আলোকিত নারায়ণগঞ্জ: সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামের বিরুদ্ধে এবার কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষরিত চিঠিতে সংগঠনের আদর্শ ও শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কালামের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার জবাব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘চলতি বছরের ১২ জুলাই অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানানো যাচ্ছে যে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে প্রাথী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং নানাবিধ তৎপরতাসহ সংগঠনের শৃঙ্খলা বিরোধী ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। যে কারণে গঠনতন্ত্রের ৪৭ (ক) ধারা অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, এতদবিষয়ে আপনার লিখিত জবাব আগামী ২১ কার্যদিবসের মধ্যে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে প্রেরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
জানা যায়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন মাহফুজুর রহমান কালাম। কিন্তু সেবার মনোনয়ন প্রত্যাশা নিয়ে তেমন একটা গুরুত্ব না দেখালেও গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নকে বেশ গুরুত্ব সহকারেই নিয়েছিলেন। নির্বাচনি প্রচার প্রচারণার শুরুতেই কালাম নির্বাচনি মাঠে ছিলেন। নৌকা প্রতীকের প্রত্যাশায় নির্বাচনি এলাকায় সরগরম ছিলেন তিনি।
তবে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর জন্য নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। যেখানে আওয়ামী লীগের অন্য প্রার্থীরা নির্বাচনের আগের দিন রাত পর্যন্ত নাছোরবান্দা ছিলেন সেখানে মাহফুজুর রহমান কালাম আগে থেকেই সরে যান।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ তাকে মনোনয়ন না দিয়ে অন্যজনকে মনোনয়ন দেয়। ফলে এই বিষয়টিকে সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি মাহফুজুর রহমান কালাম। সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে তিনি আর সরে যাননি।
আর এই ঘটনায় কোনো ঘোষণা ছাড়াই ঘোষিত সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি থেকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামকে অব্যাহতি দিয়ে গত ১৫ জুলাই আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যে কমিটিতে সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া আহ্বায়ক এবং সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে।
এরপর গত ১৩ সেপ্টেম্বর জামপুর ইউনিয়নের ওটমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা উপলক্ষে বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভার আয়োজন করেন সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু। যেখানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল। সেই কথা অনুযায়ী তারা উপস্থিতও হয়েছিলেন সম্মেলন স্থলে। কিন্তু সেখানে হামলা চালানো হয় নেতাকর্মীদের উপর। ওই সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই অভিযোগ করেছিলেন কালামের নেতৃত্বে হামলা হয়েছিল। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন........