আলোকিত নারায়ণগঞ্জ : যৌতুকের দাবিতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় নারায়ণগঞ্জের যুবলীগ নেতা শাহ ফয়েজউল্লাহ ফয়েজকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৮ মার্চ) রাত সাড়ে নয়টার দিকে শহরের জামতাল এলাকা থেকে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
এর আগে বিকেলে পুলিশের জরুরী পরিসেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন কল পেয়ে ফতুল্লা থানা পুলিশ ফয়েজের স্ত্রী আরোহী হাওলাদার (২২)কে স্বামীর বাড়ি থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে তিনি তার স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করলে পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে ফয়েজউল্লাহ ফয়েজকে সেই মামলায় গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত শাহ ফয়েজউল্লাহ ফয়েজ শহরের জামতলা এলাকার শাজাহান মিয়ার ছেলে ও জেলা যুবলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক। ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে গাজীপুরে আততায়ীদের হাতে খুন হওয়া নারায়ণগঞ্জের ফাইভ স্টার গ্রুপের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী এবং ইন্টারপোলের গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামী নুরুল আমিন মাকসুদ ওরফে বরিশাইল্লা মাকসুদের শ্যালক হন এই ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজ।
মামলা দায়ের ও গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে আরোহী নামে এক নারীকে ফয়েজউল্লাহ ফয়েজের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। তিনি দাবি করেছিলেন, তার স্বামী ফয়েজ তাকে আটকে রেখে শারিরীকভাবে নির্যাতন করেছিলেন। পরে তিনি তার স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ফয়েজ উল্লাহকে গ্রেফতার করে।
আরোহী হাওলাদার তার অভিযোগে উল্লেখ করেছন, বিয়ের পর থেকেই ফয়েজউল্লাহ ফয়েজ যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে তার উপর নির্যাতন চালাতেন। এরমধ্যে তাদের ঘরে একটি সন্তানও জন্ম নেয়। তারপরেও যৌতুক দাবি করে আসছিলেন স্বামী ফয়েজ। পরবর্তীতে বাবার বাড়ি থেকে তিনি আট লাখ টাকা এনে ফয়েজের হাতে তুলে দেন। এতেও সন্তুষ্ট না হয়ে আরও দুই লাখ টাকা দাবি করে পুনরায় নির্যাতন করতে থাকেন তার উপর। সর্বশেষ গত ২৭ মার্চ টাকার দাবিতে
তাকে ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন চালান ফয়েজ। পরে তিনি ২৮ মার্চ ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সাহায্য চাইলে পুলিশ এসে তাকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করে।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিন ধরে ফয়েজউল্লাহ ফয়েজ তার অনুগামীদের নিয়ে জামতলা নিজ এলাকায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করছিলেন। সর্বশেষে তিনি গ্রেফতার হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেন। একদিকে তিনি যৌতুকের দাবিতে নিজের স্ত্রীকে ঘরে বন্দি করে নির্যাতন করছেন, অন্যদিকে বাইরে এসে দিব্যি জনসেবা করছিলেন।
ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম হোসেন সময় নিউজকে জানান, দ্বিতীয় স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের মামলায় ফয়েজ উল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন........