বিশেষ প্রতিনিধি:যোগ্য নেতার অভাব আর জেলা কমিটি না থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির কার্য্যক্রম। এর মধ্যে দলীয় কোন্দল থাকায় জেলা বিএনপির রাজনীতি এখন নাজুক অবস্থা। সব মিলিয়ে বিএনপির এই অবস্থার কারণে আগ্রহ হারাচ্ছে তৃনমূল নেতৃবৃন্দ। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে করোনা পরিস্থিতিতে জনগণের পাশে থেকে সমর্থন ফিরে পাওয়ার সুযোগ থাকলেও তা হাতছাড়া করছে বিএনপি। এই জেলায় প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের করোনা পরিস্থিতিতে সক্রিয়তা দেখা গেলেও খোঁজ মিলেনি বিএনপির প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দের। এর কারণ হিসেবে বিএনপির দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির নেতা-কর্মীরা বলেন, কমিটি না থাকায় দলের কোনো চেইন অব কমান্ড নেই। তাই কোনো দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেয় না কর্মীরা। তেমনভাবে কোনো দলীয় কর্মসূচিও পালন হয় না। ফলে দলীয় কর্মীরা একলা চল নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে উঠছে। এসব কারণে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে তেমন জড়িত হচ্ছে না নতুন প্রজন্মও।
তারা বলেন, জেলা বিএনপির মূল কমিটি না থাকায় দলের নেতৃত্ব প্রদানকারী সিনিয়র নেতারা অনেকেই কর্মীদের কথা ভুলে গেছে। তাই বিএনপির কর্মীরাও এখন আরা সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে এড়িয়ে চলছে। কর্মীরা দিনদিন বিএনপির দ্বিতীয় সারির নেতা-কর্মীদের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছে। দুই-চার জন নেতা থাকলেও করোনাকালীন দুঃসময়ের মধ্যেও কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে। তাই দিন দিন জেলা বিএনপি ও দলীয় অঙ্গ সংগঠনগুলো জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এবং বিএনপি নেতা এড.তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে করোনা পরিস্থিতিতে বিএনপির রাজনৈতিক কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। তাই জেলা বিএনপিসহ বিএনপির অঙ্গ সংগঠনগুলো কোনো দলীয় কার্যক্রম করছে না। তবে যতটুকু সম্ভব হয়েছে ব্যাক্তিগত উদ্যোগে দলের সাধারন নেতা কর্মীদের খোঁজ খবর নেয়া হয়েছে। যতটুকু সম্ভব হয়েছে সাধ্য অনুয়ারী নেতা কর্মীদের সহযোগিতা করা হয়েছে। তবে এটা সত্য দলের মূল দলের কমিটি না থাকায় টালমাটাল ভাবেই মাংগঠনিক কার্য্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তবে এ সংকট দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন।
প্রসঙ্গত,গত ২১ ফেব্রুয়ারী নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সকল কার্য্যক্রম বিলুপ্তি ঘোষনা করা হয়। কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদ্য বিলুপ্ত হওয়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদ। পরবর্তী নতুন কমিটি গঠন না হওয়া পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলার সব উপজেলা ও পৌর বিএনপির কার্যক্রম কেন্দ্রীয় কমিটির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের পরামর্শে পরিচালিত হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কাজী মনিরুজ্জামান মনিরকে সভাপতি ও মামুন মাহমুদকে সাধারণ সম্পাদক করে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। এর দুই বছর পর জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন........