মো. মনির হোসেন: নতুন বছর কড়া নাড়ছে দরোজায়, শেষ হতে চলল ২০২৩। অনেক প্রাপ্তি ও সফলভার পাশাপাশি ২০২৩-এ রয়েছে কিছু হারানোর ক্ষতও। এ বছর চিরবিদায় জানাতে হয়েছে বেশ কয়েকজন কীর্তিমান আলোকিত মানুষকে, যারা একসময় তাদের প্রতিভার দ্যুতি গড়িয়ে আলোকিত করেছেন রাজনীতির মাঠ কিংবা শিল্পাঙ্গন। বছর শেষে পেছন ফিরে তাকানোর এই আয়োজনে শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি তাদের সমরেশ মজুমদার ‘উত্তরাধিকার’, ‘কালবেলা’, ‘কালপুরুষ’সহ বহু জনপ্রিয় উপন্যাসের স্রষ্টা সমরেশ মজুমদার চলে গেছেন এ বছরই। কোটি সাহিত্যপ্রেমী কিংবা ভক্ত-অনুরাগীদের কাঁদিয়ে এ বছরের ৮ মে ৮১ বছর বয়সে পরপারে পাড়ি জমান তিনি। শহরকেন্দ্রিক জীবনের আলেখ্য বারবার উঠে এসেছে তার লেখায়। যে কারণে ভাকে আপাদমস্তক ‘আরবান’ লেখক বলে অনেক সময় বর্ণনা করা হয়।
তিনি ১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কার, সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক বঙ্গবিভূষণসহ নানান সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। কিংবদন্তি এ সাহিত্যিকের অন্যান্য বিখ্যাত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে-দৌড়, গর্ভধারিণী, অর্জুন সমগ্ন, সাতকাহন, ছায়া পূরগামিনী, স্বপ্নের বাজার, অনুরাগ, ভেরো পারুণ, সহজপুর কভদূর, সূর্য ঢলে গেলে, আট কুঠুরি নয় দরজা, আমাকে চাই, কেউ কেউ একা প্রভৃতি।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাভা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মারা গেছেন এ বছরের ১২ এপ্রিল। নির্মোহ, নির্লোভ, পরোপকারী এই মানুষটি ৮১ বছর বয়সে নিজের গড়া গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইহলোক ভ্যাগ করেন। তিনি দীর্ঘদিন কিডনি জটিলভায় ভুগছিলেন। আফরুল্লাহ চৌধুরী নাগরিক অধিকার আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন। অসুস্থ শরীরেও তিনি নাগরিকদের বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকারের পক্ষে নিয়মিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিভেন। জাফরুল্লাহ চৌধুরী একজন ভাস্কুলার সার্জন। ভিনি মূলত জনস্বাস্থ্য চিন্তাবিদ। ১৯৮২ সালের ওষুধনীতি দেশকে ওষুধে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করে, ওই নীতি প্রণয়নের অন্যভম কারিগর দিলেন আফরুল্লাহ চৌধুরী। বহিব্রিয়ে তার পরিচয় বিকল্প ধারার স্বাস্থ্য আন্দোলনের সর্মখক ও সংগঠক হিসেবে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে। ভার বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। মা হাছিনা বেগম চৌধুরী ছিলেন গৃহিণী। মা-বাবার ১০ সন্তানের মধ্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন সবার বড়।
কথাসাহিত্যিক পাল্লা কায়সার আগস্টটা সত্যিই শোকের মাস। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শামসুর রাহমান, তারেক মাসুদকে হারানো এই আগস্ট মাসেই এ বছর হারাতে হয়েছে কথাসাহিত্যিক পাল্লা কায়সারকে। ২০২৩-এর ৪ আগস্ট ৭৩ বছর বয়সে মারা শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের স্ত্রী পান্না কায়সার। সাহিত্য ও রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন এ সাংবাদিক-লেখক। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে ২০২১ সালে মর্যাদাপূর্ণ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন পান্না কায়সার। তার গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে- মুক্তিযুদ্ধ: আগে ও পরে, নীলিমায় নীল, হৃদয়ে বাংলাদেশ, অন্য কোনোখানে, তুমি কি কেবলি ছবি, রাসেলের যুদ্ধযাত্রা, সুখ, না চুনি না পান্না প্রভৃতি। কবি আসাদ চৌধুরী কাঁধে ঝোলা, পান খাওয়া লাল ঠোঁট। স্মিত হাসিমাখা মুখে জর্দার ম-ম ঘ্রাণ। ঢিলেঢালা রঙিন শার্ট বা পাহাবি ছাড়া খুব একটা দেখা যায়নি মাটি ও মানুষের কবি, প্রেম ও প্রতিবাদের কবি আসাদ চৌধুরীকে। কথা বলতেন শুদ্ধ বাংলায়। সহজ-সরল মেদহীন অকৃত্রিম ভাব ও ভাষা ছিল কণ্ঠে। তবে কখনোই ভাষায় বরিশালের আঞ্চলিকভাকে উপেক্ষা করতে দেখা যায়নি তাকে। মানুষের জন্য নির্মোহ ভালোবাসা ছিল কবির। কবিভাকে তিনি ভেবেছেন সুন্দরের মিনার ও মন্দির। সৌন্দযের টানে ছুটেছেন দেশ-দেশান্তর। যাপন করেছেন শত-সহস্র আচ্ছন্ন কবিতা-প্রহর। শব্দের রহস্য আর জীবনের বিচিত্র রসিকতাকে লালন করে চলছিলেন ‘ভবক দেওয়া পান’-এর কবি আসাদ চৌধুরী।
চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক মূল নাম আকবর হোসেন পাঠান। তবে ফারুক নামে অধিক পরিচিত ছিলেন এই চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ। অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগীদের কাঁদিয়ে এ বছরের ১৫ মে ৭৪ বছর বয়সে তিনি পরপারে পাড়ি জমান। এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড়পর্দায় আসেন নায়ক ফারুক। অভিনয়ের জন্য ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৬ সালে ভূষিত হয়েছেন আজীবন সম্মাননায়। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে সারেং বৌ, নাঠিয়াল, সুজন সখী, নয়নমনি, মিয়া ভাই, গোলাপী এখন ট্রেনে, সাহেব, আলোর মিছিল, দিন যায় কথা থাকে ইভ্যাদি। ফারুক ১৮ আগস্ট ১৯৪৮ সালে কালীগঞ্জ উপজেলা, গাজীপুর জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আজগার হোসেন পাঠান। তার শৈশব-কৈশোর ও যৌবনকাল কেটেছে পুরান ঢাকায়। পাঁচ বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট।
কবি মোহাম্মদ রফিক দুই হাজার ভেইশ যেন বিষেজ্ঞরা বছর। তেইশের ৬ আগস্ট বিশিষ্টি কবি মোহাম্মদ রফিক মারা যান। বরিশাল থেকে ঢাকা ফেরার পথেই ৮০ বছর বয়সে চলে যান বাংলাদেশের প্রথিতযশা ও কবি। একজন মননশীল আধুনিক কবি হিসাবে পরিচিতি পাওয়া কবি মোহাম্মদ রফিকের জন্ম ১৯৪৩ সালে, বাগেরহাটে। পেশা জীবনে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন। কবি হিসাবে ১৯৬০-এর দশকের শুরু থেকেই পরিচিতি পেতে থাকেন রফিক মোহাম্মদ। সৈয়দ আবুল হোসেন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, রাজনীতিবিদ সৈয়দ আবুল হোসেনও চলে গেছেন দুই হাজার তেইশেই। সৈয়দ আবুল হোসেন ১৯৫১ সালে মাদারীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পেশায় একজন রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী। আবুল হোসেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে মাদারীপুর-৩ আসন থেকে ১৯৯১ সালে সক্ষম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর তিনি সপ্তম, অষ্টম ও নবম সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছেন। কবি মলয় রায়চৌধুরী দুই শতাধিক গ্রন্থের লেখক ও কবি মলয় রায়চৌধুরী ইহলোক ত্যাগ করেছেন এই তেইশেই। তিনি ৮৪ বছর বয়সে ২০২৩-এর ২৬ অক্টোবর মুস্তাইয়ে শেষ নিশ্বাস ভ্যাগ করেন।
