আলোকিত নারায়ণগঞ্জ : স্কুলের শিক্ষা সফরে গিয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলো বন্দর গার্লস স্কুলের মেধাবী শিক্ষার্থী সাদিয়া আলম ঝুঁথি। ঝুঁথির অকাল মৃত্যুতে বন্দর উপজেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।ঝুঁথির অকাল মৃত্যুতে বন্দর গার্লস স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির চরম অবহেলা ও শিক্ষা সফরের নামে অর্থ বানিজ্য কে দায়ী করেছেন অভিবাবক ও এলাকাবাসী।
জানা যায়,বন্দর আমিন এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা শ্রমিক নেতা এসটি আলমগীরের ভাতিজি ও ব্যবসায়ী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছোট মেয়ে বন্দর গার্লস স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর মেধাবী শিক্ষার্থী সাদিয়া আলম ঝুথি, একই স্কুলের ১০ম শ্রেনীর ছাত্রী ঝুথির বড় বোন জাকিয়া আলম সহ দুইশত শিক্ষার্থী,৫০ জন শিক্ষক গাজীপুর বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কে শিক্ষা সফরে যায়। রবিবার (৭ এপ্রিল) সকাল ৮ টায় স্কুলের সামনে গাজীপুর বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কে যায়।
বেলা পৌনে ২টায় ঝুঁথি তার বড় বোন জাকিয়াকে জানায় সে আর হাটঁতে পারবেনা।পা ব্যাথা করছে।এই কথা শিক্ষকদের জানালে তারা একটি রুমে গিয়ে বসাতে বলে। জাকিয়া আলম কান্না জড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের জানান, আড়াইটায় দুপুরের খাবার দেয়া হয়। খাবারের পর রেফেল ড্র হতে থাকে। ঝুঁথির মাথা ব্যাথা বেড়ে যায়।বেলা সাড়ে ৪ টায় গাড়িতে উঠতে বললে উঠতে পারেনা। প্রসাব করে দেয়। সিএনজিতে তুলে বাবাকে ফোন দেয় শিক্ষকরা।
একটি ক্লিনিকে নেয়া হয়। সেখান থেকে বলা হয় সদর হাসপাতাল বা ঢাকায় হাসপাতালে নিতে। হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়।ডাক্তাররা বাজে মন্তব্য করে। কারো সাথে প্রেম বা বিয়ে হয়েছে কিনা। আমি বলি কি বাজে কথা বলছেন ও ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ে। পরে ওর শরীরে থাকা গয়না খুলে আমার হাতে দেয়। আমি বার বার বলি আমার বোন কথা কয়না কেন? ওর কি হইছে।শিক্ষকরা আমারে কয় ওর জ্বর আইসে। মরার কথা কয়নাই। কাপড় দিয়া ডাইকা রাখে। রাত ৯.৫৪ মিনিটে বাবা গেলে তখন কয় আমার বোন মারা গেছে।
ঝুঁথির অকাল মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেনা ঝুঁথির সহপাঠী ও এলাকাবাসী।
রাত সোয়া ১২টায় এম্বুলেন্স করে ঝুঁথির লাশ বন্দর আমিন এলাকায় পৌছলে স্বজন-সহকর্মী ও এলাকাবাসীর কান্নাঁয় আকাশ ভারী হয়ে উঠে
জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তি স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এত দুরের পথ। উৎসব পরিবহন কেন ভাড়া করা হলো। বন্ধন, হিমাচল, শীতল পরিবহন নিলে কোমল মতি শিক্ষার্থীরা একটু আরামে গাঁ হেলান দিয়ে যেতে পারতো। শিক্ষা সফর মুলত হয় শীতকালে জানুয়ারী, ফেব্রুয়ারী মাসে কেন? গরমের সময় এত দুরে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নেয়া হলো।
নাম প্রকাশ না করে স্থানীয় এক ব্যক্তি ও নারায়ণগঞ্জ জেলা দোকান মালিক কর্মচারী পরিষদের নেতা বলেন,স্কুলের শিক্ষার মান যাই হোক না কেন ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকরা রয়েছে অর্থ কামাইয়ের ধান্ধাবাজিতে। এই গরমে কেন শিক্ষাসফরে নেয়া হলো তাও নিন্মমানের পরিবহনে। মেধাবী ছাত্রী ঝুঁথির অকাল মৃত্যুর দায় বহন করতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষ কে।
সকাল ৮ টায় বন্দর আমিন আল আমিন জামে মসজিদে প্রথম জানাযা নামাজ শেষে গ্রামের বাড়ী আলীরটেক ইউনিয়নের আলীরটেক মাদ্রাসায় সকাল ১০ টায় দ্ধিতীয় জানাযা শেষে লাশ দাফন করা হয়।
ঝুঁথি ২০১৮ সালে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিল।
আপনার মতামত লিখুন........