নারায়ণগঞ্জশুক্রবার , ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ

কোন রাজ্যেই শান্তি নাই বুঝলে বন্ধু চলো আপন রাজ্যে ফিরে যাই

Alokito Narayanganj24
সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২ ১:০৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

মঈনুল হোসেন নিলয়ঃ
এক রাজ্যে ছিল এক মন্ত্রীপুত্র। সে ছিল অনেক অনেক উদার মনের এবং কুসংষ্কার মুক্ত মানুষ। কিন্তু উদার হলেই তো হবে না, সে রাজ্যের নিয়মকানুন ছিল বেশ কঠিন। সেখানে বর্ণপ্রথা খুব কড়া ভাবে পালন করা হতো। ব্রাক্ষ্মনরা মিশতনা অন্যদের সাথে। শুদ্ররা ছিল সবচেয়ে নিচু জাতের তাদের সাথে সম্পর্ক দুরে থাকুক ছায়া পর্যন্ত পড়লেও সাত-বার গঙ্গাজলে স্নান করতে হতো।কিন্তু এত এত কঠোর আইন থাকলেই কি হবে, মন্ত্রীপুত্র রাজ্যের নিয়ম ভংগ করে বন্ধুত্ব করে ফেলল এক নাপিত পুত্রের সাথে। দুই বন্ধুতে গোপনে দেখা সাক্ষাত চলতে ছিল ভালই। কিন্তু হটাৎ এক পেয়াদা দেখে ফেলায় রাজার কানে পৌছে গেল। রাজা মশাই তো আইনের বাত্যয় করবেন না। তাই রাজ্যসভায় সিদ্ধান্ত হলো নাপিত পুত্র কে রাজ্য থেকে বিতাড়িত করতে হবে। যেই কথা সেই কাজ নাপিত পুত্র বিতাড়িত হলো, কিন্তু মন্ত্রীপুত্র বলল; এই দেশের আইনে ন্যায়নীতি নাই। তাই সেও নাপিত পুত্রের সহিত রাজ্য থেকে দুচোখ যে দিকে যায় হাটা আরম্ভ করল। তিন মাস তিন দিন হাটার পরে তারা একটি নতুন রাজ্যে এসে উপস্থিত হলো। সেখানকার এক বাজারে উপস্থিত হলো দুই বন্ধু। নতুন রাজ্য নতুন নিয়ম। সবাই সমান।মানুষে মানুষে কোন পার্থক্য নাই। রাজ্যের ঝাড়ুদারেরও যে বেতন, প্রধানমন্ত্রীর সেই বেতন। শাক-স্বব্জীর দরও ১ টাকা সেই সাথে ঘী-এর সেরও ১টাকা। নাপিত পুত্রতো বেজায় খুশি। খুশির চোটে সে বাকুম-বাকুম করতে লাগল। মন্ত্রীপুত্রকে বলল, “বন্ধূ এই রাজ্যের রাজা বেজায় ন্যায়বিচারক, তাছাড়া এখানে শাকের দামে ঘী পাওয়া যায়। কখনও তো ঘী খাইনি আমি এখানেই থাকবো।” মন্ত্রীপুত্র বলল বন্ধু এখানেও ন্যায়বিচার নেই। কিন্তু নাপিতপুত্রের জোরাজুরিতে নাপিতপুত্রকে সেখানে রেখেই মন্ত্রীপুত্র তার আপন রাজ্যে ফিরে গেল। এদিকে নাপিত পুত্র সেই বাজারে সেলুনের দোকান খুলে খেউড়ী করা আরম্ভ করল। প্রতিদিন যা ইনকাম করে তা থেকে ঘী কিনে ঘী-ভাত খাওয়া আরম্ভ করল। দেখতে দেখতে নাপিত পুত্র বেজায় মোটা