মলয় রায়চৌধুরী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, অনুবাদক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী এবং সত্ত্বোপরি ১৯৬০-এর দশকের হাংরি আন্দোলন-হাংরিয়ালিজম তথা বাংলা সাহিত্যে প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার জনক। এ কারণে ১৯৬০-এর দশক থেকেই ব্যাপক পাঠকগোষ্ঠীর দৃষ্টি আকষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। গভানুগতিক চিন্তাধারা সচেতনভাবে বর্জনের মধ্য দিয়ে তিনি বাংলা সাহিত্যে উত্তর আধুনিকতাবাদ চর্চা এবং প্রতিষ্ঠানবিরোধী আন্দোলন শুরু করেন। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ, আইনজীবী ও তত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনও মারা গেছেন এ বছরের শেষের দিকে, ৯ ডিসেম্বর। তিনি ২০০৭ সালে গঠিত ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে গঠিত তত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে তথ্য, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং ভূমি মন্ত্রণালয় এর দায়িত্ব পালন করেন। মইনুল হোসেন ১৯৪০ সালের ৩১ জানুয়ারিতে জন্মগ্রহণ করেন। বিখ্যাত সাংবাদিক তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ভার পিতা এবং মাজেদা বেগম তার মাতা। ঢাকার নবাবপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন। তিনি ১৯৬১ সালে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তারপরে মিডল টেম্পল এ আইন বিষয়ক পড়াশোনা করেন। ১৯৬৫ সালে বার থেকে ব্যারিস্টার-ইন-ল ডিগ্রি অর্জন করেন এবং একই বছর ডিসেম্বরে ঢাকা হাইকোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন।
ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার নাজমূল হুদাও মারা গেছেন দুই হাজার ভেইশের ১৯ ফেব্রুয়ারি। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার, আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ। ১৯৪৩ সালের ৬ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন নাজমুল হুদা। ২০১২ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেন। নাজমুল হুদা বাংলাদেশ সরকারের যোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন। নাজমুল হুদা জিয়াউর রহমান গঠিত জাগদলে যোগদান করেন। ১৯৭৮ সালে গঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও দলের সত্ত্বকনিষ্ঠ স্থায়ী সদস্য ছিলেন। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি তথ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। নাজমুল হুদা বিএনপি সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সালের ১০ আগস্ট নাজমুল হুদা ও আবুল কালাম মিলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট (বিএনএফ) নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন। কিন্তু কয়েক মাস পরে আবুল কালাম কর্তৃক বিএনএফ থেকে বহিষ্কার হন। ২০১৪ সালের ৭ মে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জোট নামে একটি জোট গঠন করেন। এবং ২১ নভেম্বর তিনি বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি নামে দল গঠন করেন। ২০ নভেম্বর ২০১৫ সালে হুদা তৃণমূল বিএনপি নামে আরও একটি নতুন দল গঠন করেন।
মার্কিন ভিসানীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বছর বিদায়ী বছরে কূটনৈতিক পাড়ায় সবচেয়ে আলোচিত বিষয় দিল মার্কিন ভিসানীতি। সেই ভিসানীতি মোকাবিলা করার চ্যালেঞ্জ নিয়েই বছর সমাপ্তির পথে। পাশাপাশি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে। প্রধান রাজনৈতিক দল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারি উচ্চপদগ্বদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে ভিসানীতি ও নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা। বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বিবৃত্তি-বক্তব্যও শেষ দিকে হয়ে উঠেছে আলোচ্য বিষয়। ২০২৩ সালে মার্কিন ভিসানীতির ফলে অনেক শ্রেণি-পেশার মানুষই রযেছেন আতঙ্কে। