নারায়ণগঞ্জমঙ্গলবার , ১০ ডিসেম্বর ২০১৯
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ

বক্তাবলীবাসীর সম্পদ বঙ্গবন্ধুর সেই দুর্লভ চিঠি

Alokito Narayanganj24
ডিসেম্বর ১০, ২০১৯ ১:১১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

আলোকিত নারায়ণগঞ্জ : মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসে একাত্তরের ২৯ নভেম্বর দিনটি ছিল নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য বেদনাবিধুর দিন। ওই দিন ফতুল্লা থানার দুর্গম চরাঞ্চল বুড়িগঙ্গা নদীবেষ্টিত বক্তাবলীতে হত্যাযজ্ঞ চালায় পাক-হানাদার বাহিনী। এ দিন ১৩৯ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ দেন।

কিন্তু স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও নিহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। ফলে সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর পাঠানো একটি চিঠিই এখন সম্পদ হয়ে রয়েছে। সেই চিঠিটি এখনও আগলে রেখেছে গণহত্যায় শহীদ হওয়া একজনের ভাই।

ফতুল্লা গঙ্গানগর এলাকার বাসিন্দা মো. আলী হোসেন জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমার বড় ভাইসহ ১৩৯ জনকে হারিয়েছি। ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শহীদ পরিবার হিসেবে আমাদের একটি চিঠির মাধ্যমে সমবেদনা জ্ঞাপন করে প্রত্যেক শহীদের জন্য দুই হাজার টাকা ও আহতদের জন্য পাঁচশ’ টাকা অনুদান প্রদান করেছিলেন।

কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর আর কেউ আমাদের খোঁজ নেয়নি। তাই শহীদ পরিবার হিসেবে আমরা আর স্বীকৃতি পাইনি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাক্ষরিত ও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছিলে, প্রিয় ভাই/বোন, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে আপনার সুযোগ্য পুত্র/পিতা/স্বামী/মা/স্ত্রী আত্মোৎসর্গ করেছেন। আপনাকে আমি গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমার আন্তরিক সমবেদনা। আপনার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতিও রইল আমার প্রাণঢালা সহানুভূতি। এমন নিঃস্বার্থ মহান দেশপ্রেমিকের পিতা/পুত্র/স্বামী/স্ত্রী হওয়ার গৌরব লাভ করে সত্যি আপনি ধন্য হয়েছেন। ‘প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল’ থেকে আপনার পরিবারের সাহায্যার্থে আপনার সংশ্লিষ্ট মহকুমা প্রশাসকের নিকট ২ হাজার টাকার চেক প্রেরিত হল। চেক নম্বর সিএ ০০৫১৬। আমার প্রাণভরা ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা নিন। ইতি-শেখ মুজিব।

২৯ নভেম্বরের ঘটনার দিন প্রসঙ্গে তৎকালীন ডেপুটি কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা তমিজউদ্দিন রিজভী জানান, তারা মুজিব বাহিনীর অংশহিসেবে প্রশিক্ষণ শেষ করে বক্তাবলী ও এর আশপাশ গ্রামে অবস্থান নেন। ওই সময়ে বক্তাবলী গ্রামে এক থেকে দেড়শ’ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। নদীবেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় এলাকাটিকে নিরাপদ মনে করতেন মুক্তিযোদ্ধারা।

বক্তাবলীতে অবস্থান করেই মূলত মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন স্থানে পাক-হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অপারেশন করার পরিকল্পনা করতেন। ঘটনার দিন ২৯ নভেম্বর ছিল প্রচণ্ড শীত। সকাল থেকেই ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন ছিল পুরো এলাকা। ভোরের দিকে হঠাৎ করেই পাকবাহিনী গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে থাকে। অপ্রস্তুত মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা জবাব দেন।

উভয় পক্ষের মধ্যে সম্মুখ যুদ্ধ চলাকালীন মুন্সিগঞ্জ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি ব্যাটালিয়ন বক্তাবলীতে এসে এখানকার মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দিলে তাদের শক্তি বৃদ্ধি পায়। পরে তারা একত্রে পাকবাহিনীর সঙ্গে প্রায় চার ঘণ্টা একটানা যুদ্ধ চালান।

এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা মোক্তারকান্দি কবরস্থানের সামনে কয়েকজন রাজাকারকে ধরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন। মুক্তিযোদ্ধাদের উপর্যুপরি আক্রমণের মুখে পাক-হানাদাররা পিছু হঠতে শুরু করে। এ সময় তারা রাজাকার, আল বদর, আল-শামস বাহিনীর পরামর্শে ১৩৯ জন নিরস্ত্র গ্রামবাসীকে ধরে এনে লাইন ধরিয়ে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে।

এতে নিহত হন শাহিদ, ফারুক, অহিদ, মনির, শাহ আলম, রহমতউল্লাহ, শামসুল, আলম, সালামত, খন্দকার, সুফিয়া, আম্বিয়া, খোদেজাসহ ১৩৯ জন। পিছু হটার সময় হানাদারবাহিনী পেট্রল ও গানপাউডার দিয়ে পুড়িয়ে দেয় বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী পাড় সংলগ্ন বক্তাবলী পরগণার, রাজাপুর ডিগ্রির চর, মুক্তাকান্দি, গঙ্গানগর, রামনগর, গোপালনগর, রাধানগরসহ ২২টি গ্রাম।

নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!