও তাহলে সুদুর চীনে যাও, অতএব বোঝাই যাচ্ছে শিক্ষা নিয়ে অনেক বড় বড় মনিষীরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আলোচনা করেছেন, তারই ধারাবাহিকতায় একটু আলোচনা করছি।

জ্ঞানী এবং শিক্ষিত এই শব্দটির ক্ষেত্রে বর্তমানে সার্টিফিকেটের দিস্তে, ডিগ্রী ডিপ্লোমার, ভার আর নিজের ঢাক নিজে পেটানো ডেসিবেলের উচ্চতা অনুযায়ী নির্ধারিত করা হয়, তবে এটা নির্ধারণের মাপকাঠি নয়, এই বক্তব্যে আমরা সবাই হয়তো একমত হব। প্রকৃত জ্ঞানী এবং শিক্ষিত মানুষের কিছু লক্ষণ অবশ্যই রয়েছে, কিন্তু সেই লক্ষণ গুলো চোখ দিয়ে দেখে নয়, কান দিয়ে শুনে আমাদের পরখ করতে হবে। একজন প্রকৃত জ্ঞানী মানুষ তার বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকাশ করেন তার মধ্যে থাকা জ্ঞানের গভীরতা। তিনি ফাঁকা কলসির মত অযথা টাং টাং করে জ্ঞানের বন্যা বইয়ে কান ঝালাপালা করবেন না। স্বল্প বাক্যে মূল্যবান বক্তব্য প্রকাশ করা তার বৈশিষ্ট্য।

সু-শিক্ষা বলতে প্রচলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বাস্তব জীবনের বিচিত্র প্রেক্ষাপট থেকে অর্জিত শিক্ষা? ”সু-শিক্ষা” শব্দটি দুইটি শব্দ নিয়ে গঠিত, সু যার অর্থ সঠিক এবং শিক্ষা যার অর্থ পাঠ বা জ্ঞান চর্চা করা। সুতরাং, সু-শিক্ষা অর্থ সঠিক জ্ঞান চর্চা করা।

এখানে, জ্ঞান অর্জন করা প্রকৃত উদ্দেশ্য, কিন্তু প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই জ্ঞানার্জনের জন্য যথেষ্ট নয়। পর্যাপ্ত জ্ঞানার্জন ব্যতীত কেউ সু-শিক্ষিত হতে পারে না। তাই সুশিক্ষিত হতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি প্রাকৃতিক ও বাস্তবধর্মী শিক্ষা অর্জন করতে হবে। কিন্তু প্রকৃতি থেকে শিক্ষালাভ সহজ ব্যাপার নয়। এর জন্য প্রয়োজন : ১,সৃজনশীল, ২.অধ্যবসায়, ৩.কঠোর পরিশ্রম।

আমাদের সমাজে এমন অনেকেই রয়েছে যাদের প্রথাগত উচ্চতর ডিগ্রি আছে, কিন্তু দেশ ও জাতির বৃহত্তর কল্যাণে তারা কিছুই করতে পারেনি, কারণ তাদের এসব ডিগ্রি সু-শিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত ছিলনা । অন্যদিকে, অনেক মহান ব্যক্তি ছিলেন যারা বর্তমানে পৃথিবীতে স্বর্ণাক্ষরে রক্ষিত আছেন তারা এক সময় কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জন করেননি কিন্তু তাদের মধ্যে ছিল সৃজনশীলতা, প্রকৃত নিয়ে বিস্ময়কর ভাবনা । আর তারাই এই পৃথিবীর অজানা রহস্যকে উদ্ভাবন করে পৃথিবী ও মানুষের কল্যাণে অনেক কিছু করে গেছেন। তাদের মধ্যে অ্যারিস্টটল,সক্রেটিস, প্লেটো,নিউটন, গ্যালিলিও, নজরুল প্রমুখের নাম উল্লিখযোগ্য।এরা মৃত হয়েও অমর তাদের জ্ঞান। এরা সবাই৩.কঠোর ছিলেন ঝবষভ-বফঁপধঃবফ স্ব-শিক্ষিত ।

