ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ডাক্তার দিয়েই চলছে চিকিৎসার কাজ। ২৮ জন ডাক্তারের মধ্যে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে মাত্র ১ জন ডাক্তার। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীরা।
সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহাবুবুর রহমান ঢাকায় ব্যক্তিগত কাজে অবস্থান করছেন। তিনি আগামী ডিসেম্বরের ৩ তারিখ কর্মজীবন শেষ করবেন আর সেই জন্য কাগজপত্র গোছাতেইস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মরত একমাত্র চিকিৎসক ডা. উদয় কুমার মিত্র পুরুষ ওয়ার্ড পরিদর্শন শেষে মহিলা ওয়ার্ড পরিদর্শন করছেন। অপর ডা. মিতু দেবনাথ প্রশিক্ষণের জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন। সাধারণ রোগীদের লাইন থাকলেও ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসাসেবা ছাড়াই চলে যাচ্ছেন অনেকেই। দীর্ঘদিন ধরে কোটি টাকা মূল্যের এ-ক্সরে মেশিনসহ বেশ কয়েকটি মূল্যবান মেশিন অবহেলা ও অযত্নে পড়ে রয়েছে। পরপর ২টি অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে এত কারো কোনো মাথাব্যথা না থাকলেও উপজেলা সদরে নামে-বেনামে ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিক ব্যবসা চলছে রমরমা। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত হাসপাতালে ডাক্তার/স্টাফদের আসার কথা থাকলেও প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার কারণে অনেকেই সকাল সাড়ে ৯টার পর এসে দুপুর ১টা পূর্বেই কর্মস্থল ত্যাগ করতে দেখা গেছে। আর সকল হলেই হাসপাতালের বারান্দায় ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের উৎপাত দিনে দিনে চরম আকার ধারণ করেছে।
রাজাপুর উপজেলায় ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপস্থিত একমাত্র ডাক্তার ডা. উদয় বলেন, ২ জন সহকারী নিয়ে পুরো ৫০ শয্যার হাসপাতাল আমাকে একাই সামলাতে হচ্ছে। অনেক রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েই ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছি। রাজাপুর উপজেলায় প্রায় ১ লাখ ৫৫ হাজার লোকের বাস। যেখানে ২৮ জন ডাক্তার সার্বক্ষণিকভাবে চিকিৎসাসেবা দেয়ার কথা থাকলেও একজন ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসাসেবা দেয়া বর্তমানে হাস্যকর ও আলোচিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ৭ মাস বেশির ভাগ সময়ই এরকম অবস্থা বিরাজ করছে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান বলেন, উপজেলায় একমাত্র সরকারি হাসপাতালের এমন অবস্থা ভাবতেও কষ্ট হয়। আমি আমার এলাকার সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এ বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি, আশা করছি দ্রুতই এর সমাধান হবে।
আপনার মতামত লিখুন........