আলোকিত নারায়ণগঞ্জ:সেনাবাহিনীর বিগ্রেডিয়ার জেনারেল পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তিকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেলেন শরীফুল ইসলাম শরীফ (৬১) নামের এক প্রতারক।সোমবার (০৩ আগস্ট) তাকে গ্রেফতার করে নারায়ণগঞ্জের জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল। পরে তার বাসা থেকে জব্দ করা হয় সেনা কর্মকর্তা, আওয়ামীলীগ নেতা ও আইনজীবি পরিচয়ের বেশ কয়েকটি ভুয়া সিল ও জালিয়াতির প্রমাণাদি।
বুধবার (০৫ আগস্ট) বিকেলে জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
জেলা পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার দেওভোগ ৫নং মৃত কালু সরকারের ছেলে ওয়ার্ডের শরীফুল ইসলাম শরীফ ১৯৮১ সালে সেনাবাহিনীর সিপাহী পদে যোগ দেন। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে এসে একটি ব্যাংকে চাকরি নেন তিনি।
এসএসসি পাস শরীফুল ২০০১ সালে ব্যাংকের চাকরি থেকে অবসরও নেন। বর্তমানে রাজধানীর ডেমরা থানাধীন ডগাইর নুতনপাড়া ভূঁইয়া মসজিদ এলাকায় বসবাস করেন। পার্শ্ববর্তী এলাকার রাসেল ভূঁইয়ার সাথে তার বিরোধ ছিল। রাসেল ভূঁইয়াকে ফাঁসাতে গত ৩ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারের সরকারি ফোনে নিজেকে সেনাবাহিনীর বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাইফুল ইসলাম পরিচয় দিয়ে তিনি জানান সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে সিনহা গার্মেন্টসের মালিক তার স্ত্রী।
রাসেল ভূঁইয়া নামে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর গার্মেন্টসে চাঁদা দাবি করে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। গণভবন থেকে ডিজিএফআই এর মেজর কামরুল পরিচয়েও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইফুল ইসলামের বিষয়টি দেখার জন্য ডিবি (পশ্চিম) এর ওসিকে ফোন দেয়া হয়।
এই সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি (ডিবি পশ্চিম) এস এম আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে ঘটনার সত্যতা যাচাইকালে তার কথাবার্তা সন্দেহজনক হওয়ায় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মুখে শরীফুল তার প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ করে এবং রাসেল ভূইয়াকে ফাঁসাতে এই কৌশল অবলম্বন করে বলে স্বীকার করে।
পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ তার বাসা থেকে ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় মো. সাইফুল ইসলাম (পিএসসি এন্ড ডিসি) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল, সেনা সদর, ঢাকা, বিএ- ৫০২২. (আর্মি), মো. সোহরাব পৌর চেয়ারম্যান, ১০নং বাংলাবাজার ইউনিয়ন, মুন্সিগঞ্জ সদর, মুন্সিগঞ্জ- ১৫০০, মো. সোহরাব পীর, ১০ নং বাংলাবাজার ইউনিয়ন, মুন্সিগঞ্জ সদর, মুন্সিগঞ্জ-১৫০০, শরীফুল ইসলাম (শরীফ), সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, মুন্সিগঞ্জ লেখা ৪টি প্লাষ্টিকের ভূয়া সীল জব্দ করে। এছাড়া একটি ক্রেষ্টে এ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শরীফ লেখা থাকলেও আইনজীবি পরিচয়ের বার সনদ দেখাতে পারেননি শরীফুল।
এসব কুকর্ম ও জালিয়াতির বিষয়ে প্রতারক শরীফুল ইসলাম শরীফের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জেলা পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
আপনার মতামত লিখুন........