নারায়ণগঞ্জমঙ্গলবার , ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ

কীভাবে অন্তঃসত্ত্বা বীনা ওএসডি হলো জানতে চান শামীম ওসমান

Alokito Narayanganj24
ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯ ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

আলোকিত নারায়ণগঞ্জ ২৪ ডট নেট : নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা অন্তঃসত্ত্বা হোসনে আরা বেগম বীনাকে কীভাবে ওএসডি করা হয়েছে তা জানতে চান এমপি শামীম ওসমান। সোমবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারণী আলোচনায় তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রীকে উদ্দেশ করে এ প্রশ্ন করেন।

অনির্ধারণী আলোচনার শুরুতেই সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এ বিষয়টি সংসদে উত্থাপন করেন। এরপর এ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন এমপি শামীম ওসমান।

শামীম ওসমান বলেন, এই ঘটনায় আজ আমি জনপ্রশাসন মন্ত্রীকে বহুবার ফোন করেছিলাম। হয়ত আমার নম্বরটা তার কাছে নেই বলে তিনি ধরেননি। এই ঘটনা আমার এলাকায় হওয়ায় আমিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছি। কেন, কীভাবে তাকে ওএসডি করা হলো তা জানতে চাই।

ওই নারীকে নিজের বোনের সঙ্গে তুলনা করে শামীম ওসমান বলেন, আমি এই সময় ওমরায় ছিলাম। এই ঘটনার জন্য অত্যন্ত দুঃখিত ও লজ্জিত। আমার নির্বাচনী এলাকা হিসেবে সার্টিফায়েড করতে চাই-ওই কর্মকর্তা অত্যন্ত কর্মঠ ও যোগ্য ছিলেন। নির্বাচনের সময় তাকে আমি অন্য জায়গায় বদলি হয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলেও তিনি রাজি ছিলেন না। বরং কাজ করতে পারলে তিনি ভালো থাকবেন বলে জানান।

তিনি বলেন, আমি মানুষ হিসেবে বলছি, আশা করি এ ব্যাপারে জনপ্রশাসন মন্ত্রী সংসদে বক্তব্য দেবেন। তাকে বদলি নয়, কেন ওএসডি করা হলো তা তদন্ত করে বের করুন। আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করি তার বাচ্চাটা যেন হায়াত দারাজ করেন। বাচ্চাটা যদি কিছু হয় আমি নিজেকেও ক্ষমা করব না।

প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ গণমাধ্যমে বেশ আলোচিত ইউএনও হোসনে আরা বেগম বীনা।

দীর্ঘ ৯ বছরের দাম্পত্য জীবনে প্রথম মা হয়েও সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ধরতে পারছেন না তিনি।

জন্মের দিন থেকেই হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে অপরিপক্ক শিশুটিকে।

নিজের নিষ্পাপ সন্তানের কী দোষ ছিল এমন আর্তি জানিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন ইউএনও হোসনে আরা বেগম বীনা।

এরপরই যুগান্তর অনলাইন তার স্ট্যাটাসটিসহ খবর প্রকাশ করলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়।

এর আগে রোববার হোসনে আরা বীনাকে টেনশনমুক্তভাবে বিশ্রামে থাকতেই ওএসডি করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এপিডি) শেখ ইউসুফ হারুন।

তিনি যুগান্তরকে বলেছিলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিষয়টি আমরা দেখেছি। সামনে যেহেতু উপজেলা নির্বাচন, মূলত তার ওপর মানসিক চাপ কমাতে এবং টেনশনমুক্তভাবে বিশ্রামে থাকতে পারেন সে জন্য ওএসডি করা হয়েছে। অন্য কোনো কারণ নেই।’

বিষয়টি অনাকাঙ্খিত বলেও মন্তব্য করেন শেখ ইউসুফ হারুন।

হোসনে আরা বীণার ওই স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো -‘আমি ব্যক্তিগত বিষয়গুলো সাধারণত ফেসবুকে খুব একটা শেয়ার করি না। তবে আজ মনে হলো এখন চুপ করে থাকাটাও অন্যায়। তাই আজ আর না, আজ আমি বলবো… আমি হোসনে আরা বেগম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ণগঞ্জ সদর, মাত্র ৯ মাস পূর্বে আমি এ পদে যোগদান করি।

