আলোকিত নারায়ণগঞ্জ ২৪ ডট নেট : সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ মোরশেদ আলম ও এসআই সাধন বসাককে অবিলম্বে অপসারন ও তদন্তের সুষ্ঠ পরিবেশ সৃষ্টি এবং মামলার বাদীর নিরাপত্তা বিধানের দাবিতে সচেতন ছাত্র সমাজের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী বিভিন্ন প্লেকার্ড অংশ নেন। অবিলম্বে তাদের তিনটি যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৩ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে নারায়নগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সুব্রত ভৌমিক, ফাহাদ, রায়হান, রিতু আক্তার, নুসরাত জাহান সিয়াম প্রমুখ।
মানববন্ধনে ফাহাদ বলেন, গত ৮ অক্টোবর রাত ২.৩০ মিনিটে কোন প্রকার গ্রেফতারী পরোয়ানা, সমন বা কোন অভিযোগ ছাড়াই জাহিদুল ইসলাম স্বপনকে ২ জন মেহমানসহ আটক করে থানায় নিয়ে অমানুষিক শারিরীক নির্যাতন চালায়। শুধুমাত্র একটি পক্ষ থেকে বেআইনী সুবিধা পেয়ে এ জগন্য অন্যায় করেন সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ মোরশেদ আলম ও এস আই সাধন বসাক। পরে স্বপন মারাত্মক অসুস্হ্য হলে তাকে সোনারগাঁ স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। পরে থানায় নিয়ে রশিতে ঝুলিয়ে পুনরায় মারধর করে এবং ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। সচেতন ছাত্র সমাজ পুলিশের এমন অপেশাদার আচরনের তীব্র নিন্দা ও দোষী পুলিশ সদস্যদের অপসারন করে দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবি জানান।
মানববন্ধনে সুব্রত ভৌমিক বলেন, পুলিশ যখন ব্যক্তির লাঠিয়াল হয়ে জমি দখল করে, একজন নিরাপরাধ মানুষকে রশিতে ঝুলিয়ে অমানুষিক শারিরীক নির্যাতন চালায় তখন কোথায় থাকে মানবাধিকার, কোথায় থাকে বিবেক, কোথায় থাকে মানবতা। আমরা জাস্টিস ফর স্বপন গ্রুপে জয়েন্ট করেছি। নিউজ, অডিও শেয়ার করছি। ওসি ও এসআইকে অপসারন করা না হলে ছাত্র সমাজ কঠোর আন্দোলনে যাবে। জাহিদুল ইসলাম স্বপনের ৪ বছরের বাচ্চা এখনো পুলিশের নাম শুনলে চিৎকার করে উঠে, মায়ের আচঁলে মুখ লোকায়। পুলিশি নির্যাতনের ১৮ মিনিট ৫২ সেকেন্ডের রেকর্ডটি শোনার পর, আমি নিজেও রাতে ঘুমাতে পারি নি, খেতে পারি নি। আমি ঘুমের মধ্যে স্বপন ভাইকে রশিতে ঝুলিয়ে পিটানোর সময়ের তার আত্মচিৎকার শোনতে পাই। এভাবে, কোন মানুষকে পিটাতে পারে তা কখনো ভাবতে পারি নি। আমরা সচেতন ছাত্র সমাজ নিজেদের দায়বদ্ধতা ও মূল্যবোধ থেকে রাস্তায় দাড়িয়েছে। এমন জগন্য অন্যায়ের প্রতিবাদ অবশ্যই করবো।
মানববন্ধনে সচেতন ছাত্র সমাজের পক্ষে নুসরাত জাহান সিয়াম তিনটি দাবি জানান। দাবিগুলো হলো-
১. ন্যায়বিচারের স্বার্থে অবিলম্বে সোনারগাঁও থানার ওসি মোরশেদ আলম পিপিএম ও এসআই সাধন বসাককে সোনারগাঁ থানা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে।
২. ওসি ও এসআইকে প্রত্যাহার করে বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি রক্ষা করাসহ মামলার সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ এবং গ্রহনযোগ্য তদন্তের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
৩. জাহিদুল ইসলাম স্বপন ও তার পরিবার এবং মামলার স্বাক্ষীদেরকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, সচেতন ছাত্র সমাজ বিশ্বাস করে, ওসি ও এসআইকে সোনারগাঁ থানায় বহাল রেখে কখনো সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য তদন্ত সম্ভব হবে না, আর এই প্রশ্নবিদ্ধ তদন্ত সচেতন ছাত্র সমাজ ও নারায়নগঞ্জবাসী মানবে না।
মনে রাখতে হবে, রাষ্ট্রটা আমাদের সকলের, রাষ্ট্রের মালিক পুলিশ নয়, জনগন।
উল্লেখ্য যে, গত অক্টোবর মাসের ১১ তারিখে সোনারগাঁ থানার ওসি মোরশেদ আলম ও এসআই সাধন বসাকের বিরুদ্ধে নারায়নগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম স্বপন। মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত।
আপনার মতামত লিখুন........