আলোকিত নারায়ণগঞ্জঃ রূপগঞ্জে হাসেম ফুড লিমিটেড কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল। ঘটনাস্থলে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে অবস্থান নেওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই গ্রুপে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাংবাদিকসহ উভয় গ্রুপের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কর্ণগোপ এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে হাসেম ফুড লিমিটেডের পুড়ে যাওয়া কারখানা পরিদর্শনে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির একটি প্রতিনিধিদল। বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও নির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। দুপুর প্রায় আড়াইটার দিকে প্রতিনিধিদল হাসেম ফুড লিমিটেডের মূল গেটের সামনে এসে উপস্থিত হন। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারসহ তার সমর্থকরা অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপুসহ তার সমর্থকদের সঙ্গে তাদের হাতাহাতি ও বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে শান্ত হয় দুই গ্রুপ। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা চলে যান। এরপর হাসেম ফুড লিমিটেড কারখানার সামনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিএনপির উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে নিউজটোয়েন্টিফোর টিভির ক্যামেরাম্যান মাকসুদুল আলম তুষার, গ্লোবাল টেলির জাহাঙ্গীর মাহমুদ, বাংলাদেশ বুলেটিনের সাজেদুর রহমান, তারাব পৌর বিএনপির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন, ছাত্রদল নেতা মাসুম বিল্লাহ, পারেভজ, মামুনসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। এ সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু বলেন, বিএনপি প্রতিনিধিদল এখানে আসুক তা তৈমুর আলম খন্দকার চাননি। যার ফলে এ বিশৃঙ্খল সৃষ্টি করেছেন তারা।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, যারা ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা দলের মধু খেতে আসছে। তারা তো দলের জন্য কাজ করে না বরং দলের বদনাম করে।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গত ৮ জুলাই বিকেলে হাসেম ফুড লিমিটেড কারখানার ৬ তলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরের দিন দুপুরে ওই কারখানা থেকে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার দিন বিকেলে ওই ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে তিন জন নিহত হন।
আপনার মতামত লিখুন........