আলোকিত নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী লোক ও কারুশিল্প মেলা লোকজ উৎসব।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) থেকে এ মেলা শুরু হয়ে চলবে পুরো মাসব্যাপী। মাসব্যাপী এ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী কে এম খালিদ।
মেলা উপলক্ষে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহ।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- উপপরিচালক রবিউল ইসলাম, প্রদর্শন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, গাইড লেকচারার একে এম মোজাম্মেল প্রমুখ।
ড. আহমেদ উল্লাহ জানান, মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
তিনি আরও জানান, এবারের মেলার শতবর্ষে বঙ্গবন্ধু লোকজ উৎসব পালন করা হবে। মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে।
আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া মেলা চলবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের মেলায়, বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চল থেকে ৬৪ জন কারুশিল্পী প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন। তাদের জন্য ৩২টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নওগাঁ ও মাগুরার শোলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাড়ি, চট্টগ্রামের তালপাখা ও নকশি পাখা, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁয়ের হাতি ঘোড়া পুতুল ও কাঠের কারু শিল্প, নকশি কাঁথা, বেত ও বাঁশের কারুশিল্প, নকশি হাতপাখা, সিলেট ও মুন্সিগঞ্জের শীতল পাটি, কুমিল্লার তামা-কাঁসা ও পিতলের কারুশিল্প, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারু পণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা শিল্প, সোনারগাঁয়ের পাটের কারু শিল্প, নাটোরের শোলার মুখোস শিল্প, মুন্সিগঞ্জের পট চিত্র, ঢাকার কাগজের হস্তশিল্পসহ মোট ১৫৪টি স্টল থাকছে।
এছাড়াও লোক কারু শিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবে বাউলগান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালী গান, জারি-সারি ও হাছন রাজার গান, লালন সংগীত, মাইজভান্ডারী গান, মুর্শিদী গান, গাঁয়ে হলুদের গান, বান্দরবান, বিরিশিরি, কমলগঞ্জের-মণিপুরী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শরীয়তী-মারফতি গান, ছড়া পাঠের আসর, পুঁথি পাঠ, গ্রামীণ খেলা, লাঠি খেলা, দোকা খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, লোকজ জীবন প্রদর্শনী, লোকজ গল্প বলা, পিঠা প্রদর্শনী থাকবে।
সরেজমিনে দুপুরে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের মেলার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ইতোমধ্যে মেলার বিভিন্ন স্টলের দোকানিরা তাদের পণ্য সাজাতে শুরু করেছেন। এছাড়া মেলার মুড়ি, মুরকির দোকান সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। যারা এখনও স্টল সাজাতে পারেননি তারা দোকান সাজানোর জন্য ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
বাংলাদেশ লোক ও কারু শিল্প ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক রবিউল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে মেলার প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। বাংলাদেশের লোক ও কারুশিল্পের ঐতিহ্য, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিলুপ্তপ্রায় লোকজ ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, গবেষণা, প্রদর্শন এবং পুনরুজ্জীবন এ মেলার মূল উদ্দেশ্য।
আপনার মতামত লিখুন........