নারায়ণগঞ্জবুধবার , ৩ এপ্রিল ২০১৯
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ

পবিত্র মি’রাজ বিশ্বাসের প্রয়োজনীয়তা

Alokito Narayanganj24
এপ্রিল ৩, ২০১৯ ৯:৪৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কামাল সিদ্দিকী : মি’রাজ ইসলামি ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা আলোড়ন সৃষ্টিকারী ও তাৎপর্যময় ঘটনা। মহানবী (সঃ) এর দীর্ঘ ৬৩ বছরের জীবনের কর্মকান্ড ও বিশ্বস্ততা চ্যালে্েঞ্জর মুখে পড়ে মি’রাজ সংক্রান্ত কারণে। বিশ্ব চরাচরে উর্দ্ধ গমনের চিন্তা নবী করিম (সঃ) এর পূর্বে কেউ করেছিলো কিনা তা গবেষণালব্ধ ব্যাপার। তাই বলা যায় যে, মি’রাজ শব্দটিই অতি আধুনিক এবং মহাকাশ গবেষণার সুতিকাগার বা বিজ্ঞান প্রযুক্তির নবদিগন্ত উম্মোচন।

মানুষ সৃষ্টি করা হয়েছে মাটি হতে। আর মাটিতেই তার বিনাশ বা লয়। এ কারণে বিশ্বের সকল জৈব -অজৈব পদার্থের সমন্বয়ে মানবদেহ সৃষ্টি। মানবদেহ তাই বস্তুগত সত্তা। যে সত্তার সীমাবদ্ধতা তাকে জড়তার বৈশিষ্ট্য দিয়ে স্থবির করে তোলে। জড়বস্তু নির্ভরশীল। চালিকা শক্তি বা ইঞ্জিন তাকে গতিশীল করে তোলে। আর মানুষকে গতিশীল করার জন্য যে সত্তা তাই হলো রুহ। রুহ অবিনশ্বর যা বিলীন হয় না। রুহ হলো হূকুম। সর্বশক্তিমান আল্লাহর হূকুম নিয়েই মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত হওয়ার উপযোগ্য হয়েছে। মানুুষের মধ্যে যে আধ্যাত্মিক চেতনা রয়েছে যা মানুষকে জড়তার বৈশিষ্ট্য হতে মুক্তি দিয়েছে । তাই জলে -স্থলে-অন্তরিক্ষ্মে মানূষের অবাধ বিচরণ। সে বিচরণ চলে মোরাকাবায়-মোশাহেদায়, চিন্তা-গবেষণায় অথবা নব আবিস্কারের ফলে।

মহানবী (সঃ) এর মি’রাজ ছিলো জড়দেহ, রূহ আর আধ্যাত্মিক চেতনার সমন্বয়ে। শারীরিক সত্তার উর্দ্ধগমন তাই বস্তুচেতনার মানুষের বোধগম্যের অন্তরায়্ । হূজুর (সঃ) এর মি’রাজের উপলব্ধি করতে হলে মহানবীর (সঃ)গোটা

জীবনকালকে বিশ্লেষণ করা দরকার। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে, একজন রোগীকে অপারেশন করার পূর্বে তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে তৈরী করে নিতে হয়। তার নানা ধরণের পরীক্ষা- নিরীক্ষা চলে। যেমন- রোগীর ওজন, তাপমাত্রা, প্রেসার, হার্টের অবস্থা ,ডায়াবেটিক্সেরমাত্রা,কিডনি পর্যবেক্ষণ রিপোর্টের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কখন অপারেশন করা হবে। নাসার নভোচারীদেরও মহাকাশ গমনের পূর্বে বিশেষভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুুত করা হয়। ঠিক মহানবী (সাঃ) মি’রাজ গমনের পূর্বে তাকে শারীকভাবে প্রস্তুতির জন্য সিনাসাফ করা হয় যা পবিত্র কুরআনে উল্লেখ রয়েছে।

ঘটনার বিশ্বাস যোগ্যতাই মানুষকে ব্যক্তিত্তে পরিণত করে থাকে। প্রশ্নসাপেক্ষ ব্যক্তির দ্বারা অস্বাভাবিক ঘটণার ক্রিয়া বিশ্বাস যোগ্য হয় না। তাই মহানবী(সঃ) এর বিশ্বাস যোগ্যতা ছিলো গোটা আরব সমাজে স্বীকৃত। তিনি ছিলেন বাল্যকাল থেকে আলামিন। শত্রু -মিত্র অবাধে তাকে আলামিন বা বিশ্বাসী বলে জানত। তার বাস্তব নমুনা দেখতে পাই যখন মহানবী(সঃ) প্রথম মক্কার সুউচ্চ পাহাড়ে দাঁড়িয়ে ইসলাম প্রচার করলেন। প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী তিনি মক্কাবাসীকে আহ্বান করে বললেন, অমি যদি বলি ,এ পাহাড়ের পশ্চাত দিকে একদল শত্রু তোমাদের আক্রমন করান জন্য ওঁত পেতে অপেক্ষা করছে ,তাহলে কী তোমরা বিশ্বাস করবে ? সকলে সমস্বরে জবাব দিলো- ‘হ্যাঁ , বিশ্বাস করব। কেন না তুমিতো আলামিন-।’ মিরাজের অস্বাভাবিক ঘটনাকে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য মহানবী(সঃ)কে আলামিন হিসাবে আল্লাহ তা’য়ালা গড়েতুলে ছিলেন ।