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের বাধা-বিমের ঘটনায় অনেকেই নিজেদের দূরে রাখাকে বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছেন। নতুন বছরের শুরুর দিকে নিত্রিম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। কূটনীতিকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ-বিএনপি বা বাংলাদেশের জন্য ভিসানীতি কোনো সুখবর নয়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘ বাণিজ্য সম্পক, বিনিযোগ ও রেমিট্যান্স ঘিরে সম্পর্ক রয়েছে। ফলে এ দেশটি থেকে এমন নিযেযাক্তা বাংলাদেশের জন্য সম্মানজনক নয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্রিঙ্কেন গত ২৪ মে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নিম্নাচন অনুষ্ঠানে সহায়তার লক্ষ্যে নতুন ভিসানীডি ঘোষণা করেন। গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করে এমন বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি র্র্কমকর্তা, সরকার ও বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, বিচার বিভাগের সদস্য, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। গণতান্ত্রিক নির্ববাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার অর্থ হলো- ভোট কারচুপি, ভোটারকে ভয়ভীতি দেখানো, শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে বাধা, রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ, মিডিয়াকে মতপ্রকাশে বাধা দেওয়া। এসব কর্মকাণ্ডের জন্যও ভিসানীভির প্রযোগ হতে পারে। অর্থনীতি ২০২৩ সালের পুরোটা সময় সংকটের মধ্য দিয়ে গেছে দেশের অর্থনীতি। শুরুতে মূলাস্ফীতির চাপ কিছুটা কম থাকলেও সাঝামাঝি সময় এসে পারদ চড়া হয়। সেই পারদ ক্রমেই উধ্বমুখী হয়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদ হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার পদক্ষেপ নেয়। যে কারণে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে। সরকার আশা করছে এটি আরও কমে আসবে। তবে মূল্যস্ফীতিই যে এখন অ’গনীভির প্রধান চ্যালেঞ্জ সে বিষয়ে কারও সন্দেহ নেই। নানা প্রণোদনা ও সরকারের সময়োচিত নীতি-সহায়তার কারণে কোভিড-পরবর্তী অর্থণীতি ঘুরে দাঁড়ায়। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অর্থনীতি অস্থির হতে থাকে। সব সূচক নিম্নমুখী হয়। দেখা দেয় উচ্চ মূল্যস্ফীতি, কমে টাকার মান, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ প্রতি মাসে কমতে থাকে আশঙ্কাজনকভাবে। ডলারসংকট প্রকট আকার ধারণ করে।
ফলে বছরজুড়ে চাণে থাকে অর্থনীতি। ২০২৩ সালে একদিকে অর্থনীতিতে দেখা দেয় মন্দার প্রভাব। অন্যদিকে ছিল মূল্যস্ফীতির চাপ। সেই সঙ্গে নির্বাচনের বছর হওয়াতে রাজনৈতিক সহিংসতা অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে তোলে। মন্দার মধ্যে বেসরকারি বিনিযোগ ছিল না বললেই চলে। কমে যায় আমদানি। শিল্পের মূলধনি যন্ত্রাংশের আমদানি কমেছে। ফলে উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হয়। বেড়েছে বেকার মানুষের সংখ্যা। অন্যদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে কমে যায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতা। এছাড়া বিভিন্ন আলোচিত ইস্যুতে রিট ও রায়ের কারণে মানুষের দৃষ্টি ছিল উচ্চ আদালতের দিকে। মাকে অভিভাবকের স্বীকৃতি দিয়ে হাইকোর্টের