নারায়ণগঞ্জমঙ্গলবার , ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ

করোনার অকুতোভয় নারীর বিরুদ্ধে কাপুরুষদের অশ্লীল প্রচারনা!

Alokito Narayanganj24
সেপ্টেম্বর ২২, ২০২০ ৭:১০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিশেষ প্রতিনিধি:হটস্পটখ্যাত নারায়ণগঞ্জে করোনার প্রাদুর্ভাব এতটাই ভয়ংকর রূপ ধারন করেছিল যে এ জেলায় বসবাসরত কোন ব্যাক্তি যদি অন্য জেলায় প্রবেশ করতো তাহলো তাৎক্ষনিক স্থাণীয় প্রশাসন বসবাসরত ব্যাক্তির বসত বাড়ীসহ আশে পাশের কয়েকটি এলাকাকে লক ডাউনের আওতায় নিয়ে আসতো। এমনকি করোনায় আক্রান্ত হয়ে যদি কেউ মৃত্যুবরন করে তাহলে মৃত ব্যাক্তির স্বজনরাও মরদেহ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতো। মৃত ব্যাক্তির লাঁশ দীর্ঘ সময় ধরে একটি স্থানে পরে থাকলেও কাছে আসতে কেউ সাহস পেত না। ঠিক ঐ সময়তে মানবতার বিবেককে প্রধান্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের করোনায় মারা যাওয়া লাঁশ দাফন এবং সৎকার কমিটি সকল প্রকার দায়িত্ব নিয়ে ধর্মীয় রীতি নীতি নিয়ম অনুসারী শেষকৃত সম্পাদন করে আসছেন। আর এ টিমের অন্যতম নারী সদস্য হচ্ছেন এনায়েতনগর ইউপির সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার রোজিনা আক্তার। নিজের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে মানবতার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপনের মাধ্যমে ইতিমধ্যে দেশব্যাপি আলোচিত এই নারী জনপ্রতিনিধি। অথচ একটি কুচক্রীমহল মানবতার সেবক এই নারী জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং ইমুতে একাধিক ভূয়া আইডি খোলা হয়েছে। এই আইডিগুলো থেকে কুচক্রী মহলের কাপুরুষ দলের কতিপয় কিছু দুষ্কৃতিকারী ইউপি মেম্বার রোজিনা আক্তারকে নিয়ে বিভিন্ন অশ্লীল ছবি এবং অশালীন কথা বার্তা প্রচার করে বেড়াচ্ছে। এ অবস্থায় ইউপি মেম্বার রোজিনা আক্তার বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে দিনানিপাত করছে এবং সামাজিকভাবে হেও প্রতিপন্ন হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। এমতবস্থায় ফেক আইডির বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন ইউপি মেম্বার রোজিনা আক্তার।

এ ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, এমন বিষয়টি সর্ম্পকে আমরা অবগত নই। তবে ভূয়া আইডি তৈরীর মাধ্যমে যদি কাউকে সামাজিকভাবে হেও প্রতিপন্ন করা হয়ে থাকে তাহলে ভোক্তভোগী যদি আইনগত সহায়তা চেয়ে থাকেন তাহলে অব্যশই আমাদের পক্ষ থেকে ভোক্তভোগীকে সব ধরনের আইনগত সহযোগিতা করা হবে।

এ বিষয়ে রোজিনা আক্তার তার ফেসবুকে লিখেছেন, প্রিয় এলাকাবাসী আসসালামুআলাইকুম। কে বা কাহারা আমার নামে ফেক আইডি খুলেছে দয়া করে কেউ এই আইডির সাথে এড হবেন না। আমি এই আইডির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি আর এই আইডিতে ঢুকে রিপোর্ট করুন। এই আইডিটা এক বোন চালাচ্ছেন। কিভাবে এক নারী হয়ে আরেক নারীর সম্মান নষ্ট করে।

কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ লিখেছেন, ভাল কাজের খেসারত। প্রবাদ আছে যখন দেখবে তোমার শত্রু তৈরী হচ্ছে তখন বুঝবে তুমি ভাল কাজ করছো। এনায়েতনগর ইউপি মেম্বার ও টিম খোরশেদ নারী টিমের সমন্বয়কারী রোজিনা আক্তার দেশে প্রথম মহিলা যিনি টিম খোরশেদ এর আহবানে সাড়া দিয়ে করোনায় মৃত নারী মরদেহ গোসলের জন্য এগিয়ে আসেন। দিনের পর দিন রাতের পর রাত নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, ঢাকা ছুটে বেড়িয়েছেন করোনা মরদেহ গোসল দিয়ে কাফন পরানোর জন্য। সেই রোজিনার নামে এ ধরনের ফেক আইডি খুলে প্রচারনা করা হচ্ছে। নিয়ম মোতাবেক আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। সম্ভবত সেই কারনেরই এমন নগ্ন কাজ করছে কেউ। যারা এমন অপপ্রচারে লিপ্ত হয় তারা আল্লাহ ও তাদের নিজেদের কর্মের প্রতি বিস্বাস করে না।তাই তারা এমন এমন হীন কাজ করে।

প্রসঙ্গত করোনাভাইরাসের হটস্পট নারায়ণগঞ্জে আক্রান্ত্রের সংখ্যা কমে আসছে। কিন্তু, প্রতি সপ্তাহেই মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। মৃতদের দাফন কিংবা সৎকার করা নিয়ে দুর্ভোগে পরতে হচ্ছে স্বজনদের। স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনগুলো মৃতদেহ দাফন ও সৎকার করে থাকলেও নারীদের মরদেহ গোসল করানো নিয়ে প্রতিনিয়ত বিপাকে পরতে হয়। এ পরিস্থিতিতে এগিয়ে এসেছেন নারায়ণগঞ্জে সদর উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দুই বারের নির্বাচিত সংরক্ষিত নারী সদস্য রোজিনা আক্তার।

এনায়েতনগর ইউনিয়নের নারী সদস্য হলেও, মরদেহ গোসল করাতে ইউনিয়নের বাইরেও গিয়েছেন তিনি। করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই তিনি মাস্ক, লিফলেট ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। তার নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জে মরদেহ দাফনে গঠন করা হয় ‘মাসদাইর যুব কল্যাণ সংঘ (এমজেকেএস)-টিম রোজিনা কোভিড-১৯। রোজিনা আক্তার পশ্চিম মাসদাইর এলাকার মরহুম আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। তার দুই ছেলের মধ্যে রেজোয়ান আহমেদ রাজু বড় আর রায়হান আহমেদ ছোট। রোজিনা আক্তার বলেন, প্রথম যখন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়, আর কাউন্সিলর খোরশেদ ভাই করোনায় মৃতদের মরদেহ দাফন ও সৎকারের কাজ করছিলেন তখন ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেই, “যদি কোনো মা-বোন মারা যায় তাহলে গোসলের কাজটি আমি সম্পূর্ণ করব। সে সময়, নারীরা মারা গেলে কেউ এগিয়ে আসছিল না কিংবা নারীদের গোসল করাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল। তিনি আরও বলেন, এমনও হয়েছে এক নারী মারা গেছেন তার মরদেহ গোসল করানোর জন্য বাইরে বের করতে দেয়নি প্রতিবেশীরা। তারা বলেন, বাথরুমে গোসল করান। শেষে বারান্দায় গোসল করিয়েছি। আবার মৃতের পরিবার বলছে, গোসল করিয়ে জায়গা পরিষ্কার করে দিয়ে যান। রোজিনা আক্তার বলেন, এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে। মারা গেলে আত্মীয়রা বাড়িতে আসে, কিন্তু মরদেহ ধরতে চায় না। স্বাভাবিক মৃত্যু হলেও, ডেকে পাঠায় যাওয়ার জন্য। যতদিন পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে আমার আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবো। তিনি এখনও করোনায় আক্রান্ত হননি বলে জানান রোজিনা আক্তার। তিনি বলেন, ‘একবার পরীক্ষা করিয়েছি। তখন রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তারপর আর নমুনা দেইনি। কোনো উপসর্গও নেই। আর আমি পরিবার থেকে আলাদা থাকছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছি।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, ‘নারীর মরদেহ দাফনে আমরা সব থেকে বেশি সমস্যায় পরেছি গোসল করানোর জন্য। করোনার ভয়ে গোসল করানোর জন্য কেউ এগিয়ে আসছিল না। তখন রোজিনা আক্তার আসায় আমাদের সব কিছু সহজ হয়ে যায়। এখনও পর্যন্ত আমরা যখনই তাকে জানিয়েছি মরদেহ গোসল করাতে হবে, সেটা রাত কিংবা দিন, সঙ্গে সঙ্গে চলে এসেছেন। তিনি একজন করোনার অকুতোভয় নারী।

নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!