ফতুল্লা সংবাদদাতা : ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-পাগলা রুটে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফতুল্লা থানার অন্তর্গত ব্যস্ততম এই রুটের মাসদাইর কবরস্থান রোড হতে শুরু করে পাগলা-মুন্সিখোলা-পোস্তগোলা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছিনতাইকারীদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র নানা কৌশলে এসব কুকর্ম পরিচালনা করছে।
এ ব্যাপারে ফতুল্লার দাপায় বসবাসরত জনৈক গার্মেন্টস কর্মী আলাল জানান, গত বৃহস্পতিবার গার্মেন্টস থেকে রাত ১১টায় বিসিক হতে হেঁটে তার বাসায় আসার সময় ফতুল্লা পোস্ট অফিসের কাছাকাছি পৌঁছামাত্রই তাকে ছিনতাইকারীরা পথরোধ করে। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছিনতাইকারীরা প্রকাশ্যে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার পকেটে রক্ষিত নগদ ২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
অপরদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী গার্মেন্টস কর্মী জানান, রাত ৯টায় অফিস ছুটি হওয়ার পর বিসিক থেকে আসার সময় পঞ্চবটি পার্কের সামনে থেকে আমার ব্যানিটি ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে যায় চারজনের একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী দল। আমার ব্যানিটি ব্যাগে ১২০০ টাকা ছিল। টাকা ছাড়াও ব্যাগে মোবাইল, হাজিরা কার্ড সহ অনেক কাগজপত্র ছিল। থানায় অভিযোগ করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরীব মানুষ কাজ করে খাই, এত ঝামেলা কে করে বলেন?
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতার অভাবে ছিনতাইকারীদের দুর্ধর্ষ ওই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরেই গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-পাগলা সড়কটি তাদের অভয়ারণ্যে পরিণত করে তুলেছে।
সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-পাগলা সড়কের পাশাপাশি ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে বখাটেদের আড্ডাস্থল এবং পরিণত হয়েছে ছিনতাইকারীদের নিরাপদস্থানে। এর ফলে গত কয়েক মাস ধরে ফতুল্লাবাসী রয়েছে আতংকে। দিনের বেলায় যাতায়াতরত বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে অভিভাবকদেরকেও বখাটেরা নানাভাবে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে আসছে। এর ফলে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয় শিক্ষার্থীসহ সাধারণ অভিভাবকদের। এমনকি সুযোগবুঝে ছিনতাইকারীরা যাতায়াতরত সাধারণ মানুষকে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কেড়ে নিচ্ছে নগদ অর্থ, মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে সর্বস্ব।
এমনই অভিযোগ উক্ত সড়ক দিয়ে যাতায়াতরত একাধিক মানুষের। ফতুল্লাবাসী তাদের অভিযোগে জানান, ফতুল্লার ডিআইটি মাঠ, নদীরপাড়ের ওয়াকওয়ে, শিবু মার্কেট, স্টেডিয়াম রোড, দাপা ট্রাক স্ট্যান্ড, আলীগঞ্জ ট্রাকস্ট্রান্ড, পাগলা বাজার, মুন্সিখোলা ঘিরে একাধিক ছিনতাইকারী চক্র গড়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব এলাকাসহ আশেপাশের এলাকাতেও ছিনতাইসহ অসামাজিক কার্য্যকলাপ চলে আসছে। এছাড়া পুলিশি ঝামেলা এবং বখাটেদের ভয়তে সাধারণ ভুক্তভোগী মানুষ আইনশৃংখলা বাহিনীর সহায়তা চাইতেও পাড়ছে না।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি দাপা বালুরঘাট এলাকায় বালুবাহী ট্রলারের জনৈক শ্রমিক ছিনতাইকারীদের হাতে ছুরিকাঘাত হয়। ১০ টাকা না দেওয়ায় বখাটে ছিনতাইকারীরা খুর দিয়ে তার হাতের রগ কেটে দেয়।
মূলতঃ ব্যাটারী চালিত অটোরিকশার মাধ্যমেই এরা এসকল অপকর্ম চালিয়ে আসছে। এদের অবাধ বিচরণের কারণে উল্লেখি এলাকা দিয়ে চলাচল করতে প্রতিনিয়তই কুন্ঠাবোধ করছে পথচারী ও যাত্রী সাধারণ। তাই জেলা পুলিশ সুপার এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে ফতুল্লাবাসীর দাবি, অচিরেই ফতুল্লাবাসীকে ভয়ানক এ চক্রের কবল থেকে রেহাই পেতে ভুক্তভোগী জনসাধারণ প্রশাসনের উদ্ধর্তন মহলের স্থায়ী পুলিশি টহলসহ আশু কার্যকরি হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
আপনার মতামত লিখুন........