নারায়ণগঞ্জশুক্রবার , ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ

বিজয় দিবস বিশ্বের বুকে স্বাধীন জাতি হিসেবে বাঙালির মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর দিন

Alokito Narayanganj24
ডিসেম্বর ১৫, ২০২৩ ৭:১২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মো. মনির হোসেন: মহান বিজয় দিবসের এই দিনে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি বিজয়ের মহানায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যার জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ।

বাঙালি জাতির ইতিহাস হাজার বছরের পরাধীনতার ইতিহাস। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ভারতীয় উপমহাদেশ স্বাধীন হলেও এ ভূ-খন্ডের বাঙালির স্বাধীনতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার তথা মুক্তি আসেনি।

১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্তে¡র ভিত্তিতে ভারত বিভক্ত হয় এবং পূর্ব বাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তান নিয়ে পাকিস্তান নামে একটি রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। তখন থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী রাষ্ট্র পরিচালনার নামে বাঙালি জাতির ওপর চেপে বসে।

ফলে বাঙালি জাতির ওপর শুরু করে শাসন-শোষণ, লাঞ্ছনা-বঞ্চনা, অত্যাচার-নির্যাতনের খড়্গ। সর্বক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি হয়। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী প্রথমে আঘাত হানে মাতৃভাষা বাংলার ওপর। দিনের পর দিন বাঙালির ওপর অত্যাচার-নির্যাতন ও শোষণের মাত্রা বাড়াতে থাকে পশ্চিম পাকিস্তানি বর্বর শাসকগোষ্ঠী।

এ শাসন-শোষণ ও সীমাহীন নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে মুক্তির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে বেগবান করেন ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন। ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়লাভ, ’৫৬-এর সংবিধান প্রণয়নের আন্দোলন, ’৫৮-এর মার্শাল ল’বিরোধী আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-এর বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফার আন্দোলন, ’৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্রের মামলা, ’৬৯-এর রক্তঝরা গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করার পরও পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করে।

ফলে নির্বাচনী এ জয় অবধারিতভাবে বাঙালিকে মুক্তির জন্য উন্মুখ করে তোলে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে যে বীজ বপিত হয়, তা ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয়ে রূপ নেয়। ফলে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মধ্য দিয়ে বাঙালি পশ্চিমা শাসক চক্রের নাগপাশ থেকে মুক্তিলাভ করে, স্বাধীন ও সার্বভৌম জাতিতে পরিণত হয়।

সর্বস্তরের মুক্তিপাগল মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্তু কতিপয় মানুষ যারা জাতির কুলাঙ্গার সন্তান হিসেবে চিহ্নিত, তারা পাকহানাদার বাহিনীর পক্ষ নেয় এবং তাদের দোসর হয়ে রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী গঠন করে পাকহানাদার বাহিনীর সঙ্গে গণহত্যা, অত্যাচার-নির্যাতন, নারী নির্যাতন ও ধ্বংসযজ্ঞে মেতে ওঠে।

স্বাধীনতার প্রাক্বালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর আলবদর, আলশামসরা যখন তাদের পরাজয় চূড়ান্ত পর্যায়ে বুঝতে পারে, তখন জাতির সূর্যসন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি বাহিনীর ৯১,৬৩৪ জন সেনাসদস্য বাংলাদেশ ও ভারতের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। এর ফলে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের অভ্যুদয় ঘটে। এ মহতী অর্জনে রয়েছে ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান আর ২ লাখ মা-বোনের সমভ্রম।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর চক্রান্তে কিছু বিপথগামী সেনাসদস্য নির্মমভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে এ দেশে শুরু হয় হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি; বন্দুকের নলে ক্ষমতা দখলের পালা, ইতিহাস বিকৃতির রাজনীতি।

ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার অপচেষ্টা চালানো হয়। ’৭৫-পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার করতে দেয়া হতো না। বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করা হতো না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচার করা থেকে বিরত রাখতে ব্যবহার করা হতো প্রশাসনযন্ত্রকে। কেউ ভাষণ প্রচার করলে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হতো। চালানো হতো অত্যাচার-নির্যাতনের স্টিম রোলার।

বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসার পর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন উন্নয়নের মহাসড়কে। দেশে শিক্ষার হার বেড়েছে, দারিদ্র্যের হার কমেছে, শিক্ষা ও কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে, নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে।

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে; বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে। জাতির সম্মুখে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা হচ্ছে। মাতৃমৃত্যু ও নবজাতকের মৃত্যু হার কমেছে। ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশে করোনা মহামারীও প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সফলভাবে মোকাবেলা করা হচ্ছে।

বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত বাংলার গ্রামগুলো শহরে রূপান্তরিত হচ্ছে। যে বিশ্বনেতারা একসময় (স্বাধীনতা উত্তরকালে) আমাদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে বলতেন ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’, আজ তারাই বলেন বিস্ময়কর উত্থানের এক অপূর্ব বাংলাদেশ। আর এ বিস্ময়কর উত্থানের মহান নেত্রী হলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন- ‘আমার দেশের জনগণই আমার জীবন, আমি তাদের মুখে হাসি ফোটাতে চাই, আমি তাদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে চাই, আমি সোনার বাংলা গড়তে চাই।’ এ মহান ব্রত বুকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা আজ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।

আজ মহান বিজয় দিবসে বিজয়ের মহানায়ক বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ৩০ লাখ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। মাগফিরাত কামনা করছি জাতীয় চার নেতার বিদেহী আত্মার প্রতি।

লেখকঃ কলামিস্ট, সাংবাদিক

 সাধারণ সম্পাদক ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাব।

নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!