আলোকিত নারায়ণগঞ্জ :নারায়ণগঞ্জের সাবেক পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের গেড়াকলে পড়ে ব্যবসায়ী থেকে শুধু করে অনেক জনপ্রতিনিধিও ছিলেন বেকায়দায়। হারুনের দাবীকৃত চাঁদা না দেয়ায় মিথ্যা মামলার হয়রানি করারও অভিযোগ রয়েছে অসংখ্য। নারায়ণগঞ্জে যোগদানের পর প্রথম দুই মাস হারুন রশিদ সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারলেও পরবর্তিতে তার আসল রূপ বেরিয়ে আসার পর আতংকে পড়ে যান ব্যবসায়ীরা। চায়ের দাওয়াত দিয়ে ব্যবসায়ীদের ডেকে এনে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছেন হারুনের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে একটি অনুষ্ঠানে সাংসদ শামীম ওসমান মন্তব্য করার পরই শামীম ওসমানের অনুসারিদের টার্গেট করে হারুন অর রশিদ। বিভিন্ন ইস্যু দাঁড় করিয়ে শামীম অনুসারিদের বেকায়দায় ফেলতে একের পর এক অভিযান পরিচালনা করেন হারুন। আর সেই টার্গেটের শিকার হন মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দুলাল প্রধান, ১৭নং কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু, টেনু গাজী, শাহ নিজাম থেকে শুরু করে আওয়ামীলীগের অনেক নেতা। তবে শাহ নিজের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র একটি সাধারণ ডায়েরী লিপিবদ্ধ হলেও সবচেয়ে বেশি গেড়াকলে পড়ে যান কাউন্সিলর বাবু। বাবুর অপরাধই ছিল তিনি সাংসদ শামীম ওসমানের অনুসারি ছিলেন। এক সপ্তাহে তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা হয়েছিল। বিগত দিনে যার বিরুদ্ধে থানা একটি সাধারণ ডায়েরীও হয়নি এমন ব্যক্তির নামে এক সপ্তাহে আটটি মামলা দায়ের নেপথ্যে ছিল হারুনের দাবীকৃত চাঁদা না দেয়ার কারণ। শুধু বাবুই নয়, তার ছেলে রিয়েনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। হারুনের আক্রোশ থেকে বাবুর পুত্র রিয়েনও ছাড় পায়নি। অভিযোগ রয়েছে, কয়েকজন বাদীকে রীতিমত জোর বাসা থেকে তুলে কাউন্সিলর বাবুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেয়েছে পুলিশ। একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে কাউন্সিলর বাবুর সামাজিক ইমেজ ক্ষুন্ন করে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালানো হয়। কাউন্সিলর দুলাল প্রধানকে ফেন্সিডিলসহ গ্রেফতার দেখান হারুন অর রশিদ। এছাড়াও জাকিরুল আলম হেলাল, শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, মীর সোহেল, কাউন্সিলর মতিইর রহমান মতি, কাউন্সিলর শাহ জালাল বাদল, কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজল, কাউন্সিলর আরিফসহ অনেকেই হারুনের টার্গেটে ছিল। এদের বেকায়দায় ফেলতে একাধিক নকশাও তৈরী করেছিল হারুন। এদিকে, হারুনের আক্রোশের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের ক্ষুন্ন হওয়া ইমেজ ফিরে পাওয়াটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গত ১০ জানুয়ারী চাষাড়া শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে নারায়ণগঞ্জকে অবরাধ মুক্ত করার ঘোষনা দিয়েছিলেন সাবেক পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ। ঐ সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জকে অপরাধ মুক্ত করার ঘোষনা দিলেও মূলত অপরাধীদেরও সাথেই তিনি সুসম্পর্ক তৈরী করে ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে বেআইনী কাজ শুরু করে আর্থিক ফায়দা লুটতে মরিয়া হয়ে উঠেন হারুন অর রশিদ। হারুনের দাবীকৃত চাঁদা নেয়া দেয়ায় অনেককেই মামলা দিয়ে হয়রানী করা হয়। গত ৩ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন আর রশীদকে পুলিশ হেড কোয়াটারে বদলী হওয়ার পর থেকেই হারুন অর রশিদের নানা বেআইনী কাজের তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করে।
আপনার মতামত লিখুন........