সোটা এবং নাদুস নুদুস হয়ে উঠলো। গা দিয়ে যেন তেল ঝরে। এদিকে সেই রাজ্যের নিয়ম, প্রতি বছর তারা ১লা বৈশাখে দেশের মানুষের মঙ্গল কামনায় সবচেয়ে মোটা তাজা মানুষকে শুলে চড়িয়ে দেবীর কাছে উৎসর্গ করে। সারা রাজ্যে ঢোল পিটিয়ে দেওয়া হলো, পাইক-পেয়াদা খুজে খুজে নাপিত পুত্রকে পেল সবচেয়ে মোটা আর নাদুস নুদুস। পূজার পাচদিন আগে তাকে ধরে এনে বন্দি করে রাখা হলো, নির্ধারিত দিনে শুলে চড়ানো হবে। নাপিতপুত্র বেজায় দুঃচিন্তায় পড়ে গেল। হটাৎ মনে পড়ল বন্ধুর কথা। এক পেয়াদাকে ২০০টাকা ঘূষ দিয়ে গোপনে খবর পাঠালো তার বন্ধুর কাছে । খবর শুনে মন্ত্রীপুত্র ছুটে এলো সেই রাজ্যে।গোপনে কারাগারে দেখা করল বন্ধুর সাথে, অনেক অনেক গোপন কথা হলো দুই বন্ধূর। এভাবেই চলে এলো উৎসর্গের দিন। নাপিতপুত্রকে সাজিয়ে গুছিয়ে নেয়া হল শুলদন্ডের কাছে। এমন সময় মন্ত্রীপুত্র দৌড়াতে দৌড়াতে এসে হাজির । রাজাকে বলল “মহারাজ এই নাপিতপুত্রকে শুলে দেওয়ার চেয়ে আমাকে দিন, আমি আপনাকে আমার রাজ্য দিয়ে দেব” । নাপিতপুত্র বলল ” না মহারাজ আমি শুলে চড়তে চাই”। দুই বন্ধূতে ধুন্দুমার মারামারি কে শুলে চড়বে তাই নিয়ে। এদিকে লগ্ন বয়ে যাচ্ছে। রাজা পড়লেন মহাবিপদে । শূলের কথা শুনলে যেখানে সকল প্রজা পালায় সেখানে এরা কেন শুলে চড়ার জন্য মারামারি আরম্ভ করেছে? নিশ্চই কিছু আছে এর ভেতরে? রাজা মশায় বললেন: “ঠিক আছে তোমাদের একজনকে শুলে চড়ানো হবে, কিন্তু তার আগে তোমরা বল কেন শুলে চড়ার জন্য তোমাদের এত এত আগ্রহ”। মন্ত্রীপুত্র বলল “গোস্তাকী মাপ করবেন মহারাজ। আমি গত সপ্তাহে জোতিষীকে দিয়ে গণনা করিয়ে দেখেছি যে, এবছর যে ব্যক্তি শুলে উৎসর্গ হবে সে স্বর্গে এই রাজ্যের সমান সাত সাতটি রাজ্যের মালিক হবে এবং তার বিগত চৌদ্দপুরুষকে সে তার সাথে স্বর্গে পাবে। তাই আমি এই শুলে চড়তে চাই। রাজা মশায় বললেন “দুর হ তোরা আমার সামনে থেকে । সাত সাতটি রাজ্য দেব আমি নাপিতপুত্রকে? তারপর রাজার আদেশে রাজাকেই চড়ানো হল শূলে। রাজার সেই স্বর্গযাত্রার চিৎকারে উপস্থিত সবাই মুর্চ্ছা গেল। পালিয়ে আসলো দুই বন্ধু, আর বলল কোন রাজ্যেই শান্তি নাই বুঝলে বন্ধু, চলো আপন রাজ্যে ফিরে যাই, আর যাই হোক জীবনটা তো বাচবে।
লেখকঃ নারায়ণগঞ্জ কলেজের ছাত্র।
নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!