আলোকিত নারায়ণগঞ্জ : ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানার ১০নং সেক্টর এলাকায় লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড নামক ভুয়া এমএলএম কোম্পানিতে অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ২৪ জনকে গ্রেফতার করেছেন র্যাব-১১ এর সদস্যরা। এ সময় র্যাব সদস্যরা ১০১ জন প্রতারিত ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে।
অভিযানের সময় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ নথিপত্র জব্দ করা হয়। গতকাল রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ বিষয়ে সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে অবস্থিত র্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরীর পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- নজরুল ইসলাম (২৮), গোলাম কিবরিয়া (৩৮), সিদ্দিকুর রহমান (৩৭), বিপুল চৌধুরী (২৮), সালমান ফারসি (২০), সেলিম রেজা (২৭), খায়রুজ্জামান টিটু (২৫), আলী আকবর (২২), সুজন মিয়া (২৫), কামরুল আহসান (৪৯), রুহুল আমিন (২১), সুমন মুন্সী (৩১), ইসমাইল হোসেন (২৩), রেজাউল করিম (২৫), ইসমাইল হোসেন (২২), আরিফুল ইসলাম যাদু (২৬), আল আমিন (২১), মোবারক হোসেন (২০), মাহাবুর রহমান (২৬), মেহেদী হাসান (২২), মাইদুল ইসলাম (২৬), সোহাগ (২৯), রাকিব শেখ (২৪), ও সাদ্দাম হোসেন (২৫)।
র্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী জানান, অতীতে বিভিন্ন এমএলএল কোম্পানি প্রতারণার মাধ্যমে দেশের সাধারণ জনগণের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে। ফলে সরকার বিভিন্ন এমএলএম কোম্পানির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। এরপরও বিভিন্ন এমএলএম কোম্পানি নানা পন্থায় এখনও প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং বেকার যুব সমাজকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এ ধরনের প্রতারিত ও ভুক্তভোগী কয়েকজনের কাছ থেকে প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে এবং অনুসন্ধানে প্রাপ্ত অভিযোগের সত্যতার ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর সিপিএসসি’র একটি দল তাদের গ্রেফতার করে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি আরও জানান, গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও জব্দকৃত নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা যায় যে, ওই লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামক ভুয়া এমএলএম কোম্পানি মাসিক ১৬ হাজার ও তারও বেশি টাকা বেতনের প্রতিশ্রুতিসহ লোভনীয় অফার দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে চাকরিপ্রত্যাশী বেকার যুবক-যুবতীদের ফাঁদে ফেলে। ভর্তির শুরুতে কোম্পানির আর্থিক লাভ ও পণ্য বিক্রির কমিশনের আশ্বাসে বাধ্যতামূলক জামানত হিসেবে প্রতিজনের কাছ থেকে ৫৫ হাজার থেকে তারও বেশি টাকা গ্রহণ করে। পরে প্রশিক্ষণের নামে সপ্তাহ খানেক কালক্ষেপণ করে প্রত্যেককে নতুন দুজন সদস্য সংগ্রহের শর্ত দেয়। নতুন সদস্য সংগ্রহ করলে সংগৃহীত টাকার সামান্য কমিশন প্রদান করে। নতুন সদস্য দিতে না পারলে কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে খালি স্ট্যাম্প ও আপসনামায় জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে তাড়িয়ে দেয়। প্রতিবাদ করলে ভাড়াটিয়া লোকজন দিয়ে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতনও করে।
র্যাব আরও জানায়, অভিযানকালে ভুয়া এমএলএম কোম্পানির প্রশিক্ষণের নামে সেমিনার কক্ষ থেকে প্রতারণার শিকার ১০১ জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও ওই কোম্পানির অফিস থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত আটি মনিটর, বিপুলসংখ্যক নথিপত্র ও নগদ ৩১ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে র্যাব জানায়।
আপনার মতামত লিখুন........