আলোকিত নারায়ণগঞ্জ :নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় যুবক দুই ছেলেকে ঘরের ভেতর লোহার খাঁচায় বন্দি রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বাবা ও সৎ মায়ের বিরুদ্ধে। দুই ছেলেকে পাগল আখ্যা দিয়ে এক বছর বন্দি রাখা হয়। আর দিনের পর দিন খাবার না দিয়ে মারধর করায় এক ছেলে মারা যান বলে অভিযোগ করেন অপর ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে ফতুল্লার দক্ষিণ রসুলপুর এলাকার হাবিবুল্লাহ ক্যাশিয়ারের ছেলে হেমায়েত হোসেন সুমনের (৩৫) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় তার অপর ছেলে সাফায়েত হোসেন রাজুকে (৩২)।
সাফায়েত হোসেন রাজুর দাবি, নোয়াখালীর একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার মা মোহসেনা বেগম মারা যান। এরপর লেখাপড়া বাদ দিয়ে তাকে ফতুল্লায় নিয়ে আসেন বাবা হাবিবুল্লাহ। এর কিছুদিন পর তার ছোট খালা কোহিনুর বেগমকে বিয়ে করেন তার বাবা। কোহিনুর বেগমও কিছুদিন পর মারা যান। পরে আরেকজনকে বিয়ে করলে তিনিও চলে যান।
এক বছর আগে হনুফা বেগম নামে একজনকে বিয়ে করেন হাবিবুল্লাহ। এরপর থেকে দুই ভাই সুমন ও রাজুর ওপর অমানসিক নির্যাতন চালানো হয়। দুই ভাইকে দুটি কক্ষে এক বছর ধরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। কখনো খাবার দেয়া হয় না আবার কখনো লাঠি দিয়ে বাবা ও সৎ মা মারধর করে।
রাজু আরও বলেন, কয়েকদিন আগে সুমনকে অনেক মারধর করা হয়। তখন আমি অনেক চিৎকার করে আশপাশের লোকজনকে ডাকাডাকি করলেও বাবা ও সৎ মায়ের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। আমি ও আমার ভাই পাগল না। আমার বাবার সম্পত্তির অর্ধেক মালিক আমার মা মোহসেনা বেগম। এই জমি বাবা ও সৎ মা আত্মসাৎ করার জন্য আমাদের পাগল আখ্যা দিয়ে ঘরে আটক রেখে নির্যাতন করতেন। বড় ভাই নির্যাতনেই মারা গেছেন।
তবে ছেলের অভিযোগ অস্বীকার করে হাবিবুল্লাহ বলেন, আমার পাঁচ ছেলে, দুজন মানসিক রোগী। অপর তিনজন লেখাপড়া করে। অসুস্থ দুই ছেলেকে চিকিৎসা করিয়েছি অনেক। বড় ছেলে অসুস্থ হয়েই মারা গেছে।
টনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফজলুল হক বলেন, মৃতের শরীরের পেছনে পচন ধরেছে। আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, অপরজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে তার বাবা হাবিবুল্লাহর কাছে রাখা হয়েছে এবং তাকে যেন আর বন্দি রাখা না হয় সে বিষয়ে কঠোরভাবে বলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন........