নিজস্ব সংবাদদাতা: নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি কক্ষ থেকে সাংবাদিক ইলিয়াস হত্যা মামলার প্রধান আসামির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা কারাগারের কর্নফুলী ভবনের ছয়তলার ৫ নম্বর কক্ষ তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মারা যাওয়া মো. তুষার ২০১৮ সালে সাংবাদিক ইলিয়াস হত্যা মামলার প্রধান আসামি। ২০২০ সাল থেকে তিনি এ কারাগারে ছিলেন।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সন্ধ্যার সময় কয়েদি ও হাজতিদের যার যার কক্ষে চলে যেতে হর্ন বাজানো হয়। তারপর গণনা করা হয়। ঘটনার সময় যমুনার একটি ওয়ার্ডে একজন হাজতির সংখ্যা কম পাওয়া গেলে তার খোঁজ শুরু করেন কারাগারে অফিসরারা। মাইকিং করে যখন তার খোঁজ মিলছিল না। তখন প্রতিটি ভবনের শুরু হয় তল্লাশি।
জেলা সুপার বলেন, এ সময় কর্ম কর্নফুলী ভবনের একটি খালি কক্ষের পাওয় যায় তুষারকে। তিনি দরজার আড়ার সঙ্গে চাদর ছিঁড়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে ছিলেন। তখন দ্রুত তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কারা প্রধান মোকাম্মেল হোসেন বলেন, সাধারণত ওই ভবনের চারতলা পর্যন্ত কয়েদি থাকে। ছয়তলা প্রায় খালি থাকে, আর পাঁচ নম্বর কক্ষ ফাঁকা পেয়ে সেখানে ঢুকে যান তুষার। এরপর ঘটনা ঘটান।
জেলার বলেন, সাংবাদিক ইলিয়াস হত্যা মামলার ২০২০ সালে এ কারাগারে আসেন আসামি তুষার। থাকতেন যমুনার একটি ওয়ার্ডে। কিছুদিন ধরে তিনি কারাগারের মসজিদে নিয়মিত নামাজ পড়তেন। এমনকি তাহাজ্জুদ নামাজও বাদ দিতেন না। প্রায় সময় অন্য হাজতিদের কাছে দোয়া চাইতেন।
তিনি বলেন, তিন দিন তুষার তার মায়ের সঙ্গে কথা বলে দোয়া চেয়েছে বলেও জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, মামলার বিচার শেষের দিকে হওয়ায় তুষার পরিকল্পতিভাবে আত্মহত্যা করেছেন। এখন কেউ যদি পরিকল্পিতভাবে আত্মহত্যা করেন তাহলে সেটি রোধ করা কঠিন।
মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে জানায় কারা কর্তৃপক্ষ।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালে মাদক বিক্রিতে বাধা দেওয়ায় শামীম নামে এক যুবকের সঙ্গে তুষারের ঝগড়া হয়। সেসময় তুষার লাঠি দিয়ে শামীমের মাথায় আঘাত করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
অভিযোগ রয়েছে, এ ঘটনায় শামীম তুষারের বিরুদ্ধে মামলা করলে স্থানীয় সাংবাদিক ইলিয়াস উসকানি দিয়েছিলেন বলে ধারণা করে তুষারসহ কয়েকজন মিলে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন সাংবাদিক ইলিয়াসকে।
এ ঘটনায় নিহত সাংবাদিক ইলিয়াসের স্ত্রী বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় হত্যা মামলা করেন। সেই মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয় তুষারকে।
আপনার মতামত লিখুন........