নারায়ণগঞ্জসোমবার , ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ

“নবীন নাকি প্রবীন” কাদের নিয়ন্ত্রনে থাকছে না’গঞ্জে বিএনপি?

Alokito Narayanganj24
সেপ্টেম্বর ২১, ২০২০ ১:৪৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বিশেষ প্রতিনিধি:বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন বিএনপিকে আগে পূনর্বাসনের কাজ করা হবে পরে হবে পূনর্গঠন। তবে এই পূনর্গঠনের পর নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে কারা থাকবেন নেতৃত্বে তা নিয়ে একই নেতাকর্মীদের মাঝে চলছে নানা আলোচনা। এখানে রয়েছেন ডজন খানিক প্রবীণ বিএনপি নেতারা যারা ইতিমধ্যে বয়সের ভারে নুব্জ। আবার উদীয়মান বেশকজন নবীণ বিএনপি নেতা রয়েছেন যাদের হাতে আসতে পারে বিএনপির নেতৃত্ব। তবে গত ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের পর সারাদেশের মত নারায়ণগঞ্জেও বিএনপি বিপর্যস্ত। মানসিকভাবে বেশ দূর্বল হয়ে পড়েছে বিএনপি। আশাহত হয়েছে অনেকেই রাজনীতির বাহিরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আবার প্রবীণ রাজনীতিকদের চলছে বিদায় ঘন্টা। এরই মধ্যে বেজে উঠেছে জেলা ও মহনগরের নতুন কমিটির ধামাকা।
নেতাকর্মীরা বলছেন, নারায়ণগঞ্জে এখণ অভিভাবকের ভুমিকায় আসতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। বর্তমান জেলা ও মহানগর বিএনপির চরম ব্যর্থতার কারনে আবারো সামনে চলে আসছে তৈমূর আলম খন্দকারের নাম। ভেঙ্গে দেয়া জেলা বিএনপির কমিটির চেয়ে তৈমূর আলমের আমলে বেশ ভালই ছিল বিএনপি। প্রতিটি কর্মসূচিতে তিনি ছিলেন সক্রিয়। রাজপথে পুলিশের লাঠি পেটা কিংবা গ্রেপ্তার হলেও পিছু হটেননি এই নেতা। তবে তার যথেষ্ট বয়সও হয়েছে। সেই অনুপাতে তিনি আবারো জেলা বিএনপির কর্ণধার হলে আগের মত দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কিনা তা নিয়েও বেশ সংশয় রয়েছে। তবে মানসিকভাবে তৈমূর আলম খন্দকার বেশ শক্ত। ইতিমধ্যে তিনি নেতাকর্মীদের সংগঠিত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রবীণ যে সব নেতা রয়েছেন তাদের মধ্যে তৈমূর আলম খন্দকারই বেস্ট নেতা এমনটাই দাবি বিএনপির তৃনমূলের। প্রবীন নেতাদের মধ্যে অধ্যাপক রেজাউল করিম যিনি অনেক আগেই রাজপথের আন্দোলন সংগ্রাম ও দলের কর্মকান্ড থেকে দূরে রয়েছেন। সংস্থারবাদী এই নেতা এখন শারীরিকভাবে ফিট নন। এক সময় জেলা বিএনপির সভাপতি পদে থেকে দাপটের সাথেই বিএনপির রাজনীতি করেছিলেন। বেশককবার বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে হয়েছিলেন এমপি। দায়িত্ব পালন করেছিলেন প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও। এক এগারোর সময় দলের বিরোধীতা করেছিলেন চরমভাবে। তারপরও ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পান এবং পরাজিতও হন। একাদশ নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাননি। তার আসনে মনোনয়ন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির রাজনীতিতে চমক নিয়ে এমপি হওয়া আসা গিয়াসউদ্দীনের রাজনীতিও কোনঠাসা। এবার তিনি মনোনয়ন পাননি। তার আসনে মনোনয়ন পান ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী। এ আসনে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন শিল্পপতি কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সদস্য মুহাম্মদ শাহআলম। বিএনপির রাজনীতিতে গিয়াসের সেই আগের দাপট এখন আর নেই। তার রাজনীতিও শেষের দিকে। তিনি চেষ্টা করছেন তাদের দুই ছেলেকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করতে। তিনিও রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন না।
বিএনপির একাধিকবার সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালামের রাজনীতিও শেষের দিকে। তিনিও শারীরিকভাবে ফিট নন। যদিও তিনি মহানগর বিএনপির সভাপতির পদে ছিলেন। তার আসনে একাদশ সাংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পান ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সাবেক এমপি এসএম আকরাম। ক্লিন ইমেজধারী এই রাজনীতিকের এখন উদ্দেশ্য তার একমাত্র সন্তান মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউসার আশাকে প্রতিষ্ঠিত করা। নতুন কমিটি হলে তিনি থাকবেন কিনা তা নিয়ে বেশ সংশয় রয়েছে।
বিএনপির সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর। তিনিও সংস্কারবাদীদের একজন। ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে কারনে তিনি দলের মনোনয়ন পাননি। তার আসনে মনোনয়ন পান তার বড় ভাই প্রয়াত বিএনপি নেতা এএম বদরুজ্জামান খান খসরু। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার আসনে মনোনয়ন পান কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ।