আমার দীর্ঘ ৯ বছরের দাম্পত্য জীবনে বহু চেষ্টা চিকিৎসার পরও আমরা কোনো সন্তান লাভ করতে পারিনি। কিন্তু পাঁচ মাস পূর্বে আমি জানতে পারি আমি দুই মাসের সন্তানসম্ভবা। এ ঘটনা আমার জীবনে সৃষ্টিকর্তার অপার রহমত ছাড়া আর কিছুই নয়, এ বিশ্বাস আমি প্রতিনিয়ত বুকে ধারণ করেছি। এ বিশ্বাস ও স্বপ্ন বুকে নিয়ে অনাগত সন্তানের আগমনের অপেক্ষায় দিন গুনছিলাম।

উল্লেখ্য আমি আমার বাবুকে পেটে নিয়েই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে আমি নারায়ণগঞ্জ-৪ ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের আংশিক নির্বাচন অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন করি।

একজন নারী কর্মকর্তা হিসেবে অজুহাত, ফাঁকিবাজী এই বিষয়গুলোকে কখনই পুঁজি করিনি। যখন যে পদে কাজ করেছি চেষ্টা করেছি শতভাগ নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে। সন্তানসম্ভবা হয়েও এর কোনো ব্যতিক্রম আমি করিনি।

অথচ আমি সন্তান সম্ভবা হয়েছি শোনার পর থেকেই একজন বিশেষ কর্মকর্তা, যার নাম বলতেও আমার রুচি হচ্ছে না, বিভিন্ন মহলে আমাকে অযোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করে আমাকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা থেকে বদলীর পায়তারা করেই চলেছিল।

আমার সন্তান সম্ভবা হওয়াটাকেই সে বিভিন্ন মহলে আমার সবচেয়ে বড় অযোগ্যতা হিসেবে উপস্থাপন করেছে। অথচ এই সন্তান পেটে নিয়েই আমি অত্যন্ত সফলভাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। এতে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এপ্রিসিয়েশনও পেয়েছি।

আমার সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ ছিল এপ্রিলের ২০ তারিখ, তেমন মানসিক প্রস্তুতি নিয়েই আমি ছিলাম। গত ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রেগুলার চেকআপ করতে আমি হাসব্যান্ডসহ স্কয়ার হাসপাতালে আসি।

চেকআপ শেষে সন্ধ্যায় আমরা হাসপাতালে অপেক্ষা করছি পরবর্তী পরীক্ষার জন্য, এমন সময় আমার একজন ব্যাচমেট ফোন করে জানায় আমার সদাসয় কর্তৃপক্ষ আমাকে ওএসডি করেছে অর্থাৎ আমাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করেছে।

আমার অপরাধ হলো আমি সন্তান সম্ভবা। আর তার চেয়েও বড় কারণ হলো সেই তথাকথিত ক্ষমতাধর কর্মকর্তার উপরের মহল কর্তৃক তদবির।

খবরটা শোনার পর আমি প্রচণ্ড মানসিক চাপ সহ্য করতে পারিনি। আমি অ্যাজমার রোগী। প্রচণ্ড মানসিকচাপে আমার ফুসফুসে ব্লাড সার্কুলেশন অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়, ফলে আমার পেটের সন্তানের অক্সিজেন সাপ্লাই বন্ধ হয়ে যায় এবং হঠাৎ করেই আমার পেটের বাবু নড়াচড়া পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়।

তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ডক্টর সেদিন রাতেই সিজার করে বাবু বের করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। পরে আমার পরিবারের সবার সিদ্ধান্তে পরদিন সকালে আমার মাত্র ৩১ সপ্তাহ বয়সী প্রি-ম্যাচিউর বেবিকে সিজার করে বের করে ফেলা হয়। এখন সে স্কয়ার হাসপাতালের এনআইসিওতে বেঁচে থাকার জন্য প্রাণপণ যুদ্ধ করে যাচ্ছে।

আমার এই নিষ্পাপ সন্তানটার কী অপরাধ ছিল? নাকি মা হতে চাওয়াটাই আমার সবচেয়ে বড় অপরাধ ছিল আমি জানি না!

তবে জানি একজন সব দেখেন তিনি আমার নিষ্পাপ মাসুম সন্তানের উপর এই জুলুমের বিচার করবেন। এই নিষ্ঠুর অমানবিকতার পৃথিবীতে কোনো কর্তা ব্যক্তিদের কাছে আমি এ অন্যায়ের বিচার চাই না, শুধু আমার সৃষ্টিকর্তাকে বলব তুমি এর বিচার করো!

আর যারা আমাকে একটুও ভালোবাসেন আমার নিষ্পাপ সন্তানটার জন্য দোয়া করবেন। ও সুস্থ হয়ে গেলে কোনো কষ্টের কথাই আমার মনে থাকবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!