নারায়ণগঞ্জমঙ্গলবার , ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ

মসজিদে বিস্ফোরণ: পাইপ পরিত্যক্ত ২২ বছর, গ্যাস বন্ধ করেনি তিতাস

Alokito Narayanganj24
সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০ ১২:৫৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

আলোকিত নারায়ণগঞ্জ:নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় ঘুরে-ফিরেই আসছে তিতাসের চরম গাফিলতির চিত্র। ফায়ার সার্ভিস তদন্ত দল ধারণা করছে, মসজিদ বিস্ফোরণ ও ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা তিতাসের গ্যাস মসজিদে প্রবেশের কারণেই ঘটেছে। আর যে পাইপটি মসজিদের পাশের মাটি খুঁড়ে বের করা হয়েছে তাতে ছয়টি ছিদ্র পাওয়া গেছে। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এই পুরোনো পাইপটি অপসারণ করেনি তিতাস অফিস। কোনো কাজে না লাগলেও তাতে গ্যাসের প্রবাহও বন্ধ করা হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৯৫ সালের দিকে এখানে টিনের একটি মসজিদ ছিল। ২০০০ সালের দিকে যখন ভবন নির্মাণ শুরু হয় তখন এর তদারকিতে ছিলেন জিয়াউল হক।

তিনি বলছেন, এক ইঞ্চির গ্যাস লাইনের পরিবর্তে যখন তিন ইঞ্চির লাইন বসানো হয় তখন এক ইঞ্চির একটি লাইন মূল ভবনের নিচে ছিল। তিন ইঞ্চি মোটা পাইপ বসিয়ে আশপাশের বাড়িগুলোতে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

এরপর অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়া ওই লাইনে কেন গ্যাস বন্ধ করা হয়নি, তার সদুত্তর দিতে পারেনি তিতাস গ্যাসের স্থানীয় কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, যারা ওই পাইপ বসিয়ে গ্যাস সংযোগ নিয়েছিল তাদেরই ‘দায়িত্ব ছিল’ বিষয়টি তিতাস কর্তৃপক্ষের নজরে আনা। তারা তা করেননি বলেই মূল লাইন থেকে এই পাইপের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি।

বাইতুস সালাত জামে মসজিদে গ্যাস ছিদ্রের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডির তদন্ত দল।

মসজিদটিতে বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে শনিবার দুপুরে দ্বিতীয় দিনের মতো ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সিআইডি। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিআইডির ডিআইজি মাইনুল হাসান।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে গ্যাস ছিদ্রের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। তবে ফায়ার, তিতাস, ডিপিডিসিসহ তদন্ত কমিটির সব বিষয় নিয়ে কাজ করা হবে। তদন্তে যারা দোষী প্রমাণিত হবেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঘটনার দিন মসজিদের ছয়টি এসির বিস্ফোরণে ওই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হলেও পরে জানা যায়, মসজিদের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া তিতাসের গ্যাসলাইনে ছিদ্র থাকায় মসজিদের ভেতরে গ্যাস জমা হয়। বৈদ্যুতিক স্পার্ক থেকে ওই গ্যাসে আগুন ধরে বিস্ফোরণ ঘটে বলে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তাদের ধারণা।

স্থানীয় মাহফুজুল আলম দেশ রূপান্তরকে জানান, তল্লা সবুজবাগ এলাকার কয়েকজন বাড়ির মালিক মিলে আশির দশকে প্রথম এক ইঞ্চি ব্যাসের গ্যাস লাইন দিয়ে সংযোগ নেন। ২০০০ সালের দিকে তিন ইঞ্চি ব্যাসের লাইনটি বসানো হয়। তখন নতুন তিন ইঞ্চি পাইপ থেকে সংযোগ দেওয়া হলেও পুরোনো এক ইঞ্চি লাইনটি সচল অবস্থায় মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকে। নতুন সংযোগ যাওয়ার পর ওই তিনটি বাড়ির সামনে থেকে পুরোনো সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তবে সড়কের মূল লাইন থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়নি।

বায়তুস সালাত জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি আবদুল গফুর দেশ রূপান্তরকে এর আগে বলেছেন, বিস্ফোরণ ঘটনার ১৫ দিন আগে মসজিদের ভেতরে গ্যাসের গন্ধ বেড়ে যাওয়ায় আমরা কমিটির লোকজন তিতাসকে জানানোর সিদ্ধান্ত নিই। মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক তিতাসের অফিসে গিয়ে বিষয়টি জানিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু লাইন মেরামতের জন্য তিতাস থেকে নাকি ৫০ হাজার টাকা চেয়েছে, সেক্রেটারি আমাকে সেটাই বলেছেন। তিনি যেহেতু মারা গেছেন, তাই বিষয়টি এখন আর বলা যাচ্ছে না কে ৫০ হাজার টাকা চেয়েছে।

তিতাসের কমিটির প্রধান আব্দুল ওয়াহাব তালুকদার রোববার দেশ রূপান্তরকে বলেন, এখানে কোনো খাড়া পাইপ বা রাইজার ছিল না। এক ইঞ্চি পাইপটি মাটির নিচে চাপা পড়ে ছিল। মাটির নিচে চাপা পড়া পাইপ দিয়ে বছরের পর বছর গ্যাস বের হওয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত!

তিনি বলেন, আমরা সরেজমিনে গিয়ে মাটি খুঁড়ে ছিদ্র পেয়েছি। সেখান থেকে গ্যাস বের হচ্ছিল। মসজিদের পূর্ব ও উত্তর পাশে পুরো সড়ক খুঁড়ে সব লাইন বের কর পরীক্ষা করেছি। পূর্ব পাশে কোনো ছিদ্র পাওয়া না গেলেও উত্তর পাশের পাইপে ছয়টি ছিদ্র পাওয়া গেছে। সেগুলো মেরামত করার পর এলাকায় গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে আবার।

তিনি আরো বলেন, বেসমেন্টের ফাউন্ডেশনের কাজ করার সময় তিতাসের পাইপের র‌্যাপিং নষ্ট করা হয়েছে। এ কারণে মাটির সংস্পর্শে এসে পাইপ ছিদ্র হয়েছে। সেই ছিদ্র দিয়ে গ্যাস বের হয়েছে।

তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী আল মামুন বলেন, পরিত্যক্ত পাইপের বিষয়টি তিতাসের স্থানীয় অফিসের জানা থাকার কথা। আঞ্চলিক অফিসেরই ওই পাইপটি কেটে দেওয়ার কথা। এখন কীভাবে এই পাইপটি রয়ে গেছে সেটা তদন্তের মাধ্যমে বলা যাবে। মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে গ্যাসের বিষয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছিল বলে যে দাবি করা হয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে তিতাসকে কেউ কিছু জানায়নি। এমনকি স্থানীয় থানায়ও বিষয়টি জানানো হয়নি। আমাদের একটা রেজিস্ট্রার খাতা মেনটেইন করা হয়। সেখানে গত ৬-৭ মাসে এ ধরনের কোনো অভিযোগ আসেনি। তিতাসের কার কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, তারা এখন বলতে পারছে না। হয়তো স্থানীয় কোনো লোক মারফত তারা খবর পাঠিয়ে থাকতে পারেন’।

নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!