আলোকিত নারায়ণগঞ্জ: প্রিয় তারকা সাকিব আল হাসানকে ভালোবেসে ফুল দিতে মাঠে প্রবেশ করেছিলেন এক ভক্ত। যদিও তার এমন আচরণটি ছিল নিরাপত্তার বিষয়টি তোয়াক্কা না করেই। যেখানে সফররত দলগুলোকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয় বিতর্ক এড়ানোর কৌশল হিসেবে। সেখানে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে স্টেডিয়ামের কড়া এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। শঙ্কা জাগানিয়া এমন আচরণে ভক্তের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিসিবি।
চট্টগ্রামের এনায়াত বাজারের বাসিন্দা ফয়সাল আহমেদ। পেশায় ফুল বিক্রেতা। শুক্রবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের ম্যাচের ১০৭তম ওভারে পূর্বগ্যালারিতে নিরাপত্তার ফাঁক গলে মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন। এরপর এক দৌড়ে সোজা চলে যান বল করতে থাকা সাকিবের কাছে। গিয়েই সাকিবকে স্যালুট দেন। তারপর হাঁটু গেড়ে সাকিবের দিকে হাতে থাকা গোলাপটি বাড়িয়ে দেন তিনি।
সাকিব অবশ্য অপ্রত্যাশিত এমন ঘটনায় শুরুতে একটু হতচকিত ছিলেন। পরে ফয়সালের ভালোবাসার প্রতিদান দেন ফুলটি গ্রহণ করে। তবে ফুল দিয়েও ক্ষান্ত হননি ফয়সাল। সাকিবের সঙ্গে কোলাকুলি করতে জবরদস্তি করতে থাকেন। এতে অনীহা ছিল সাকিবের। কিন্তু নাছোড়বান্দা ভক্ত বার তিনেক চেষ্টা করলেন তাকে বাগে আনতে। শেষ পর্যন্ত সাকিব সায় দিলে তার সঙ্গে সঙ্গে কোলাকুলি শান্ত করেন ফয়সালকে। এরপর নিরাপত্তা কর্মীরা সেই ফয়সালকে ধরে নিয়ে আসেন মাঠের বাইরে।
তার পরে ফয়সালকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যায় বিসিবির নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীরা। সন্দেহজনক মনে হওয়াতে তার দেহ তল্লাসী করলেও মানিব্যাগে একশো টাকা ছাড়া আর কিছু পাননি তারা। এ সময় ফয়সালকে ব্যাপক মারধরের অভিযোগ উঠলেও তা অস্বীকার করেছে বিসিবির নিজস্ব নিরাপত্তাবাহিনী।
এদিকে সাকিব ভক্তের এমন কর্মকাণ্ডের পর পাহাড়তলী থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিসিবি। বিসিবির নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান মেজর (অব.) হোসেন ইমাম আরও জানিয়েছেন গ্যালারিতে দায়িত্ব পালনরত সেই এসআইকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে, ‘এই মুহূর্তে ওই ছেলে পাহাড়তলী থানায় আছে। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিষয়টিকে হালকাভাবে নিচ্ছি না আমরা। হয়তো কিছু ঘাটতি ছিল, পরবর্তী দিন থেকে এ ব্যাপারে আমরা সচেতন থাকবো। এছাড়া পূর্ব গ্যালারিতে দায়িত্ব পালন করা এসআই মান্নানকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।’
নিজের কৃতকর্মের ভুল বুঝতে পেরে অনুশোচনা আছে ফয়সালের। ভবিষ্যতে এমন আর করবেন না বলে জানিয়ে বলেছেন, ‘আমাকে মাফ করে দেন। আমি ভুল করেছি।’
তবে নিরাপত্তা বলয় ভঙ্গটা যে অপরাধ ছিল তা স্বীকার করেছেন তিনি, ‘আমার ভুল হয়েছে, ছেড়ে দেন। আমি আর এমনটি করবো না।’
স্টেডিয়ামের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রামের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এএএম হুমায়ুন কবির বলছিলেন, ‘ছেলেটাকে ছেড়ে দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড মামলা করায় সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর পুলিশের পক্ষ থেকেও নিরাপত্তা ভাঙার অপরাধে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়ায় যাওয়া হচ্ছে। তাকে আদালতে তোলা হবে।’
আপনার মতামত লিখুন........