নারায়ণগঞ্জরবিবার , ২১ অক্টোবর ২০১৮
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ

সোনারগাঁ থানার ওসি ও এসআই চারিত্রিক সনদ নিচ্ছেন!!

alokitonarayanganj
অক্টোবর ২১, ২০১৮ ৮:৫৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আলোকিত নারায়নগঞ্জ ২৪ ডট নেট : গত কয়েকদিন ধরে টক অব দ্যা সোনারগাঁ হচ্ছে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতার মামলা। মামলার করার পর থেকে সাবেক এমপির এপিএস ও যুবলীগ নেতা স্বপন জীবনের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। জাহিদুল ইসলাম স্বপন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখনো কোন দৃশ্যমান বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় নি।

এদিকে, সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ মোরশেদ আলম পিপিএম ও এস আই সাধন বসাক তাদের ভালো চারিত্রিক সনদের জন্য সকল ইউপি চেয়ারম্যান, থানা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের স্বাক্ষর নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পুলিশের এই গুনধর কর্মকর্তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের থেকেও স্বাক্ষর নিচ্ছে। গত কয়েকদিন পূর্বে বর্তমান সাংসদের অফিসে দীর্ঘক্ষণ গোপন মিটিং করেন পুলিশের দুই কর্মকর্তা।

ইতিমধ্যে সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ মোরশেদ আলম পিপিএম ও এসআই সাধন বসাকের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে আদালতে। একটি মামলা তদন্তের জন্য রয়েছে ও অন্য মামলায় এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা দ্বয়কে শোকজ করেছে আদালত।

যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত : উপজেলার চৌদানা মৌজার দত্তপাড়া গ্রামের ১৭২ শতাংশ জমি বায়না করেন সাবেক এমপির এপিএস ও যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম স্বপন। বায়নার পরে গত সেপ্টেম্বর মাসের ২৪ তারিখে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে দত্তপাড়ার বাসায় উঠেন তিনি। পরে ভূমিদস্যু মোস্তফা কামাল স্বপনকে বাড়ী থেকে বের করতে পাগল হয়ে যায়। স্বপন বাড়ীতে উঠার পরদিন অর্থাৎ ২৫ সেপ্টেম্বর এস.আই আহাদ বাড়ী থেকে স্বপনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু প্রকাশ্যে দিনের বেলায় এমন কর্মকান্ড বিতর্কিত হবে পুলিশ তাই আবার কাগজ-পত্র নিয়ে আসতে বলে ছেড়ে দেয় স্বপনকে।

রয়েল রিসোর্টে আলোচনা: চলতি মাসের ৭ তারিখ বিকেলে মোস্তফা কামাল, অফিসার ইনচার্জ মোরশেদ আলম পিপিএম, এস.আই সাধন বসাকসহ পুলিশ সদস্যরা এবং কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত থেকে স্বপনকে উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হয়। আর অফিসার ইনচার্জ মোরশেদ আলম পিপিএম এর সাথে দেড় কোটি টাকায় রফাদফা হয়। যার মধ্যে ৫০ লক্ষ টাকা নগদে গ্রহন করে রাত ১০টার মধ্যে বাড়ী ছাড়তে নির্দেশ দেয় মোরশেদ আলম পিপিএম, এমনই জানালেন জাহিদুল ইসলাম স্বপন।

