নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দৈনিক যুগের চিন্তা পত্রিকার ফতুল্লা প্রতিনিধি ও ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাবের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন শুভকে প্রাণনাশের হুমকী প্রদানকারী মিশুক গাড়ী চোরদের শেল্টারদাতা আক্তার ওরফে নাক্কু আক্তার রয়েছে বহালতবিয়তে। সাংবাদিককে হুমকী প্রদানের ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও কোনো এক অদৃশ্য ইশারায় গ্রেপ্তার হয়নি নানা অভিযোগে অভিযুক্ত নাক্কু আক্তার। শুরু তা-ই নয়, অটো-মিশুক চোর চক্রের শেল্টারদাতা আক্তারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে বেড়িয়ে আসছে থলের বিড়াল। তার অপকর্মের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে স্থানীয়রা।
সুত্রে জানা যায়, পাগলা নয়ামাটি এলাকার মৃত আলী আহাম্মদের ছেলে আক্তার হোসেন ওরফে নাক্কু আক্তার দীর্ঘদিন যাবত অত্র এলাকার রেললাইন সংলগ্ন, গোপনে একটি গোডাউন ভাড়া নিয়ে সেখানে তার সালা অটো চোর হোসেন ও জাহাঙ্গীরের মাধ্যমে চেরাই অটো-মিশুক গাড়ীর ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। হঠাৎ সেখানে অভিযানে চালিয়ে দুইটি চোরাই মিশুক উদ্ধার করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। পরবর্তীতে মিশুক গাড়ীর গায়ে লেখা নাম্বারে যোগাযোগের মাধ্যমে মালিককে খোঁজে পাওয়া গেলে, গাড়ীর মালিক সেই চোর চক্রের শেল্টারদাতা আক্তার ওরফে নাক্কু আক্তারসহ ৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। (যাহার মামলা নং-৫৫)। তার বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় একাধিক অভিযোগসহ হত্যার হুমকীর দুইটি জিডি, যাহার জিডি নং- ১৩২১, ১০০।
চোর চক্রের মূলহোতা নাক্কু আক্তারের অপকর্ম এখানেই শেষ নয়, পদ-পদবী বিহীন এই চক্রের হোতা নিজেকে যুবলীগ নেতা দাবী করে দাবরিয়ে বেড়ায় গোটা ফতুল্লা অঞ্চল। তিনি নিজেকে আবার কুতুবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিতেও শুনা যায়। এইসব ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ অশ্রের মুখে জিম্মি করে দখল করেছেন দক্ষিণ নয়ামাটি অবস্থান রোড এলাকার লিটন নামে এক অসহায় পরিবারের বাড়ী। বাড়ীর সামনে একটি সাইনবোর্ড ব্যবহার করেছেন আক্তারের নামে। সেই সাইনবোর্ডে লিখা রয়েছে, এই বাড়ির মালিক মোঃ লিটন মিয়া গং এর নিকট আমি মোঃ আক্তার হোসেন ৮ লক্ষ টাকা পাইবো, এই বাড়ির ক্রয় করিবার আগে মোঃ আক্তার হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করিবেন। সাং- নয়ামাটি, পাগলা, ফতুল্লা, নাঃগঞ্জ। মোবাইল নং-০১৯৮৫৮৩৩১৪৪।
এ বিষয়ে বাড়ির মালিক মোঃ লিটন মিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমার কাছে আক্তার কোনো টাকা পাবে না। সে আমার পরিবারকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আমাকে এলাকা থেকে বেড় করে দিয়ে এখন বাড়ির গেইটের সামনে নাকি একটি সাইনবোর্ড ব্যবহার করেছে। আমি দেখিও নাই। এই নিয়ে আমি আদালতে মামলাও করেছি। হয়তোবা কয়েক দিনের মধ্যে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন মহামান্য আদালত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আক্তার হোসেন ওরফে নাক্কু আক্তার পিলকুনী পান্না ফ্যাশন নামে একটি সোয়েটার ফেক্টরিতে চাকরি করতেন। সেখানেও দায়িত্বে অবহেলা করার কারণে চাকরি হারায়। তারপর থেকে এক আওয়ামী লীগ নেতার নাম ব্যবহার করে নিজেকে যুবলীগ নেতা দাবী করেন। তিনি তার অপকর্ম ঢাকতে কখনো জেলা আওয়ামী লীগ, কখনো থানা আওয়ামী লীগ, কখনো চেয়ারম্যানের লোক পরিচয়ে মাদক ব্যবসা, চুরি, ছিনতাই, বিভিন্ন কল-কারখানায় চাঁদাবাজী, বাড়ি দখল ও জুয়ার আসরসহ মাদক সেবনে ব্যস্ত সময় পার করেন। তার নেই কোনো ধরনের বৈধ ব্যবসা। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।
নাম প্রকাশ্যে অনইচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, আমাদের বৃহত্তর নয়ামাটি কবস্থান রাস্তার কাজ চলছে, সেই কাজের দেখভাল করার দায়িত্ব নাকি চেয়ারম্যান সাহেব আক্তারকে দিয়েছে। তাই আক্তার আমাকে বলছে যে, আমার বাড়ির টয়লেট নাকি কয়েক ইঞ্চি রাস্তায় তাই তাকে টাকা দিতে হবে, তানা হলে আমার টয়লেট ভেঙে দিতে হবে। পরে আমি তাকে ২ হাজার টাকা দিয়ে আমার টয়লেট বাচায়। এমন সে এলাকার প্রতিটি মানুষের সাথে করে। আসলে কি আমাদের চেয়ারম্যান সাহেব এইসব বিষয়ে জানেন কি না, তাও আমরা জানি না। প্রতিটি মুহূর্তে আমরা আক্তারের ভয়ে জীবন-জাপন করছি।
আক্তার হোসেন ওরফে নাক্কু আক্তারের অপকর্মের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাকে গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়েছেন অত্র এলাকাবাসী। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) হস্তক্ষেপ কমনা করেন।
আপনার মতামত লিখুন........