নারায়ণগঞ্জবুধবার , ৭ নভেম্বর ২০১৮
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ

আগামীকাল বৈষ্ণব মতে গোবর্ধন পূজা : অন্নকূট উৎসব

alokitonarayanganj
নভেম্বর ৭, ২০১৮ ৭:৩০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রণজিৎ মোদক : শ্রীমদ্ভগবত গীতার শ্রেষ্ঠ বাণী- ‘সর্ব ধর্মান পরিত্যাজ মা মে কং স্মরণং ভজ’ (সব কিছু ত্যাগ করে একমাত্র আমাকে ভজনা করো)। এ কথার আলোকে শরতের ঠিক মাঝামাঝি কার্তিক মাস, ব্রজবাসীরা এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। যা গোবর্ধন পূজা ও অন্নকূট মহোৎসব নামে খ্যাত। আজ বৈষ্ণব মতে গোবর্ধন পূজা- অন্নকূট উৎসব। শ্রীমদ্ভগবত দশম স্কন্ধের নবম ও দশম অধ্যায়ে লীলা পুরুষোত্তম ভগবান শ্রী কৃষ্ণের ভক্ত বশ্যতা স্বীকার স্বরূপ বন্ধন লীলা বর্ণিত হয়েছে। যা অমল পুরাণ শ্রীমদ্ভগবতে বিধৃত লীলাদির প্রভূত রস আস্বাদন করেছেন বৈষ্ণব আচার্যগণ। লীলাপুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ভৌম লীলায় অনেক চমকপ্রদ লীলা প্রদর্শন করেন।

শ্রীল সনাতন গোস্বামীর মতে, দামবন্ধন লীলাটি হয়েছিল দীপাবলী উৎসবের দিন। তখন শ্রীকৃষ্ণের বয়স ছিল ন্যুনধিক তিন বছর চার মাস। শ্রীল বিশ্বনাথ চক্রবর্তী পাদের মতে, শ্রীকৃষ্ণ গোকূলে ছিলেন তিন বছর চার মাস। এর পর নন্দ মহারাজ ও ব্রজবাসীবৃন্দ যখন বৃষ্টি কামনায় বৃষ্টির দেবতা ইন্দ্র পূজা করবে, তখন বালক শ্রীকৃষ্ণ সে পূজায় বাধা প্রদান করেন। শ্রীল জীব গোস্বামী তার গোপাল চম্পু গ্রন্থে নন্দ মহারাজের বক্তব্য হচ্ছে, বৈশ্য গোপ জাতি। কৃষি এবং গো পালন আমাদের জীবিকা। গো পালনের জন্য আমাদের ঘাসের প্রয়োজন। চাষের জন্য বৃষ্টি চাই। আর ইন্দ্র হচ্ছে বৃষ্টির দেবতা। তাই আমরা ইন্দ্ররাজের পূজা করি। শ্রীকৃষ্ণ বললেন, বাবা, সমুদ্রের মাঝেও বৃষ্টি হয়। সেখানে কেউ ইন্দ্র পূজা করেন না। তবে আমরা কেন ইন্দ্রের পূজা করবো? করণকর্তা একমাত্র ভগবান।

বহু প্রাচীন এই আচার-বিচার লৌকিকতা সংস্কার বহুবিধ নিয়ম নীতির মধ্য দিয়ে এই সনাতন হিন্দু ধর্ম। মত এবং স্তর ভেদে বিভিন্ন জনে বিভিন্নভাবে যার যার কর্ম করে যাচ্ছে। কেউ শাখায় বসে, কেউ পাতায় বসে, কেউবা কান্ড ঘেঁসে আবার কেউ কেউ মূল শিকড়ের সন্ধানে নীরব নিথরভাবে জীবন যাপন করছেন। মূল সত্যকে জানাই হচ্ছে-ধর্ম। আমরা চাঁদের আলোতে আলোকিত হই। কিন্তু চাঁদ কোথা থেকে আলোকিত, তা জানার চেষ্টা করি না। যারা চাঁদের আলোর উৎসের সন্ধান জেনেছেন। তারাই প্রকৃত জ্ঞাণী। সেই সব জ্ঞানীরা মহান আলোর উৎসের বেদীমূলে নিজকে উৎসর্গ করে ধন্য হয়েছেন। আজ অনেকেই শাস্ত্রীয় পথে না গিয়ে লৌকিক আচার পালন করছেন। লৌকিক আচার পালন করে বর্তমান আনন্দ লাভ হতে পারে, তাতে পারমার্থিক লাভ নেই। আমাদের জীবিকা যে গো পালন, গাভী বর্ধনের জন্য আমরা গোবর্ধনের কাছে ঋণী। ইন্দ্রের কাছে নয়। চলো আমরা গোবর্ধনের পূজা করি। এরপর থেকে ইন্দ্ররাজ কুপিত হয়ে প্রবল বর্ষণ শুরু করলেন। ব্রজবাসীদের রক্ষায় শ্রীকৃষ্ণ গিরিধারীরূপে গোবর্ধন শূন্যে ধারণ করলেন। অহংকারী ইন্দ্ররাজ লজ্জ্বিত হয়ে শ্রীকৃষ্ণ পদে আত্মনিবেদন করলেন। পাশাপাশি ব্রজবাসীরা মহারাজ নন্দসহ গোবর্ধন পূজার আয়োজন করেন। সেই পূজার উপাচার অন্নের পাহাড়ের রূপ ধারণ করে। গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে স্পষ্টই বলেছেন, আমি অন্ন দাতা, আমিই অন্ন। সূর্যের তাপরূপে অন্ন পুষ্ট করি, আবার আমিই চন্দ্রের আলোরূপে অন্ন ফল জলের স্বাদ। শাস্ত্রমতে, অন্ন দান শ্রেষ্ঠ দান। জীবের জীবন ধারণের জন্য খাদ্য (অন্ন) মুখ্য ভূমিকা পালন করে। জ্বালানী ছাড়া যেমন ইঞ্জিন চলে না, তেমনিই খাদ্য ছাড়া জীবন চলে না। মানুষের মৌলিক চাহিদা হচ্ছে খাদ্য। ব্রজবাসীরা অন্নের পাহাড়টি গোবর্ধনকে নিবেদন করেন। উপস্থিত সবাই দেখলো একদিকে সাত বছর বয়সী ছোট কৃষ্ণ দাঁড়িয়ে অপরদিকে এক বিশাল শ্রীকৃষ্ণ অন্ন ভোজন করছেন। এই অনুষ্ঠান থেকেই গোবর্দ্ধন পূজা ও অন্নকূট মহোৎসবের সূচনা। অন্নকূট উৎসব সার্থক হোক, দেশ ও জাতির মঙ্গল হোক। এই প্রার্থনা- হরে কৃষ্ণ….।

লেখক : রণজিৎ মোদক
শিক্ষক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট
সভাপতি, ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাব

নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!