যুগান্তকারী রায় বিদায়ী বছরের শুরুতে ২৪ জানুয়ারি শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন স্তরে শিক্ষার্থীর তথ্য সংক্রান্ত ফরম (এসআইএফ) সংশোধনের মাধ্যমে ‘বাবা’ অথবা ‘মা’ অথবা আইনগত অভিভাবকের নাম যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এ রায়ের ফলে তিনজনের যেকোনো একজনের নাম দিয়ে শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ করা যাবে। সব ফরম সংশোধনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সব শিক্ষাবোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে রায়ে। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার (এসএসসি) পর্যায়ে বাবার নাম না দিয়ে মায়ের নাম দিয়ে রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণের সুযোগ নিয়ে ১৪ বছর আগে করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আবেদনকারীদের আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা বলেন, এই রায়ের ফলে মায়ের অধিকারও আংশিক প্রতিষ্ঠিত হলো। আর মা-বাবার পরিচয়হীন যেকোনো শিশুর শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত হলো। ‘বাবার পরিচয় নেই, বন্ধ হলো মেয়ের লেখাপড়া’ শিরোনামে ২০০৭ সালের ২৮ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও নারীপক্ষ ২০০৯ সালে ওই রিট করে। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৩ আগস্ট রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায় দেওয়া হয়। নানান ঘটনায় বর্ণিল ছিল এ বছরটিও। বছরের বিভিন্ন সময়ে নানান বক্তব্যে আলোচিত-সমালোচিভ ছিলেন মন্ত্রিসভার পাঁচ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। লিপস্টিক ‘ভম’ দিয়ে আলোচিত বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির ২০২৩ সাল খুব একটা ভালো যায়নি। উল্টো স্রোতে গিয়ে ‘মন্ত্রীদের সিন্ডিকেট’ ও বেসামাল বাজার নিয়ে বক্তব্য দিয়ে অনেকের প্রশংসা কুড়ালেও সহকর্মীদের সমালোচনা সইতে হয়েছে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারকে। বক্তব্যে ‘জান্নাত-জাহান্নাম’ বিভ্রাটের কারণে অনেক বড় মূল্য দিতে হয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনকে। বছরজুড়েই নানান বক্তব্যে আলোচনায় ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে বছরের শেষে ‘বিএনপি’ নিয়ে দেওয়া বক্তব্য বেশ ভোগাচ্ছে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাঙাককে। ২০২৩ সালে দেশের সর্ব্বোচ্চ আদালতের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগ থেকে বেশ কয়েকটি আলোচিত রায়, আদেশ, পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত এসেছে। এছাড়া বিদায়ী বছরে উচ্চ আদালতের মন্তব্যে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বছর শুরু থেকেই বিভিন্ন আদালতে বিচারকদের সাথে খারাপ আচরণের জেরে দেশের বেশ কয়েকটি জেলার আইনজীবী নেতাকে তলব করে কঠোরভাবে ভর্ৎসনা করেন হাইকোর্ট। ‘দেশটাকে জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন’ অবসরের আগে এক বিচারপতির এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। মাকে অভিভাবকের স্বীকৃতি দিয়ে রায়, স্বয়ং বিচারককে এক মাসের সাজা দিয়ে হাইকোর্ট বিরল নজির সৃষ্টি করে। র্যাব হেফাজতে নারী মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন, হিন্দু নারীদের ডিভোর্সের অধিকার দিতে রুল, রাষ্ট্রপতি নিয়োগ নিয়ে রিট খারিজ করে রিটকারীকে লাখ টাকা জরিমানা, বিনামূল্যে চিকিৎসা নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা, দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে জাতীয় সংসদকে হাইকোর্টের ১৬ পরামর্শ, কোম্পানি আইন সংশোধন ও যুগোপযোগী করতে হাইকোর্টের রায়, দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে রায়, রাজনীতিবিদরা সমাজের রক্ষক, ভক্ষক হতে পারে না, বলে হাইকোর্টের মন্তব্য, ধারাভাষ্য থেকে ওয়াকার ইউনিসের নাম প্রত্যাহারে রুল, পটুয়াখালীর দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ, মুচলেকা দিয়ে শিশু বক্তার জামিন, ইভ্যালির প্রকৃত পাওনাদাররা অর্থ ফেরত পাবেন বলে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, বিচারপতিকে নিয়ে কটূক্তির কারণে বিএনপি নেতা হাবিবকে ৫ মাসের সাজা, বিএনপির শীর্ষ ৭ আইনজীবীকে তলব, আদালত অবমাননার কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সচিব ও আইজি প্রিজন্সকে তলব বিদায়ী বছরের উচ্চ অন্যতম আলোচিত ঘটনা। ২০২৩ সালের অদ্ভুত ৫ বিশ্বরেকর্ড গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন মানুষ। মানুষ। যারা তাদের বিভিন্ন প্রতিভা দিয়ে নিজেদের নাম ভুলছে রেকর্ড বুকে। সম্প্রতি গিনেস বুক অব ওয়াল্ড রেকর্ড ২০২৩ সালের সবচেয়ে আশ্চর্যজনক পাঁচটি রেকর্ডের ভালিকা প্রকাশ করেছে। সেই তালিকায় আছেন সবচেয়ে ছোট হাতের পুরুষ, সবচেয়ে লম্বা দাড়িওয়ালা নারী, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় কিডনি স্টোন, দুই মিটার লম্বা চুলের একজন ভারতীয় নারী এবং ৩৮টি দাঁত নিয়ে রেকর্ড করা ভারতের কল্পনা বালানের নাম। আসুন জেনে নেওয়া যাক এদের সম্পর্কে- সবচেয়ে ছোট হাতের পুরুষ বিশ্বের সবচেয়ে খাটো মানুষ, আফশিন গাদেরজাদেহ (ইরান), সবচেয়ে ছোট হাতের (পুরুষ) জন্য দ্বিতীয় গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের যেভাব পেয়েছেন। মাঝারি আঙুলের ডগা থেকে ভালুর নিচে ক্রিজ পর্যন্ত যেখানে করি শুরু হয় সেখাঙ্কার মাপ নেওয়া হয়েছে। ভার বাম হাভটি ৬.৭ সেমি (২.৬৩ ইঞ্চি) এবং তার ডান হাত ৬.৪ সেমি (২.৫১ ইঞ্চি)। যা গড় প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় প্রায় তিনগুণ ছোট। সবচেয়ে বড় কিডনি পাথর ৩.৩৭ সেমি (৫.২৬ ইঞ্চি) দৈঘ্য এবং ১০.৫৫ সেন্টিমিটার (৪.১৫ ইঞ্চি) প্রশ্নে এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা বৃহত্তম কিডনি পাথর। এটি শ্রীলঙ্কার ৬২ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক ক্যানিস্টাস কুংহের কিডনি থেকে অপসারণ করা হয়েছিল। সবচেয়ে লম্বা দাডি নারীর ইরিন হানিকাট (ইউএসএ) একজন নারী দীর্ঘতম দাড়ি রেখে বিশ্বরেকর্ড গড়েন। যার পরিমাপ ৩০ সেমি (১১.৮১ ইঞ্চি)। ইরিন, যিনি দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে দাড়ি বাড়াচ্ছেন। ১৩ বছর বয়সে তার মুখের চুল লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার ফলে ইরিন দিনে তিনবার পর্যন্ত শেভ করতেন। কয়েক বছর আগে তার পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম দেখা দেয়। যা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করে এবং এর ফলে অতিরিক্ত চুল বৃদ্ধি, অনিয়মিত মাসিক, ওজন বৃদ্ধি এবং বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে। মূলভ এ কারণেই ইরিনের দাড়ি পুরুষের মতো ঘন ও লম্বা হতে থাকে। যা ভাকে বিশ্বরেকর্ডের শেভাব এনে দেয়। ৩৮ দাঁত নিয়ে বিশ্বরেকর্ড নারীর ২৬ বছর বয়সী কল্পনা বালানের মুখে সাধারণ প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে ছয়টি দাঁত বেশি থাকায় তিনি বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন। ভারতের এই নারীর মুখে ৩৮টি দাঁত রয়েছে। যেখানে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মুখে ৩২টি দাঁত থাকে। বাস্তবের রুপাজেল, সবচেয়ে লম্বা চুল ভারতের উত্তর প্রদেশের স্মিভা শ্রীবাস্তব চুলের দৈর্ঘ্য ২৩৬.