আলোকিত নারায়ণগঞ্জঃ সোনারগাঁয়ে বস্তল এলাকায় অবৈধ সিএনজি স্টেশনে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস (সিএনজি) সিলিন্ডারের মাধ্যমে অবৈধভাবে বোতলজাত করে অটোরিকশা শিল্প-কারখানা ও বাসাবাড়িতে জ্বালানি হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কাভার্ড ভ্যানে করে একাধিক সিলিন্ডার স্থাপন করে এ সিএনজি স্টেশন থেকে গ্যাস নিয়ে একটি নজেলের মাধ্যমে ছোট ছোট অবৈধ অটোরিকশা, বাসাবাড়ি, কলকারখানার কাজে এ গ্যাস বিক্রি করা হচ্ছে। অবৈধ সিএনজি স্টেশন বন্ধ করতে পুলিশ প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিস্ফোরক পরিদপ্তর কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, যানবাহনে সরাসরি গ্যাস বিক্রির চেয়ে কাভার্ট ভ্যানে লুকানো অতিরিক্ত সিলিন্ডারের মাধ্যমে গ্যাস বিক্রিতে লাভজনক। তাই অবৈধভাবে সিএনজি স্টেশন বিপজ্জনক কায়দায় গ্যাস বিক্রি করছে সোনারগাঁওয়ের জামপুর ইউনিয়নের বস্তল মসজিদের পাশে একটি ভ্রাম্যমাণ অবৈধ সিএনজি স্টেশন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের বস্তল মসজিদের পাশে বাড়িঘরে মাঝখানে একটি পরিত্যক্ত জমিতে একচালা টিনের ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এ টিনের ঘর থেকে বিভিন্ন অবৈধভাবে অটোরিকশা বাসাবাড়ি, কল-কারখানার কাজে ব্যবহার করা সিলিন্ডারে গ্যাস দেয়ার জন্য একটি নজেল স্থাপন করা হয়েছে। সিলিন্ডারে গ্যাস দেয়ার জন্য মাটির নিচে একটি বিশাল আকৃতির সিলিন্ডার বসানো হয়েছে। ওই সিলিন্ডারে কাঁচপুরের একটি সিএনজি ষ্টেশন থেকে ট্রাক ও কভার্ড ভ্যানে করে কয়েকটি বিশাল আকৃতির সিলিন্ডারের মাধ্যমে গ্যাস এনে মজুদ রেখে বিভিন্ন পরিবহন, বাসাবাড়ি, কলকারখানার এ গ্যাস বিতরণ করা হচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, জামপুর ইউনিয়নের মীরেরবাগ গ্রামের বিল্লাল হোসেন, কাঁচপুর এলাকার সামসুদ্দোহা ওরফে দোহা কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনের প্রভাব খাটিয়ে বাসা বাড়ির মধ্যবর্তী স্থানে একটি পরিত্যক্ত জমিতে ফিলিং স্টেশন নির্মাণ করেছেন। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে গত কয়েক মাস ধরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে কাভার্ড ভ্যানে সিলিন্ডার মজুদ রেখে বেশি দামে গ্যাস বিক্রি করে। সিএনজি ফিলিং স্টেশন নির্মাণের এলাকাবাসী বাঁধা দিলে তা নির্মাণ করেন। যে কোন সময় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে এ গ্যাস স্টেশনে। স্থানীয়রা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করলেও প্রশাসন এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়নি।
সিএনজি স্টেশন থেকে গ্যাস নেওয়ার সময় সিএনজি চালক ফরিদ জানান, মহাসড়কের পাশের সিএনজি পাম্পে অবৈধভাবে গ্যাস বিক্রি শুরু হয়েছে। রিকশা ও ভ্যান, অটোভ্যান, লেগুনা, কাভার্ড ভ্যানে কয়েকটি করে সিলিন্ডার রেখে বিক্রি করা হচ্ছে।
সিএনজি স্টেশনের মালিক সামসুদ্দোহা ওরফে দোহা বলেন, দেশের সব সিএনজি স্টেশন থেকে এভাবেই গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। ঢাকার শিল্প-কারখানাগুলোতেও এভাবে সরবরাহ করা হয়। তাদের কোন বৈধ কাগজপত্র নেই বলে তিনি জানান।
তিতাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সোনারগাঁও শাখার ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. মেজবাউল রহমান জানান, এ বিষয়টি বিস্ফোরক পরিদপ্তরে সরাসরি নজরদারি করে থাকেন।
সোনারগাঁ থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এসব অবৈধ সিএনজি ষ্টেশনের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কোন চিঠি আমরা পাইনি। তবে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ বিস্ফোরক পরিদপ্তরে পরিদর্শক মো. সামসুল আলম বলেন, অবৈধ সিএনজি স্টেশন ও অবৈভাবে গ্যাস সিলিন্ডারের মাধ্যমে গ্যাস বিক্রি বন্ধে প্রতিটি থানায় একটি করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এসব সিএনজি স্টেশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। অবৈধ স্টেশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্রঃ দৈনিক অধিকার
আপনার মতামত লিখুন........