আলোকিত নারায়ণগঞ্জঃনারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাহরিয়ার রেজা হিমেলের নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিচার চেয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে কাফনের কাপড় পরে পরিবার নিয়ে মানববন্ধন করা ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
বুধবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে ফতুল্লার সস্তাপুরে ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের বাড়িতে যান নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘ক’ সার্কেল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী। এ সময় নজরুল ইসলাম ও তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে তাদের অভিযোগ লিখিত আকারে সংশ্লিষ্ট থানায় দেওয়ার নির্দেশ দেন জেলা পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এর আগে মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) সকালে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাহরিয়ার রেজা হিমেল, তার বাবা ও চাচাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হত্যার হুমকির অভিযোগ তুলে কাফনের কাপড় পরে মানববন্ধন করেন সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার সস্তাপুর মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম (৫২) ও তার স্ত্রী সন্তানরা।
মানববন্ধনে নজরুল ইসলাম বলেন, সস্তাপুরের লাল চান মিয়ার ছেলে শাহজালাল (হিমেলের বাবা) ও শাহজাহান (হিমেলের চাচা) তার সস্তাপুর মধ্যপাড়া এলাকার জমি দখল করতে চায়। এ জন্য তারা বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিচ্ছে। তার অভিযোগ, গত ৮ অক্টোবর শাহজালালের ছেলে জেলা ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার রেজা হিমেল, চাচা যুবলীগ নেতা মজিবর রহমান, শাহ্জালাল ও জুয়েলসহ ২০ থেকে ২৫ জন অস্ত্রসহ দেশীয় দা, চাপাতি, ছুরি, হকিস্টিক, লোহার রড নিয়ে তার কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। বাড়ি থেকে উৎখাতের হুমকি দেয়। একই সঙ্গে তাকে ও তার পরিবারের সব সদস্যদের হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ এই ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর।
ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম জেলা ছাত্রলীগ নেতার হিমেলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে আরও বলেন, ‘হিমেলের পুরো পরিবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়িতে ঢুকে হিমেল ও তার বাপ-চাচা আমাদের হুমকি-ধমকি দেয়। এক যুগ ধরে তারা আমার তিনটা বাড়ি দখল করে রেখেছে। এখন যে বাড়িটাতে থাকছি সেটাও দখলের পাঁয়তারা করছে। তাদের এই দখলদারিত্বের জন্য বাধ্য হয়ে কাতার থেকে চলে আসতে হয়েছে।’
তবে এসব হুমকি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বিগত সময়ে একাধিকবার ফতুল্লা থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোনো সহায়তা পাননি দাবি করে ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমি কাফনের কাপড় পরে নামতে বাধ্য হয়েছি। আমার হারানোর আর কিছু নাই।’
মানববন্ধনে স্বামীর সঙ্গে কাফনের কাপড় পরে উপস্থিত ছিলেন স্ত্রী নাজমা আক্তারসহ তাদের দুই ছেলে। মানববন্ধন শেষে ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম এদিন হিমেলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
নজরুল ইসলামের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে তার বাড়িতে যান জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘ক’ সার্কেল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী।
আপনার মতামত লিখুন........