২২ সেমি (৭ ফুট ৯ ইঞ্চি)। ৪৬ বছর বয়সী স্মিতা ১৪ বছর বয়স থেকে ভার চুল লম্বা করছেন। তিনি তার মাযের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। এছাড়া স্মিতা ১৯৮০ এর দশকের হিন্দি অভিনেত্রীদের স্টাইল অনুকরণ করতে চেয়েছিলেন, যাদের চুল ছিল লম্বা এবং সুন্দর। শোবিজ দেশীয় শোবিজের আলোচিত্ত ১০ ঘটনা অন্যান্য বছরের ন্যায় চলতি বছরও দেশের শোবিজ ভুবন বেশ আলোচনামুখর ছিল। বলা যেতে পারে বিগত কয়েক বছরের চেয়ে ২০২৩ সালে একটু বেশি সংবাদের শিরোনামে এসেছেন দেশের শোবিজ তারকারা। শুধু দেশের গণমাধ্যম নয়, সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে শোবিজের অনেক ঘটনা। অন্যদিকে দেশের বাইরের মিডিয়াগুলোভেও বাংলাদেশের শোবিজের অনেক সংবাদ বেশ গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে।
জেনে নেওয়া যাক, চলতি বছরের শোবিজের আলোচিত ১০ ঘটনা
সম্পর্কে- ১. ঢালিউড কিং শাকিব খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ: এ বছরের মধ্য মার্চে আলোচনার শীর্ষে আসেন শাকিব খান। এ নায়কের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন রহমত উল্ল্যাহ নামের এক প্রযোজক। শাকিবের বিরুদ্ধে তিনি একজন নারী সহ-প্রযোজককে ধর্ষণের অভিযোগ করেন। চলচ্চিত্রের বিভিন্ন সংগঠনে তিনি এ অভিযোগ জানান। শুধু তা-ই নয়, বিষয়টি নিয়ে আইন-আদালত পর্যন্ত যেতে হয়েছে।
২. চিত্রনায়িকা পপির স্বামী-সন্তানের খবর: ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের ব্যাপক জনপ্রিয় নায়িকা পপি বছরের শেষে আলোচনায় আসেন। বলা চলে ভিনি বেশ কয়েক বছর ধরে অন্তরালে জীবনযাপন করছেন। অনেকদিন ধরে শোনা যাচ্ছিল তিনি গোপনে সংসার সেভেছেন। তবে চলতি মাসে খবর প্রকাশিত হয়- পপি এক সন্তানের জননী। তার সন্তানের নাম আয়াভ। স্বামীর নাম আদনান উদ্দিন কামান। তবে এ বিষয় নিয়ে পপির কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
৩. বছরটি ছিল জায়েদ খানের: চিত্রনায়ক জায়েদ খান বছরজুড়ে এভটাই আলোচনায় ছিলেন যে, বলা যায় ‘চলতি বছরটি ছিল জায়েদ খানের’! ভবে জায়েদের কোনো সিনেমা আলোচনায় ছিল না। তিনি নানান ধরনের বক্তব্য ও মুখরোচক মন্তব্য করে শোবিজ মাতিযে রেখেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি ছিলেন ভাইরাল। তার ডিগবাজি ও ‘নারী জায়েদ খালে আটকায়’ মন্তব্যে আলোচনার ঝড় ওঠে।
৪. পরীমণি ও রাজের সংসারে ভাঙন: ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণি ও নায়ক শরিফুল রাজ প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। তাদের সংসারে শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য নামের এক ছেলে রয়েছে। সুখেই তারা দিন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ তাদের সংসারে দেখা দেয় কালো মেঘ। ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে তারা সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন অনেকবার। পরে পরীমণি ডিভোর্স লেটার দেন শরিফুল রাজকে। ঘটানাটি নিয়ে বেশ কয়েক মাস শোবিজ অঙ্গন মুখর ছিল।
