নারায়ণগঞ্জশনিবার , ২৪ ডিসেম্বর ২০২২
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হাতকড়া-ডান্ডাবেড়ি নিয়েই মায়ের জানাজা ! মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন

Alokito Narayanganj24
ডিসেম্বর ২৪, ২০২২ ৫:১৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মো. মনির হোসেনঃ বৃটিশদের রেখে যাওয়া আইনে আমরা এখনো চলছি, তারা আমোদের শাসন-শোষণ করার জন্য যে আইনগুলি করেছিলেন সে আইনে স্বাধীনতার ৫১ বছর পরও আমরা চলছি! লঙ্গিত হচ্ছে মানবাধিকার, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করা হচ্ছে দলীয় কাজে! তাহলে আমরা কিসের স্বাধীন? ৫১ বছরে ও পারলাম না এ আইনগুলি সংস্কার করতে? আমাদের মহান জাতীয় সংসদের আইন প্রনেতারা কি করছেন?

সম্প্রতি গাজীপুরে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপির এক নেতার হাতে হাতকড়া ও পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়ার ছবি নিয়ে তুমুল আলোচনা সমালোচনা চলছে। দুর্ধষ অপরাধী, জঙ্গি, সন্ত্রাসী ও যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামিদের ডান্ডাবেড়ি পরানো হয়ে থাকে। সেখানে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজমের সঙ্গে কেন এই আচরণ করা হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, আলী আজম কি র্দুর্ধষ অপরাধী? তিনি কি দন্ডপ্রাপ্ত আসামি? তিনি কি উগ্র বা ঘৃণ্য অপরাধী? এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন অনেকেই, তবে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনা নিয়ে নানা রকম আলোচনা হচ্ছে। মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়া ছেলেকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

কমিশন বলছে, প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার পরও একজন বন্দিকে মায়ের জানাজায় ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে নিয়ে যাওয়া কেবল অমানবিকই নয়, এটা বাংলাদেশের সংবিধান ও মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থি।

 

এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এক আইনজীবি জানান, এই ঘটনা খুবই অমানবিক, একই সঙ্গে আমাদের সংবিধান, আইন ও উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরিপন্থী, হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় জানাজায় অংশ নিতে বাধ্য করার ঘটনায় স্পষ্টতই ওই ব্যক্তির মানবাধিকারেরও চরম লঙ্ঘন হয়েছে, আইন অনুযায়ী, যেকোনো আসামি বা অভিযুক্ত, এমনকি দন্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তির সঙ্গেও এমন আচরণ করার কোনো সুযোগ নেই।

 

তিনি (আলী আজম) কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী বা নেতা, কোন মামলার আসামি এসব এখানে বিবেচ্য বিষয় নয়। এর আগে তাঁর চেয়ে অনেক গুরুতর অভিযোগে আটক এবং দন্ডপ্রাপ্ত আসামির ক্ষেত্রে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি না পরানোর অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। তাহলে তাঁর ক্ষেত্রে কেন এ রকম হবে? প্রয়োজন হলে সেখানে আরও বেশিসংখ্যক পুলিশ পাঠানো যেত। কিন্তু সেটা না করে এভাবে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

 

তিনি আরও বলেন, জানাজার সময় আলী আজমের হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খুলে দেওয়ার জন্য তাঁর স্বজন ও এলাকাবাসীরা অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাঁদের সেই কথায় পাত্তা দেয়নি। শুধু পুলিশ নয়, কারা কর্তৃপক্ষসহ এ ঘটনার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁরা সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন, আইন ভঙ্গ করেছেন। একই সঙ্গে তাঁরা এ রকম একটি অমানবিক ঘটনার মাধ্যমে মানবাধিকারেরও লঙ্ঘন করেছেন। এ জন্য এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের শাস্তি হওয়া উচিত। যদি তাঁদের দৃষ্টানাতমূলক শাস্তি না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনা আরও ঘটার আশঙ্কা থাকবে। আজ হয়তো বিএনপির এক কর্মী বা নেতার ক্ষেত্রে এ রকম ঘটনা ঘটেছে, ভবিষ্যতে অন্য দলের কর্মী-নেতার বা সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও একই রকম হতে পারে। তাই এ ধরনের কর্মকান্ড বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

 

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন সময় অমানবিক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। এর কারণ কী মনে করেন? এমন এক প্রশ্নের জবাবে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি আমিনুল ইসলাম জানান, আমাদের বিচার বিভাগ, ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা, পুলিশ, কারাগার সবকিছুই তৈরি হয়েছে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে। আমরা স্বাধীনতা লাভ করলেও এগুলোর তেমন কোনো সংস্কার হয়নি। ঔপনিবেশিক আমলের আইনগুলো দ্বারাই প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো চলছে। এ কারণে আইন-কানুন, পুলিশ, বিচারব্যবস্থায় এখনো ঔপনিবেশিক ধারণাগুলোই কাজ করে। বৃটিশ আমলে ওই সব প্রতিষ্ঠান ও আইন তৈরিই করা হয়েছিল মানুষকে শাসন-শোষণ, দমন-পীড়ন করার জন্য। পুলিশের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো সেই ধারায় চলছে। নাগরিকের অধিকার, মানবাধিকার এসব নিয়ে তাদের খুব বেশি বোঝাপড়া আছে বলে মনে হয় না। তা ছাড়া বিভিন্ন আমলেই পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। সবকিছু মিলে জবাবদিহির ক্ষেত্রে বিশাল এক শূন্যতা তৈরি হয়েছে।

 

তবে আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় প্রত্যেক নাগরিকের সুবিচার পাওয়ার আইনি অধিকার রয়েছে একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায়, একজন নাগরিকের যতটুকু সম্মান পাওয়ার অধিকার রাখেন, তাঁকে তাঁর প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিকের সেই অধিকারকে নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী, এ বিষয়টি মাথায় রেখে বৃটিশের এ আইনগুলি পরিবর্তন জরুরী, আর জবাবদিহি ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না।

 

লেখকঃ সাংবাদিক, কলামিস্ট

সাধারণ সম্পাদক ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাব

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার দৈনিক বাংলাদেশের আলো।

 

নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!