একইভাবে বয়সের ভারে নুব্জ ভেঙ্গে দেয়া জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির। ৯ম ও একাদশ নির্বাচনে মনোনয়ন পান কাজী মনির। এ আসনে ১/১১ এর সময় কারাগারে যাওয়ার আগে মনোনয়ন পান তৈমূর আলম খন্দকার। জেলা বিএনপির দায়িত্ব পাওয়ার পর চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন কাজী মনিনুজ্জামান মনির। তিনি একজন শিল্পপতি। যে কারনে দলের রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে কখনই ছিলেন না। সাধারণ মানুষের সঙ্গেও তিনি মিশতে পারেন না। এমনকি করোনা কালীন মহামারির সময়ে তাকে খোঁজেও পায়নি তৃনমূল নেতা কর্মীরা। তারও রাজনীতিতে বিদায় বেলা। এদিকে নবীণ রাজনীতিকদের সবচেয়ে বেশি আলোচিত নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। ২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় ব্যাপক আন্দোলন করে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক এই সভাপতি। যার ফলে ২০১৬ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে প্রার্থী করা হয় তাকে। কিন্তু মেয়র আইভীর কাছে তিনি ধুপে টিকেননি। হয়েছেন পরাজিত। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা নিয়ে কাজ করে আসলেও নির্বাচনের আগেই তিনি গ্রেপ্তার হয়ে বন্দি হন কারাগারে। জামিন পান নির্বাচনের পর। দলের প্রাথমিক বাছাইয়েও তাকে রাখা হয়নি। অধ্যাপক মামুন মাহামুদ। একজন রাজপথের সক্রিয় নেতা। তিনি ভেঙ্গে দেয়া জেলা বিএনপির সেক্রেটারি পদে ছিলেন। জাতীয় নির্বাচনে তিনি দলের প্রাথমিক মনোনয়ন বাছাইয়ে ছিলেন। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে তার ভুমিকা ছিল খুব নগন্য। দলের সেক্রেটারি পদে থাকাকালীন সময়ে তিনি দলের হাল ধরেননি। নির্বাচনে তিনি একদিনও দলের প্রার্থীর পাশে এসে দাড়াননি। জেলা বিএনপির সেক্রেটারি পদে থাকাকালীন সময়েও জেলার কোন প্রার্থীর পক্ষে তিনি ছিলেন না। তার ভুমিকা ছিল রহস্যজনক। করোনা কালীন মহামারীর সময়ে সাধারন সেতা কর্মীদের কাছ থেকে তিনি নিজেকে আড়াল করেখেছেন। এ জেলায় নবীণ রাজনীতিকদের মধ্যে বেশ আলোচিত কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুইয়া। তিনিও দলের প্রাথমিক মনোনয়ন বাছাইয়ে ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে বাদ দেয়া হয়। তিনিও দলের আন্দোলন সংগ্রাম তো দুরের কথা দলের মানববন্ধণ কর্মসূচিতেও তিনি ছিলেন না। এমনকি তার দলের নেত্রী কারাগারে যাওয়ার পর তিনি সক্রিয় হননি। বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কমিটি তার চাটুকার শ্রেণির কর্মীদের পদে বসিয়ে আনতে তিনি বেশ লবিং করেন জোড়ালো। কিন্তু কমিটি এনে দিলেও তিনি রাজনীতি করেন নির্বাচন কেন্দ্রীক।
জেলায় জিয়া পরিবারের নাম ভাঙ্গিয়ে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ। আড়াইহাজারের রাজনীতিতে তিনি থাকলেও সেখানকার বিএনপির নেতাকর্মীদের সংগঠিত করতে পারেননি তিনি। নির্বাচনে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে লবিং করে মনোনয়ন ভাগিয়ে আনলেও মাঠেই নামতে পারেননি তিনি।
এক সময়ের কেন্দ্রীয় যুবদলের নেতা মাহমুদুর রহমান সুমন। তিনিও বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন বাছাইয়ে ছিলেন। তার বাবা কেন্দ্রীয় বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি এএম বদরুজ্জামান খান খসরুর মৃত্যুর আড়াইহাজার বিএনপির নেতাকর্মীকে তাকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পদে বসান। চূড়ান্ত মনোনয়ন তিনি ভাগিয়ে আনতে পারেননি। আড়াইহাজারের বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন স্বপ্ন দেখছেন সুমনকে নিয়ে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। তার বড় ভাই তৈমূর আলম খন্দকার। খোরশেদ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোটে ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এর আগেও একই ওয়ার্ড থেকে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনেও জয়ী হন। জনপ্রিয় এই কাউন্সিলর এবার বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন বাছাইয়ে মনোনিত হন। ইতিমধ্যে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। এমনকি নারায়ণগঞ্জে করোনাকালীন মহামারি চলাকালীন সময়ে সাধারন মানুষকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। এছাড়া করোনায় মারা যাওয়া মৃত ব্যাক্তিদের দাফনের মাধ্যমে দেশব্যাপি আলোচনায় চলে আসে তার মানবিকতা। যা বিকনা এখনো অব্যাহত রয়েছে। মানব সেবায় নতুন দিগন্ত সৃষ্টিতে নজির স্থাপন করা মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ সাংগঠনিক নেতা হিসেবে নিজের যোগ্য প্রমান সক্ষম হয়েছেন। মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা স্বপ্ন দেখছেন তাকে নিয়ে।

নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!