৫. ভেঙেছে অভিনেত্রী ভানিয়া ও টুটুলের ঘর: শ্রোতাপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এস আই টুটুল এবং অভিনেত্রী ভানিয়া আহমেদের দীর্ঘদিনের সাজানো ঘর ভেঙেছে। তাদের সংসার ভাঙার সংবাদও বেশ আলোচিত ছিল। এ ভারকা দম্পতির ২৩ বছরের সংসার জীবন ইভিটানার খবরে অনেক কষ্ট পেয়েছেন তাদের ভক্ত-অনুরাগীরা।
৬. দীর্ঘ সময় আলোচনায় ছিলেন অপু-বুবলী: ঢালিউড নায়িকা অপু বিশ্বাস ও বুবলী চলতি বছরের দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন। তারা দুজনেই ঢাকাই সিনেমার শীর্ষ নায়ক শাকিব খানের সঙ্গে গোপনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ও সন্তানের মা হন। কিন্তু ভারা এখন দুজনেই শাকিবের সাবেক স্ত্রী। তবে অপু-বুবলীর ঝগড়ায় সোশ্যাল মিডিয়া বেশ উত্তম্ভ ছিল। তারা রীতিমতো সাইবার যুদ্ধে নেমে ছিলেন! তারা ভাদের সংসারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বছরের বিভিন্ন সময় স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এতে তারা একে অন্যজনকে দোষারোপ করেছেন।
৭. ভানজিন তিশাও ছিলেন সংবাদের শিরোনামে: টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানজিন তিশাও ছিলেন ব্যাপক আলোচনায়। তার সঙ্গে অভিনেতা মুশফিক ফারহানের প্রেমের গুঞ্জন শোনা যায়। তবে আলোচনাকে ছাপিয়ে যায় অন্য এক ঘটনা। ভিনি এক সাংবাদিককে ‘উড়িয়ে দেবেন’- এমন মন্তব্য করেন। এর প্রতিবাদে দেশের বিনোদন সাংবাদিকরা রাজধানীতে মানববন্ধন করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে তিশা দুঃখ প্রকাশ করেন।
৮. চুমু কাণ্ডের শিরিন শিলা: এ বছরের মার্চ মাসে রাজধানীর অদূরে ধামরাইয়ে শুটিং করতে গিয়েছিলেন নতুন প্রজন্মের নায়িকা শিরিন শিলা। শুটিং স্পটে ছুটে আসেন তার এক ভক্ত। নায়িকার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে শুরুতে শিরিন শিলা ইতিবাচকভাবেই গ্রহণ করেন। পরে সেই ভক্ত শিরিন শিলাকে চুমু দেন। অসূত্র রানা নির্মিত ‘দ্য রাইটার’ সিনেমার শুটিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। এরপর পরই চুমুর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
৯. আলোচিত-সমালোচিত সেলিব্রেটি ক্রিকেট লিগ: দেশের শোবিজে প্রথমবারের মতো তারকাদের শিল্পীদের নিয়ে সেলিব্রেটি ক্রিকেট লিগের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এর শুরুতেই সমালোচিত হয় এ আয়োজনটি। এমনকি তারাকাদের মাঝে মারামারির মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এ ঘাটনা নিয়ে তারকা ও এদের ভক্তদের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এক পর্যায়ে সেলিব্রেটি ক্রিকেট লিগ বন্ধ হয়ে যায়।
১০. তাপস-মুন্নী এবং বুবলীর ঘটনায় তোলপাড়: সংগীতশিল্পী ও গানবাংলা টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৌশিক হোসেন ভাপসের সঙ্গে অভিনেত্রী বুবলীর ‘কথিত প্রেমের ঘটনা’ সোশ্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমে একের পর এক থবর হয়ে আসতে থাকে। তাপসের স্ত্রী গানবাংলা টিভির চেয়ারম্যান ফারজানা মুন্নী সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাস দেওয়ার স্বল্প সময়ের মধ্যেই সেটি মুন্নীর আইডি থেকে মুছে দেওয়া হয়। পাশাপাশি তার ফেসবুক হ্যাক হয়েছে দাবি করে আরেকটি স্ট্যাটাস দেন মুন্নী। এভাবেই ঘটনাটি তীব্র আকার ধারণ করে।
১৩ ডিসেম্বর ফেসবুকে অপু বিশ্বাস ফেসবুকে কারও নাম উল্লেখ না করে ভাপস-মুন্নীকে লক্ষ্য করে ইঙ্গিতময় স্ট্যাটাস দেন। এমন ঘটনার সূত্র ধরে তুলকালাম ঘটনা ঘটে। পরে তাদের বিষয়টি ডিবি কার্যালয় পর্যন্ত গড়ায়।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
আপনার মতামত লিখুন........