নারায়ণগঞ্জশনিবার , ১৭ আগস্ট ২০১৯
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে একটি রাষ্ট্র চেতনাকে হত্যা করা হয়েছে-শেখ হাসিনা

Alokito Narayanganj24
আগস্ট ১৭, ২০১৯ ১২:৫৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

আলোকিত নারায়ণগঞ্জ : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন এবং তার স্বপ্ন ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলে তার রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তার (বঙ্গবন্ধু) আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করলে দেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস পাবেন, সম্মান পাবেন এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তিনি দৃঢ় অঙ্গীকার করেন। সব ব্যথা বুকে রেখে প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে হলেও রক্তের ঋণ শোধ করার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে একটি রাষ্ট্র চেতনাকে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে খুনিদের সঙ্গে জিয়াউর রহমানের যোগাযোগ ছিল। সে সময় রাজনৈতিক নেতাদের উপলব্ধি হলে আগস্টে আঘাত আসত না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ’৭৫-এ নির্মম-নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর তার বেঁচে থাকা মৃত্যুর চেয়েও কঠিন। ৪৪ বছর আগের সেই ভয়ংকর, বীভৎস ১৫ আগস্টকে স্মরণ করে তিনি বলেন, দেশ থেকে যখন বাইরে যাই তখন সব ছিল, ফিরে এসে দেখি আমার আর কেউ নেই। মাত্র ১৫ দিন আগে আমি ও ছোট বোন রেহানা পরিবার ছেড়ে বিদেশে চলে গিয়েছিলাম। তাই হয়তো বেঁচে গিয়েছিলাম। কিন্তু এ বাঁচা, বাঁচা না, এ বাঁচা মৃত্যুর চেয়েও কঠিন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় নদীর পানি লাল হয়ে গিয়েছিল মানুষের রক্তে। মুক্তিযুদ্ধের ওই বছরে দেশে এক ফোঁটা ফসল ফলেনি। এক টাকাও রিজার্ভ ছিল না। তিন কোটি গৃহহারা মানুষের বাসস্থান, লাখো শহীদের পরিবারের কান্না, আহত মুক্তিযোদ্ধাদের কান্না নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে দেশের দায়িত্ব নিতে হয়েছিল। একটি দেশকে পূর্ণাঙ্গরূপে পরিণত করার এ কঠিন কাজ তিনি মাত্র সাড়ে ৩ বছরে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে তখনও নানা রকমের ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। ওই সময় নানা মানুষ নানা রকমের সমালোচনা করেছেন। যারা সমালোচনা করেছেন তারা আমার মনে হয় এখনও বুঝেও ওঠতে পারেন না।

পরিবারের সদস্যদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওরা বাবাকে প্রথমে হত্যা করে। আমার মা জানতেন ওরা বাবাকে হত্যা করেছে, তবুও আমার মা তাদের কাছে জীবন ভিক্ষা চাননি।

আমার মা ওদের বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছো, সুতরাং আমাকেও হত্যা কর। এভাবেই সবাইকে হত্যা করার পর সবশেষে হত্যা করা হয় নিষ্পাপ রাসেলকে।’ শেখ হাসিনা বলেন, এ হত্যা প্রথমে সবাই ভেবেছিলেন একটি পরিবারের হত্যা। কিন্তু না, পরে সবাই বুঝতে পেরেছে একটি রাষ্ট্র চেতনাকে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ড ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের বিজয়ের প্রতিশোধ নেয়া। বিজয়কে ধূলিস্যাৎ করে স্বাধীনতাবিরোধীদের ক্ষমতাসীন করা এবং পাকিস্তানি ভাবধারা নিয়ে আসা। ১৫ আগস্টের পর খুনিরা ঘোষণা দিয়েছিল ইসলামিক রিপাবলিক অব বাংলাদেশ। পরে তারা আর রাখতে পারেনি।

হত্যাকারীরা তার পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দিন-রাত যারা আমাদের বাড়িতেই ঘোরাঘুরি করত তারাই খুনি হিসেবে এলো। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান মেজর ছিলেন। তাকে প্রমোশন দিয়ে মেজর জেনারেল করা হল। জিয়াউর রহমান আমাদের পরিবারে ঘন ঘন আসতেন এবং আসার সময় খালেদা জিয়াকে সঙ্গে নিয়ে আসতেন যাতে উপরে ওঠে মায়ের সঙ্গে গল্প করতে পারেন।