তবে এখন প্রশ্ন হলো সমাজ কি মূর্খ মানুষ দ্বারা খারাপ হয়? আমার এমনটা মনে হয় না, কেননা শিক্ষিত আর মূর্খ এগুলো আপেক্ষিক বিষয়, অতীতে এমন ডিগ্রি ছিল না, কিন্তু সামাজিক বন্ধন এখনকার তুলনায় অনেক বেশি বলিষ্ঠ ছিল। তখনকার সমাজের সব কিছু ভাল বলতে না পারলেও সব কিছু যে খারাপ ছিল তেমনটাও বলা যায় না, এখান থেকে ধারণা করা যেতে পারে মূর্খ মানুষ দ্বারা সমাজ খুব বেশি খারাপ হয় বলা যায় না।

সমাজ কি শিক্ষিত মানুষের মূর্খ মানসিকতার জন্য খারাপ হয়? দুঃখজনক ভাবে এর সাথেও একমত হতে পারছি না। শিক্ষিত বলতে কি বোঝায় এটা অসংজ্ঞায়িত হলেও শিক্ষিত মানেই যে জ্ঞানী নয় এটা বেশ স্পষ্ট। আর মূর্খ মানসিকতা বলতে যদি নির্বোধ মানসিকতা ভাবা হয় তাহলে হিসেবে মিলছে না। কেননা আজ থেকে ১০০ বছর আগে বাংলার গ্রামের মানুষদের যেমন সহজ-সরল চিন্তাধারা ছিল তা আজকের মানুষদের কাছে নির্বোধ মনে হওয়া খুবই স্বাভাবিক।

তবে কিছু মানুষ শিক্ষিত বটে, তাদের মধ্যে সু-শিক্ষার অভাব আছে। দেশে দুর্নীতি কিন্তু শিক্ষিত মানুষ দিয়েই হচ্ছে। পুকুর চুরি কিন্তু এইটাও অশিক্ষিত মানুষ দিয়ে হচ্ছে না। অশিক্ষিতরা যে দুর্নীতি করে না সেটা নয়, কিন্তু পুকুর চুরি হয় শিক্ষিতদের দিয়েই। তাদের মধ্যে সু-শিক্ষার অভাব রয়েছে।

আবার কিছু মানুষ শিক্ষিত বটে কিন্তু তাদের কর্মকাণ্ডে সেটার ছাপ নেই, তাদের অসচেতনতার জন্য। কখন কি করতে হবে, কখন কাকে কি বলতে হবে, এগুলো বিষয়ে তাদের অসচেতনতা দেখা যায় না। ফলে যা ইচ্ছা তাই বলে ফেলে, করে ফেলে। এক্ষেত্রে স্মার্টনেস দেখানোর অভাবটাই বড় অন্তরায়, তাদের জন্য। ঠিক উল্টো চিত্র দেখা যায় কিছু মানুষের অক্ষর-জ্ঞান নাই বটে, তারা বেশ স্মার্ট। তাদের দেখে কখনই মনে হবে না তাদের অক্ষর-জ্ঞান নাই। তারা অনেকটাই স্বশিক্ষিত।

আরও একটা কারণ হতে পারে, প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই খারাপ সত্ত্বা রয়েছে। শিক্ষিত মানুষের এই খারাপ সত্ত্বাকে নিজের নিয়ন্ত্রনের রাখার ক্ষমতা একটু বেশি। তাই শিক্ষিত মানুষের থেকে এই খারাপ বিষয় গুলো মানুষ কম আশা করে। কিন্তু তাদের মধ্যে থেকে হঠাৎ করেই খারাপ কিছু দেখে অন্য সবাই একটু বেশি মর্মাহত হয়। আশেপাশে অনেক মানুষই পাওয়া যায় যারা অনেক ভাল মনে হয়, কিন্তু হঠাৎ তারা এমন এক কাজ করে বসে যেটা কেউ কল্পনাও করতে পারে না। এটা মেনে নেওয়া ছাড়া কিছু করার থাকে না।

সর্বপরি, মূর্খের মত আচরণ যারা সবসময় করে, তারা জেনে বুঝেই করে, উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যই করে। তারা মুলত নামে শিক্ষিত, অন্ততে কুশিক্ষা নিয়ে চলে। অতএব, দেশ ও জাতির জন্য আমাদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়াই উচিত।

লেখকঃ সিনিয়র রিপোর্টার, বাংলাদেশের আলো

সিনিয়র সহ-সভাপতি ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাব।

নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!