নারায়ণগঞ্জরবিবার , ১৫ মার্চ ২০২০
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ

নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম

Alokito Narayanganj24
মার্চ ১৫, ২০২০ ৭:৩৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আলোকিত নারায়ণগঞ্জ : জেলা প্রশাসনের ভয়াবহ নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন কুড়িগ্রামের সেই সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম।

অবশেষে রহস্য জনকভাবে জামিন পেলেন বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম। জামিনের পর গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাকে চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার সকাল সাড়ে ১১টায় তাকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: সুজাউদ্দৌলা তার জামিন মঞ্জুর করেন।

তবে, তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় আরিফুলের জামিনের জন্য কোনো আবেদন করা হয়নি। তার জামিনকে ঘিরে সাংবাদিক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জেলা প্রশাসক মোছা: সুলতানা পারভীন স্ব-প্রণোদিত হয়ে জামিনের ব্যবস্থা করেছেন।

অন্যদিকে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনসহ এ ঘটনায় জড়িতদের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এ খবরে সাংবাদিকরা স্বস্তি প্রকাশ করলেও তাদের শুধু প্রত্যাহার নয় দেশের প্রচলিত আইনে বিচার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে, গুরুত্বর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ”শুক্রবার মধ্যরাতে আমাকে আমার বাড়ির দরজা ভেঙ্গে আমাকে প্রথমে আঘাত করে রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর-আরডিসি। ওনি আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন এবং টেনে-হিঁচড়ে বের করে নিয়ে আসেন। সঙ্গে সঙ্গে আমার হাত-পা এবং চোখ বেঁধে ফেলেন। এরপর এনকাউন্টার দেয়ার কথা বলে আমাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।

আমি অনেক আকুতি-মিনতি করি। আমার সন্তানদের দোহাই দিয়ে আমার প্রাণ ভিক্ষা চাই তাদের কাছে। এরপরও তারা ক্ষান্ত হচ্ছিলেন না। আমাকে বার বার বলতেছিলেন যে কলেমা পড়ে নে। এ সময় আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ পাড়তে থাকে। এরপর কোনো এক জায়গা থেকে ঘুরিয়ে আমাকে আবারও ডিসি অফিসে নিয়ে আসা হয়। সেখানে কোনও রকম হাত দিয়ে চোখের বাঁধন আলগা করে দেখি যে আমি ডিসি অফিসে।

এরপর, আমাকে আবার শক্তকরে চোখ বেঁধে আমাকে একটি রুমে নিয়ে গিয়ে রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি)’র নেতৃত্বে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং নির্যাতন করা হয়। আরডিসি নিজেই আমাকে মেরেছন। আমাকে বিবস্ত্র করে আমার ভিডিও ধারণ করা হয়েছে।

তারপর আমার কাছ থেকে ৪টি স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে চোখ বাঁধা অবস্থায়। কিসে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে সেটা আমি এখন পর্যন্ত জানি না। এরপর তাড়াহুড়ো করে তারা আমাকে কারাগারে নিয়ে যায়। আমাকে যে নির্যাতন করা হয়েছে তার চিহ্ন আমার সারা শরীরে রয়েছে।”

জামিনের আবেদন করেছেন কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে জবাবে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে আসার আগ পর্যন্ত যা হয়েছে সব আমার অমতে হয়েছে। আমাকে ফোর্স করে করা হয়েছে।

গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমার নেতৃত্বে কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেট আনসার সদস্যদের নিয়ে তার শহরের চড়ুয়া পাড়ার বাড়িতে যায়। একপর্যায়ে জোড় পুর্বক দরজা ভেঙে তার ঘরে প্রবেশ করে তার স্ত্রী সন্তানের সামনেই তাকে মারধর করে ধরে নিয়ে আসে। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে এসে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও ভিডিও ধারণের পর আধা বোতল মদ ও দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা রাখার অভিযোগে তাকে ১ বছরের কারাদণ্ড দেয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

জামিন পাওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে অমানুষিক ও বর্বর নির্যাতনের বর্ণনা দেন নির্যাতিত সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম।

এদিকে, আহত অবস্থায় সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের জামিন নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবরে জেলা প্রশাসকসহ জড়িতদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে হাসপাতাল চত্তরে আসেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় হাসপাতালে এসে জড়িতদের বিচারের দাবিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তার সহকর্মী সাংবাদিক ও তার পরিবারের সদস্যরা।

আরিফুলের বড় বোন শিক্ষিকা রিজিকা বেগম জানান, আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে জামিনের কোনো আবেদন করা হয়নি। তারা আমার ভাইকে মারার উদ্দেশ্যে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। সাংবাদিকদের তৎপরতায় তা পারেনি। আমি আমার ভাইয়ের ওপর নির্যাতনের বিচার চাই।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান বিপ্লব জানান, সাংবাদিকরা আরিফুলের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করে আসলেও আদালত ২৫ হাজার টাকা মুচলেকায় মামলাটি চলমান রেখে তার জামিন প্রদান করেন। এ অবস্থায় সাংবাদিক ও এলাকাবাসী আরিফুলের নিঃশর্ত মুক্তিসহ মামলা প্রত্যাহার ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ্যামল ভৌমিক জানান, এ ঘটনায় মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসকসহ যে সব কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে তাদের শুধু প্রত্যাহার করলে হবে না। সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং আরিফুলের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তা নাহলে আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাংবাদিক নির্যাতন করে মামলা ও রহস্যজনক জামিন দেয়ার কারণে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার খবর পেয়ে জেলার মানুষ খুশি হলেও জেলা প্রশাসকসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!