যুক্তি আর ভক্তির সমন্বয়ের নামই হলো ধর্ম । শুধু যুক্তির মাধ্যমে ধর্মের সকল কিছু প্রমান করা যায় না। আবার যুক্তিহীন ভক্তিরও কোন মূল্য নেই। এ বসুন্ধরায় একসময় আমরা ছিলাম না। এক শুন্যতার মাঝদিয়ে এলাম,আবার আরেক শূন্যতায় হারিয়ে যাবো। আসা আর যাওয়ার মাঝের ক্রিয়া -প্রতিক্রিয়ার নামই হলো জীবন। এ জীবন প্রাপ্তির প্রক্রিয়া আমাদের জানা-দু’জন প্রাপ্ত বয়স্ক নর-নারীর একান্তে মিলন। এরপর মাতৃজঠরে স্পাম -ওভামের মিলনের ফল জাইগট। তারপর অস্থি -মজ্জা-মাংস। একটি জীবনের অস্তিত্ব সবই আমাদের চোখের অগোচরে। লিঙ্গভেদে বিভাজন, জীবের আচরণ, জীবন কালের ব্যাপ্তি ও কর্মপন্থা নির্ণয়ে বিজ্ঞান তথা যুক্তি অসহায়।তাই বৈজ্ঞানিক নিউটনের সূত্রমতে“প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।” এই যে, আমাদের চক্ষুর অন্তরালে যে ক্রিয়া বা প্রতিক্রিয়া হয়, তার স্রষ্টাই হলেন সৃষ্টিকর্তা বা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন।যিনি সকল শক্তির আধার। তার কুদরাত এর কাছে আমাদের সকল যুক্তি হারমানতে বাধ্য।

সাভারে রানা প্লাজায় ঘটে যাওয়া ঘটনার সব কিছুকে কী আমরা যুক্তির নীরিখে পরখ করতে পেরেছি? সকল প্রশ্নের জবাব হয়ত কোন দিনও পাওয়া যাবে না। রানা প্লাজায় ঘটে যাওয়া দূর্ঘটনার দীর্ঘ সতের দিন পর রেশমা নামক এক তরুণীর বেঁচে থাকার কি বিজ্ঞান সম্মত বিশ্লেষণ থাকতে পারে বোধগম্য নয়। এখানে আমাদের চিন্তাশক্তি অসহায়, বিজ্ঞান চুপ ও যুক্তিবাদীর যুক্তি নাগালের বাইরে। ঠিক তাই মহানবী (সঃ) এর শারীরিকভাবে মিরাজ গমন সম্ভব অসীম কুদরাতে ইলাহির বিশেষ ম্যাকানিজমের মাধ্যমে। যা জাগতিক বিচার-বিশ্লেষণেবোধগম্য নয়।

সময়, গতি, আলোকবর্ষ, আপেক্ষিকতত্ত্ব ও মধ্যাকষর্ণ শক্তির হিসাব -নিকাশ তথা রাসুল(সঃ) এর সৃষ্টি রহস্য-তিনি মাটির মানুষ; না নূরের অবয়ব এ সকল আপেক্ষিক আলোচনা পবিত্র মিরাজের মুল চেতনার সক্স্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। একজন মু’মিন মুসলমানকে রাসুল (সঃ) এর মিরাজকে বিশ্বাস করতে হবে ঠিক ইমানের সাতটি বিষয়ের মত করে অদৃশ্যে বিশ্বাসের ন্যায়। কারণ পবিত্র কুরআন মিরাজকেস্বীকৃতি দিয়ে ঘোষণা করা হয়েছে- “পবিত্র ও মহিমাময় সেই সত্তা যিনি স্বীয় বান্দাকে রাতে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় ভ্রমন করিয়েছেন, যার চতুস্পার্শ্বকে আমি বরকতময় করেছি। যেন আমি তাকে আমার নিদর্শন সমূহের কিছু অবলোকন করাবো। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। [সুরা বণী ইসরাঈল আয়াত: ১]

পবিত্র মিরাজ এর বৈপ্লবিক ঘটনার মাধ্যমে বলা যায় ইসলাম ধর্মেরও পূর্ণতা দান করা হয়েছে। আর মহানবী (সঃ)কে খাতামুন্নবী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে রেসালতের সমাপ্তি ঘটানো হয়েছে । কেননা মেরাজ গমনের মাধ্যমে ইসলামী শরীয়তের অন্যতম অনুষঙ্গ নামায ফরয করা হয়েছে । এ ছাড়া নবী (সঃ) কে জান্নাত , জাহান্নাম পরিদর্শন করানো হয়েছে । সর্বোপরি মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করে আশেক- মাশুকের মতবিনিময়ের দ্বারা মহানবী (সঃ) পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে দুনিয়ায় ফিরে আসেন। যে বিশ্বাসটাই একজন ইমানদার মুসলমানকে পরকালীন চিন্তা- চেতনায় মগ্ন করতে পারে। তার ভিতর তাকওয়ার গুণ অর্জিত হয় । জীবনকালের উদ্দেশ্য খুঁজে পেয়ে মু’মিন নিজে পবিত্র মিরাজের জন্য তৈরী হয়ে থাকে। কারণ মহানবী (সঃ) বলেছেন,“–আচ্ছালাতু মিরাজুল মুমিনুন।” অর্থাৎ নামায হচ্ছে মু’মিনের মিরাজ। আর তাই হযরত(সঃ) এর শারীরিকভাবে মিরাজ গমনের বিশ্বাসই একজন মু’মিনের প্রকৃত ইমানের পরিচয়।

লেখল- কামাল সিদ্দিকী, কবি ও কলামিস্ট।

নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!