মেজর ডালিম, মোশতাক আহমেদ ওরা সব সময় আমাদের বাসায় আসত। তিনি বলেন, ’৭২ সালের পর থেকে ’৭৫ সাল পর্যন্ত অনেক লেখালেখি আছে। কেউ যদি একবার চোখ বোলান-পড়েন, দেখবেন কত ভুল সিদ্ধান্ত এবং ভুল কথা তারা বলে গিয়েছিলেন। আর সেই খেসারতটা জাতিকে দিতে হল পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে। সে সময় রাজনৈতিক নেতাদের উপলব্ধি হলে আগস্টে আঘাত আসত না।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল সেই আলবদর, রাজাকার, আলশামস এবং পাকিস্তানি বাহিনীর দালাল-দোসরদের হাতে চলে গেল ক্ষমতা। তাদের হাতে যে ক্ষমতা চলে গেছে সেটাও বোধহয় অনেকে উপলব্ধি করতে পারেননি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে খুন করে মোশতাক ক্ষমতা দখল করে জিয়াকে সেনাবাহিনীর প্রধান করল। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সঙ্গে জিয়ার যোগাযোগ ছিল। তারা জিয়ার কাছ থেকে ইশারা পেয়েছিল। খুনিদের এমন মনোভাব ছিল যে তাদের কিছুই হবে না।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বিজয় তারা কখনই মেনে নিতে পারেনি। হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ছয় দফা আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের মানুষের রক্ত নিয়েছে। গুলি করে হত্যা করেছে। রাজাকার, আলবদর, আলশামস তাদের দালালি করছে, তাদের পদলেহন করেছে। একটি দেশকে পঙ্গু করতে তারা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গণহত্যা চালিয়েছে, অগ্নিসংযোগ করেছে। তাদের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ছিল রন্ধ্রে রন্ধ্রে।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সংবিধান বাতিল করে মার্শাল ল জারি করা হল। সামরিক আইন লঙ্ঘন করে জিয়া ক্ষমতা দখল করে একদিকে সেনাপ্রধান অপরদিকে রাষ্ট্রপতি হল। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য জিয়া অনেক কৌশল নিয়েছিল। নাম নিবন্ধনের সময় যাতে শেখ মুজিব নাম না থাকে সে শর্ত দেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, জিয়া ও এরশাদের ক্ষমতা ছিল অবৈধ। উচ্চ আদালত এ রায় দিয়েছেন। তারা অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী।

১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত দেশের কেন কোনো উন্নতি হয়নি- কারণ বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দাঁড়াবে এটা তারা চায়নি। তিনি বলেন, পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ আলাদা হয়ে গেছে তাই বাংলাদেশ যেন আর দাঁড়াতে না পারে- এটাই ছিল তাদের মনের কথা। একটা দেশকে উন্নত করা যায় সেটা আমরা ২১ বছর পর সরকারে এসে প্রমাণ করতে পেরেছি।

দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের বর্ণনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি পাকিস্তান থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। বাংলাদেশের উন্নয়নে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশগুলো উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করছে। তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশের দিকে সারা বিশ্ব অবাক তাকিয়ে থাকে। যারা ত্যাগ স্বীকার করে, নীতি নিয়ে রাজনীতি করে তাদের জন্য একটি জাতি উন্নত হয়, একটি জাতি এগিয়ে যায়। যেটি আমরা করে দেখিয়েছি। আর পরাজিত শক্তির দোসররা ক্ষমতায় থাকলে দেশ কখনই এগিয়ে যেতে পারে না।

তিনি বলেন, আজকের বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে পৃথিবীর উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের দেশ থেকে স্বীকৃতি পেয়েছে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, দারিদ্র্যের হার কমেছে, বাংলাদেশে খাদ্যের অভাব নেই। দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। সেটা আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি। ১০ বছর পরিশ্রম করে একটা সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে এসেছি।

রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে গড়ে তোলার জন্য ১৯৫৭ সালে মন্ত্রিসভা ত্যাগ করেন বঙ্গবন্ধু। মানুষ মন্ত্রিত্বের জন্য দল ছাড়েন আর তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন দল করার জন্য। তিনি (বঙ্গবন্ধু) সব সময় চিন্তা করতেন বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে হবে। সে কারণেই রাজনীতির প্রতি তিনি বেশি মনোনিবেশ করেন। তিনি বলেন, আমরা তার (বঙ্গবন্ধু) নীতিমালা অনুসরণ করেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। তিনি বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ উন্নত হতে এত সময় লাগত না।

আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সদস্য আজমত উল্লাহ খান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ বক্তব্য দেন। এ সময় মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!