ঘটনার রাতে কি ঘটেছিলো:
গত ৮ অক্টোবর রাত ২.৩০ মিনিটে স্বপনকে থানায় আটকে রেখে মারধরের ঘটনার একটি অডিও ক্লিপ জাগোনারায়নগঞ্জ২৪ এর কাছে এসেছে। ১৮ মিনিট ৫২ সেকেন্ডের ওই অডিও রেকর্ডে স্বপন ও তার দুই আত্মীয়কে বাড়ি থেকে ধরে নেওয়া, ওসির সঙ্গে মোবাইল ফোনে এসআই সাধনের কথা বলা ও দিকনির্দেশনা নেওয়ার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। এ সময় স্বপনকে আটকের পর তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সকালে বাসা থেকে বেড়িয়ে যেতে বলে ওসি। এ ছাড়া থানায় নিয়ে স্বপন ও আত্মীয়দের নাম-ঠিকানা রেকর্ড বইয়ে লিপিবদ্ধ করা হয়। পরে স্বপনকে একটি কক্ষে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও মারধর করা হয়। এ সময় স্বপনকে উদ্দেশ করে ওসি মোরশেদকে বলতে শোনা যায়, ‘তোকে এখন কোন বাপ বাঁচাবে?’ এসআই সাধন বলেন, স্বপনকে দেওয়া ওই জমির পাওয়ার ছুটিয়ে দেওয়া হবে। এ কথা বলে ওসি ও এসআইকে হাসাহাসি করতে শোনা যায়। পরে এসআই সাধন ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম স্বপনকে হাত সোজা করতে বলেন এবং বেশ কয়েকটি বাড়ি দেওয়ার শব্দ শোনা যায়। এ সময় স্বপনকে ‘মাগো মাগো’ বলে চিৎকার করতে শোনা যায়। পরে স্বপনের আত্মীয় আনিছুরকে ওই কক্ষ থেকে বের করে থানার জেলখানায় ঢোকানো হয়। এ সময় তার শরীর তল্লাশি করে মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে বলে একজন কনস্টেবল পুলিশের এক কর্মকর্তাকে বলেন। ওই কর্মকর্তা তাকে মোবাইল ফোনটি নিয়ে আসার জন্য বলেন। ওই সময় পর্যন্ত থানার ভেতরে যা ঘটেছে সবই অডিও রেকর্ডে রয়েছে।

পুলিশকে আসামী করে মামলা:
চলতি মাসের ১১ তারিখ অভিযুক্ত সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ মোরশেদ আলম ও এসআই সাধনের বিরুদ্ধে মামলা করে জাহিদুল ইসলাম স্বপন। পিটিশন নং ২০৫/১৮. মামলাটি আমলে নিয়ে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্ত ৬টি সুষ্পষ্ট নির্দেশনা দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার, নারায়নগঞ্জকে। তবে তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপারের নীচে হবে না। আদালত তার আদেশে বলে, বাদীর মাথায় পিস্তল ঠিকিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুতর।

অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের আদালতের শোকজ:
সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ মোরশেদ আলম ও এসআই সাধন বসাককে শোকজ করেছে সিনিয়র সহকারী জজ, সোনারগাঁ আদালত।
মামলা নং- ১৬৩/১৮।
পুনরায় বেদখল হবার আশংকায় চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মামলা করে স্বপন। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত পুলিশ কর্মকর্তাদের ১০ দিনের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয়। স্বপনের আইনজীবী দাবি করেন, তার ওকালতি জীবনে প্রথম শুনলাম ও জানলাম পুলিশ নিজেই জমি দখল করে দেয়। লাঠিয়াল চরিত্রে পুলিশ।

পুলিশ মহাপরিদর্শক ও দুদকে অভিযোগ : যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম স্বপন অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ মহাপরিদর্শক ও দুদকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে তিনি নিজের নিরাপত্তাহীনতা ও পরিবারের নিরাপত্তহীনতার কথা উলে¬খ করে তার প্রতিকার চান।

জাহিদুল ইসলাম স্বপনের বক্তব্য:
তিনি বলেন, উপজেলার দত্তপাড়া এলাকায় প্রায় আট কোটি টাকা মূল্যের দেড় একর জমি নিয়ে এক শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকের সঙ্গে তার বিরোধ চলছে। ওসি মোরশেদ ও এসআই সাধন ওই শিল্প মালিকের কাছ থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে ৭ অক্টোবর রাতে বিরোধপূর্ণ জমির বাড়ি থেকে তাকে এবং আনিছুর রহমানসহ তার দুই আত্মীয়কে থানায় নিয়ে যান। পরে থানায় আটকে রেখে ওই জমির দখল ছেড়ে দেওয়ার জন্য শারীরিক নির্যাতন ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। অন্যথায় স্বপনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় মামলা দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন। বর্তমানে তিনি পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

পুলিশের বক্তব্য:
সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ মোরশেদ আলম পিপিএম বলেন, আদালতের ১৪৪ ধারা জারি ছিলো। রাতে বিরোধপূর্ন জমিতে ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করছিলো। পুলিশ গেলে মাছুম চৌধুরী পালিয়ে যায়। তখন স্বপন পালাতে গিয়ে পায়ে ব্যাথা পায়।

ডাক্তারের বক্তব্য:
সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার হ্যাপী দাস চিকিৎসা করেন স্বপনকে। তিনি রেজিস্ট্রারে মারধর করার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তবে পায়ে কোন আঘাতের কথা তিনি লিখেন নি।

খানপুর ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার জানায়, স্বপনের হাতে ও শরীরে মারের দাগ রয়েছে। তবে পায়ে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!