নারায়ণগঞ্জমঙ্গলবার , ১২ মার্চ ২০১৯
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সোনারগাঁ জাদুঘর ১২ খলিফার হাতে জিম্মি

Alokito Narayanganj24
মার্চ ১২, ২০১৯ ৯:২২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আলোকিত নারায়ণগঞ্জ ২৪ ডট নেট : সোনারগাঁ উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন (জাদুঘর) ১২ খলিফার একটি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে চলে। তাদের মাধ্যমে পরিচালিত হয় লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন।

ফলে এ সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি দর্শনার্থীরা। নানা অনিয়মের মাধ্যমে ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন স্পট ইজারা নিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই সিন্ডিকেট। এতে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান, নাগরদোলা, খালের পানিতে নৌকা ভ্রমণ, মৌসুমি ফল, কনফেকশনারি ও সেলস সেন্টার ইজারার মাধ্যমে দখলে রেখেছে এই সিন্ডিকেট।

আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে স্থানীয় একটি ক্লাবের কয়েকজন নেতা পুরো লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন পরিচালনা করছেন। প্রতিদিন এই সিন্ডিকেটের কাছে হয়রানির শিকার হচ্ছেন এখানে আসা দর্শনার্থীরা। হয়রানির শিকার অনেক পর্যটক লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করেও কোনো সুফল পাননি। এ নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোনারগাঁয়ের লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের প্রধান ফটকের উল্টো দিকে সরকারি জমি দখল করে ‘টাইগার ক্লাব’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলা হয়েছে। সংগঠনটির কার্যালয় বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকলেও সভাপতি নূরে আলম কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের একাধিক কর্মচারীদের নিয়ে ১২ জনের একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। সিন্ডিকেটটি ‘১২ খলিফা’ নামে পরিচিত।

অভিযোগ রয়েছে, কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের কার পার্কিংয়ের স্থানটি ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ওই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে। সিন্ডিকেটের বাইরের কেউ কার পার্কিংয়ের ইজারায় দরপত্র কিনলেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে, ভয়ভীতি ও কাগজপত্র সঠিক নয় উল্লেখ করে কৌশলে তা বাতিল করে দেয়া হয়। সিন্ডিকেটের অংশীদার অসাধু কর্মচারী ফাউন্ডেশনের দরপত্রের তথ্য ফাঁস করে ওই সিন্ডিকেটকে দরপত্র পাইয়ে দেয়ার সুযোগ করে দেন।

প্রতি বছর তাদের নিয়ন্ত্রিত লোক দিয়ে ইজারা নেয়ার পর শুরু হয় পর্যটকদের হয়রানি। গাড়ি পার্কিংয়ে সরকার নির্ধারিত ফি’র বাইরে অতিরিক্ত টাকা আদায়, রাস্তায় গাড়ি রাখলেও সেখান থেকে চাঁদা উত্তোলন, নিয়মবহির্ভূতভাবে পার্কিং জোনের ভেতরে অনেক চটপটির দোকান, চায়ের দোকান, আইসক্রিমের দোকান ও কারুপণ্যের দোকান বসিয়ে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছে সিন্ডিকেট। ফাউন্ডেশনের প্রধান ফটকের সামনে যত্রতত্র অপরিকল্পিতভাবে দোকানপাট বসিয়ে চাঁদাবাজি করার কারণে প্রতিনিয়ত প্রধান সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে প্রতিদিন শতশত পর্যটক চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

সিন্ডিকেটের ১২ খলিফা হলেন- নূরে আলম, পিয়ার হোসেন, মনির হোসেন, হেলাল, কৃষ্ণ চন্দ্র সাহা, ফজল, শাহীন, আবু সাইদ, লুৎফর, ফাউন্ডেশনের গাড়িচালক বুলবুল, ইলেকট্রিশিয়ান সাইদুর রহমান ও ক্যামেরাম্যান জজ মিয়া।

স্থানীয়রা জানান, লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের লেকে বেড়ানোর নৌকাগুলো প্রভাব খাটিয়ে ইজারার মাধ্যমে গত এক যুগ ধরে নিজেদের দখলে রেখেছে ‘১২ খলিফাখ্যাত’ এই সিন্ডিকেট। লেকের প্লাস্টিকের নৌকার অনুমোদন না থাকলেও প্রভাব খাটিয়ে কাঠের নৌকার পাশাপাশি আটটি প্লাস্টিকের নৌকা ব্যবহার করছে সিন্ডিকেট। ইজারায় যে পরিমাণ নৌকা চলার অনুমতি দেয়া হয়েছে তা থেকে দ্বিগুণ নৌকা ব্যবহার করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। নৌকা ভ্রমণের জন্য ঘণ্টায় সরকার নির্ধারিত ফি’র দ্বিগুণ আদায় করা হয়।

পাশাপাশি ফাউন্ডেশনের ভেতরে নাগরদোলা, চরকা, মিনি ট্রেন ও ইলেকট্রিক নৌকার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে সিন্ডিকেটের হাতে। বছরের পর বছর ফাউন্ডেশনের মৌসুমি ফল ইজারার নিয়ন্ত্রণ রেখেছে তারা। প্রতি বছর স্বল্পমূল্যে ফাউন্ডেশনের কাছ থেকে ফলের বাগান ইজারা নিয়ে কয়েকগুণ বেশি মূল্যে বিক্রি করা হয়। তাদের সিন্ডিকেটের কারণে অন্য কেউ ফাউন্ডেশনের ফলের বাগান ইজারা নিতে পারে না।

সরেজমিনে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন ঘুরে দেখা যায়, ফাউন্ডেশনের ভেতরে অপরিকল্পিতভাবে ১৩টি কনফেকশনারি দোকান বসানো হয়েছে। এসব দোকানের অধিকাংশই নিয়ন্ত্রণে রেখেছে ওই সিন্ডিকেট। এসব অনিয়মে ফাউন্ডেশনের ইলেকট্রিশিয়ান সাইদুর রহমান ও চালক বুলবুল জড়িত থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

এখানে ঘুরতে আসা পর্যটক মইন আল হোসেন বলেন, তিনটি বাস নিয়ে পিকনিকে এসে পার্কিংয়ে রাখা হয়। পার্কিংয়ে গাড়ি প্রতি ৩০০ টাকা রাখার নিয়ম থাককেও ৪০০ টাকা করে নেয়া হয়। বেশি টাকা নেয়ার প্রতিবাদ করলে ইজারাদার কৃষ্ণ চন্দ্র সাহাসহ তার লোকজন দুর্ব্যবহার করেন। এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দিয়েছি আমরা।

তবে ১২ জনের সিন্ডিকেটের প্রধান নূরে আলম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কারও কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়নি। কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পার্কিং, নৌকা ও মৌসুমি ফল বিভিন্ন সময় নিয়মতান্ত্রিকভাবে ইজারায় অংশগ্রহণ করে তা পেয়ে থাকি। আমরা কখনো প্রভাব খাটাইনি বা কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার করিনি।

সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, কেউ যদি দলের নাম ভাঙিয়ে অনিয়ম, চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি করে তার দায়ভার দল নেবে না। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসব বিষয়ে ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক রবিউল ইসলাম বলেন, গাড়ি পার্কিং ও নৌকা ভ্রমণে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে অভিযোগ দিলে ইজারাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!