আলোকিত নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় আজিজুল হক নামে এক দুর্ধর্ষ পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতারের ঘটনায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ সংযোগ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ওই চাঁদাবাজের শত শত সহযোগী।
বুধবার সকালে বিক্ষোভকারীরা ‘মুক্তি মুক্তি চাই, আজিজুলের মুক্তি চাই, আজিজ ভাইয়ের কিছু হলে-জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
পুলিশের উপস্থিতিতে চাঁদাবাজের সহযোগীদের এমন বিক্ষোভের দুঃসাহসিকতায় দরিদ্র শ্রেণির ইজিবাইক মালিক-চালকসহ ফতুল্লাবাসীর মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে।
এর আগে রাসেল নামে এক ইজিবাইক চালককে চাঁদার দাবিতে মারধর ও ইজিবাইক ভাংচুরের অভিযোগে মঙ্গলবার বিকালে ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকা থেকে আজিজুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় বুধবার সকালে ফতুল্লা মডেল থানায় আজিজুলসহ তার ৬ সহযোগীর বিরুদ্ধে ইজিবাইক চালক রাসেল বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
ইজিবাইক মালিক ও চালকদের অভিযোগ, আজিজুল সব সময় প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গেই থানায় ঘুরে বেড়ায়। তার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারসহ ফতুল্লা থানায় শতাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
তারা জানান, চাঁদাবাজদের দেয়া টোকেন গাড়িতে না লাগালে এবং নিয়মিত চাঁদা না দিলে তাকেই পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। এতে ভয়ে তার বিক্রি করা টোকেনকে ইজিবাইক চালক ও মালিকরা গুরুত্ব দিয়ে কিনেন। এতে এক বছরে ৫৭ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদাবাজি করেছে আজিজুল ও তার সহযোগীরা।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, সকালে আজিজুলের লোকজন পঞ্চবটিতে বিক্ষোভ করেছে শুনে পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমানকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তিনি বিক্ষোভকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। তবে আজিজুলের যে সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগেও ৪ জুন ২০১৮ সালে ফতুল্লায় প্রকাশ্যে রিকশাওয়ালাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির সময় পুলিশ ধাওয়া করে লিটন, আল আমিন, হাসান হাওলাদার ও রাজুসহ ৪ জনকে আটক করে। এ সময় আজিজুল হকসহ ৩ জন দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ তাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের রশিদ ও চাঁদাবাজির দুই হাজার ৪৬০ টাকা জব্দ করেছেন। তারা ফতুল্লা ও পঞ্চবটির মোড়ে রিকশা, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করে থাকে। এ ঘটনায় পুলিশের এএসআই তারেক আজিজ বাদী হয়ে আজিজুলসহ ৭ জন চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেছিলেন। এদিকে মালিক ও চালকদের দাবি রিকশা ও ইজিবাইকগুলো যেন ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে নেয়া হয়। এতে সরকার রাজস্ব পাবে এবং সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি কমে যাবে। একই সঙ্গে দরিদ্রশ্রেণির মানুষজন সন্ত্রাসীদের হয়রানি থেকে মুক্তি পাবে।
আপনার মতামত লিখুন........