মো. মনির হোসেন: প্রতি ঋতুতেই ভিন্ন ভিন্নভাবে সেজে ওঠে প্রকৃতি, আর প্রকৃতির সাথে সেজে ওঠে মানুষ ও পরিবেশ, দিনবদলের সাথে বদলে যায় শীতের পোশাক, এ জন্য ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবে শীতের এ সময়টাতে স্মার্ট তরুণদের কাছে জ্যাকেট ও ব্লেজারের চাহিদা অনেকটাই বেড়ে যায়।
শীত মৌসুমে পুরুষদের পছন্দ জ্যাকেট ও ব্লেজার, শীতের ফ্যাশন হিসেবে এ ধরনের পোশাকের চাহিদা বাড়ছেই।
তাই শীত এলেই ব্লেজার ও জ্যাকেটের দোকানগুলোতে বিভিন্ন রংয়ের ব্লেজার ও জ্যাকেট কিনতে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ে, তবে এক সময় ব্লেজার শুধুমাত্র পুরুষরা পরলেও এখন দেশের চিরাচরিত ফ্যাশনের চলমান ধারায় পরিবর্তন হচ্ছে প্রতিনিয়ত, পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ফ্যাশনেবল পোশাক হিসেবে ব্যবহার করছে ব্লেজার ও জ্যাকেট।
তবে পোশাক মালিকদের একটি সূত্র জানায়, আমরা প্রতি বছর ফ্যাশনেবল তরুণ-তরুনীদের কথা মাথায় রেখে ব্লেজার ও জ্যাকেটের ডিজাইনের নানা পরিবর্তন করে থাকি, ‘কথায় আছে পোশাকের মাধ্যমেই ব্যক্তিত্ব বা ব্যক্তির রুচি ফুটে ওঠে’, তাই নিজের পরিধেয় পোশাকটি হতে হবে আধুনিক, মার্জিত ও আভিজাত্যের চাদরে মোড়া।
আপনার পছন্দের ব্লেজারটি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশে যেকোনো টেইলার্সের দোকানে কাপড় কিনে বানাতে পারেন, এ ছাড়া, রেডিমেট কিনতে হলে বসুন্ধরা সিটি, নিউমার্কেট, বঙ্গবাজারসহ নারায়ণগঞ্জের যেকোনো মার্কেট থেকে কিনতে পারবেন আপনার পছন্দের ব্লেজারটি।
নারায়ণগঞ্জ চাষাঢ়ার শহীদ মিনার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শীতের সন্ধ্যায় প্রিয় গায়কের গানে তাল মেলাতে মেলাতে গরম কফিতে চুমুক দিচ্ছিলেন দুই তরুণী, তাদের গায়ে রঙিন ব্লেজার দেখে জানতে চাইলাম এই পোশাক বেছে নেওয়া প্রসঙ্গে জানালেন, শীতের পোশাক হিসেবে রোজ গায়ে জড়াতে হচ্ছে বাড়তি পোশাক, এ সময়ের পোশাকের ক্ষেত্রে তারা দু’জনই পছন্দ করেন একটু আঁটসাঁট পোশাক, এ জন্য ব্লেজার তাদের প্রথম পছন্দ, এ ধরনের পোশাক একই সঙ্গে এনে দেয় উষ্ণতা ও ফ্যাশন।
এদিকে রাজধানীসহ নারায়ণগঞ্জের ফুটপাতে এরই মধ্যে বিক্রি শুরু হয়েছে কম টাকার কোট-ব্লেজার, ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ দোকানে হরেক রকম কোট-ব্লেজার নিয়ে বসেছেন হকাররা, গুলিস্তানের জিপিও সংলগ্ন ফুটপাতে ব্লেজার বিক্রি করা প্রায় ৩০ জন হকারের দেখা মেলে। তারা বলছেন, গত এক সপ্তাহে বিক্রি কিছুটা বেড়েছে, শীত বাড়লে বিক্রি আরও বাড়বে।
হকার মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন বলেন, দুই সপ্তাহ আগে দোকান দিয়েছি, এই সপ্তাহে বিক্রি ভালো, সন্ধ্যার পর বিক্রি বাড়ে, ফুটপাতের এই দোকানগুলোতে সাতশ থেকে শুরু করে আড়াই হাজার টাকার ব্লেজার পাওয়া যায়, তিনি আরও বলেন, আমার কাছে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকার ব্লেজার আছে, এখন দাম কম হলেও শীত বাড়লেই আড়াই থেকে তিন হাজার টাকার নিচে ব্লেজার পাওয়া যাবে না।
নারায়ণগঞ্জের সমবায় মার্কেটের এক জ্যাকেটের দোকানী জানান, চামড়ার জ্যাকেটে আছে নানা রঙের খেলা, ইস্পাতের বোতামের ব্যবহার জ্যাকেটগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে, চামড়ার এক রঙের জ্যাকেট ছাড়াও আছে চেকের নকশার জ্যাকেট, কোনোটিতে আবার কাপড়ের সঙ্গে চামড়ার ব্যবহার করা হয়েছে, তবে চামড়ার জ্যাকেট কেনা যাবে ২০০০ থেকে ৬০০০ টাকায়, দাম কম হওয়ায় অনেকেই একাধিক ব্লেজার কিনে রাখছেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী রায়হান বলেন, প্রতি বছরই আমি এখান থেকে দু-তিনটা ব্লেজার কিনি, শীতে পরে অফিস করি, এক বছর পর আর ব্যবহার করা হয় না।
নারায়ণগঞ্জ থেকে ব্লেজার কিনতে আসা মঈনুল হোসেন নিলয় জানান, বিশ্বায়নের এ যুগে হাওয়া বদল শুরু হয় প্রধানত পশ্চিমের দেশগুলোর ফ্যাশন ভাবনা থেকে, শীতকালে নতুন নতুন ফ্যাশনেবল অসংখ্য রঙের ব্লেজার বাজারে আসছে, তাই বছরের অন্য সময়ের চেয়ে এ সময়ে মার্কেটগুলোতে ব্লেজার কিনতে আসা ক্রেতা যেমন বেশি, সেই সঙ্গে দামও বেশি। তিনি বলেন, একরঙা কাপড়ের ব্লেজারের চাহিদা সব চেয়ে বেশি, তবে চেক, স্ট্রাইপ ডিজাইনের কাপড় দিয়ে ব্লেজার বানানো শৌখিন ক্রেতার সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে।
তবে শীতের বাজার গরম রাখতে সব আয়োজনই সম্পন্ন করেছে ফ্যাশন হাউসগুলো।
আপনার মতামত লিখুন........