নারায়ণগঞ্জরবিবার , ২৭ জানুয়ারি ২০১৯
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ

আর নেই বুড়িগঙ্গার যৌবনের উত্তাল উচ্ছাস

Alokito Narayanganj24
জানুয়ারি ২৭, ২০১৯ ৮:৩৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রনজিৎ মোদক : রাজধানী ঢাকার হৃদয় ছোঁয়া বুড়িগঙ্গা নদী। দিন দিন বুড়ি হয়ে যাচ্ছে বুড়িগঙ্গা। আগের মতো আর নেই তার যৌবনের উত্তাল উচ্ছাস। নেই ঐতিহ্য। কালের বিবর্তনে দখল হয়ে যাচ্ছে বুড়িগঙ্গার দুই তীর। দূষণের কারণে পানি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দূষিত পানি ও দূর্গন্ধের কারণে নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকার স্বাস্থ্যগত পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে।

বুড়িগঙ্গা নদীর অতীত ঐতিহ্য আমাদের অনেকের জানা। বুড়িগঙ্গা নদী বাংলাদেশের উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ২৯ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৩০২ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক বুড়িগঙ্গা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী নং-৪৭। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত একটি নদী। ৪০০ বছর আগে এই নদীর তীরেই গড়ে উঠেছিল ঢাকা শহর। ব্রহ্মপুত্র আর শীতলক্ষ্যার পানি এক স্রোতে মিশে বুড়িগঙ্গা নদীর সৃষ্টি হয়েছিল। তবে বর্তমানে এটা ধলেশ্বরীর শাখাবিশেষ। কথিত আছে, গঙ্গা নদীর একটি ধারা প্রাচীনকালে ধলেশ্বরী হয়ে সোজা দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে মিশেছিল। পরে গঙ্গার সেই ধারাটির গতিপথ পরিবর্তন হলে গঙ্গার সাথে তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তবে প্রাচীন গঙ্গা এই পথে প্রবাহিত হতো বলেই এমন নামকরণ। মূলত ধলেশ্বরী থেকে বুড়িগঙ্গার উৎপত্তি। কলাতিয়া এর উৎপত্তিস্থল।

বুড়িগঙ্গার সৌন্দর্য বাড়ানোর কাজ করেছিলেন, বাংলার সুবাদার মুকাররম খাঁ। তার শাসনামলে শহরের যেসকল অংশ নদীর তীরে অবস্থিত ছিল, সেখানে প্রতি রাতে আলোক সজ্জা করা হতো। এছাড়া নদীর বুকে অংসখ্য নৌকাতে জ্বলতো ফানুস বাতি। তখন বুড়িগঙ্গার তীরে অপরূপ সৌন্দের্য্যরে সৃষ্টি হতো। ১৮০০ সালে টেইলর বুড়িগঙ্গা নদী দেখে মুগ্ধ হয়ে লিখেছিলেন- “বর্ষাকালে যখন বুড়িগঙ্গা পানিতে ভরপুর থাকে, তখন ঢাকাকে দেখায় ভেনিসের মতো।”

বুড়িগঙ্গা নদীর বুকে যাতায়াত পথে বিভিন্ন দূর-দূরান্ত থেকে আগত ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য নিয়ে ঢাকা আসতো। তারা এই নদীর পানি পান করতো এবং পাশ্ববর্তী তীরের বসতি মানুষ এই নদীতে গোসল ও পানি ব্যবহার করতো। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বুড়িগঙ্গা নদীর পানি ব্যাবহার করতো। বিশেষ করে হিন্দু-সনাতন ধর্মের মানুষ এই নদীকে মায়ের মত পূজা দিতো। মাঘী পূর্ণিমায় পাগলা পাগল নাথ ঘাটে স্নান উৎসব পালিত হয়। যার ধারায় এখনো উৎযাপিত হয়ে আসছে।

বুড়িগঙ্গা নদীর অবস্থা বর্তমানে উৎসমুখটি ভরাট হওয়ায় পুরানো কোন চিহ্ন খোঁজে পাওয়া যায় না। প্রতিদিন যদিও এই নদীতে জোয়ার-ভাটা হওয়া সত্ত্বেও পানি দূষণের কোনো পরিবর্তণ হচ্ছেনা। পানি দূষণের ফলে নদীতে মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিশ্বাস হতে কষ্ট হয়, এতো বড় একটা নদীতে মাছ নেই বললেই চলে। নদীর পানি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যদিও বর্ষা মৌসুমে পানির আংশিক পরিবর্তন দেখা মিললেও বর্ষার শেষে বাকি দীর্ঘ ৮ মাস পানির রঙ মিশ্র কালো ও দূর্গন্ধময়। এতে করে নদীর পাশ্ববর্তী স্বাস্থ্যগত পরিবেশ হুমকির সম্মুখীন। বর্তমান সরকার যদিও নদীর তীরবর্তী অবৈধ দখলমুক্ত ও পরিবেশ রক্ষায় ফুটব্রীজ করে দিলেও সেগুলো যত্নের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে মুন্সিখোলা, চাকদা, শ্যামপুর এলাকার একশ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসার স্বার্থে এই রাস্তা ব্যবহার করছে।

নেই কোন প্রতিকার প্রতিরোধ !! তাহলে কি বুড়িগঙ্গার অস্তিত্ব দিন দিন হারিয়ে যাবে? বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ আমরা সবাই জানি। কিন্তু এভাবে যদি নদী তার নাব্যতা ও ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলে, তাহলে বাংলাদেশ একসময় মরুভূমির দেশে পরিণত হবে। জনসাধারন চায় নদী তার নাব্যতা ও ঐতিহ্য ফিরে পাক। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সচেতন মহল।

নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!