নারায়ণগঞ্জবুধবার , ২৪ অক্টোবর ২০১৮
  1. অর্থনীতি
  2. আরো
  3. এক্সক্লুসিভ
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. নারায়ণগঞ্জ
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. লিড নিউজ
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সারাদেশ

সোনারগাঁয়ে স্কুলে না এসেও খাতায় ভৌতিক স্বাক্ষর শিক্ষক দম্পতি

alokitonarayanganj
অক্টোবর ২৪, ২০১৮ ৮:৫১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আলোকিত নারায়নগঞ্জ ২৪ ডট কম : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নের আনন্দবাজার পঞ্চবটি এলাকায় অবস্থিত হাজ্বী মতিউর রহমান সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক সানজিয়া ইয়াসমিন ও সামাজিক বিজ্ঞানের শিক্ষক মাহমুদুর রহমান সরকার নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও খাতায় স্বাক্ষর করছেন।

এছাড়াও মাহমুদুর রহমান সরকার স্কুলে অনুপস্থিত থেকে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে দুই বছর স্কুল ফান্ড থেকে প্রতি মাসে সাড়ে ৮হাজার টাকা করে বেতন তুলেছেন। স্কুলের সভাপতির ছেলে, পুত্রবধু হওয়ার সুবাদে এ অপকর্ম করছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীরা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক।

জানা যায়, উপজেলার বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নে আনন্দবাজার পঞ্চবটি এলাকার হাজী মতিউর রহমান সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০০৪ সালে সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন মাহমুদুর রহমান সরকার ও ২০১৫ সালের জুলাই মাসে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান তার স্ত্রী সানজিয়া ইয়াসমিন। তাদের নিয়োগের পর থেকে বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু তিনি স্কুলে এসে কোন দিনও শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেননি বলে জানিয়েছেন শিক্ষক কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা। এমনকি শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে চিনেও না।

এছাড়াও মাহমুদুর রহমানের স্ত্রী সানজিয়া ইয়াসমিনকে নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় তৎকালীন শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম আবু তালেব নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেননি। নিয়োগের পর থেকে বিদ্যালয়ে না এসেও হাজিরা খাতায় উপস্থিতি স্বাক্ষর করছেন। কখনো অফিস সহকারী আবার কখনো প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে বাড়িতে হাজিরা খাতা নিয়ে অনুপস্থিত থেকে উপস্থিতি স্বাক্ষর করছেন স্বামী ও স্ত্রী। প্রধান শিক্ষকের বড় ভাই ও ভাবি হওয়ার সুবাধে প্রধান শিক্ষক এ অপকর্মে সহযোগিতা করছেন।

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার ও শাহিন আলম, সাদিয়া আক্তার বলেন, সানজিয়া ইয়াসমিন ও মাহমুদুর রহমান নামের কোন শিক্ষককে আমরা কখনো দেখি নাই, চিনিও না। এ নামের দু’জনের কেউ কখনো আমাদের স্কুলে ক্লাস নেননি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ২০০২ সালে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি হাজ্বী মতিউর রহমান সরকার। তিনি নিজে সভাপতি, ছেলে মাকসুদুর রহমান প্রধান শিক্ষক, আরেক ছেলে মাহমুদুর রহমান সরকার সামাজিক বিজ্ঞান শিক্ষক, ছেলের স্ত্রী সানজিয়া কম্পিউটার শিক্ষক। এছাড়া প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা সদস্য পদে তাঁর পরিবারের পাঁচজন সদস্যের নাম রয়েছে।

বৈদ্যের বাজার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, মাকসুদুর রহমান ২০০৪ সালে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে তিনি দীর্ঘ ৫বছর স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত ভর্তি ফি, পরীক্ষার ফিসহ উন্নয়নের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় হওয়া টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা অফিসে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এলাকাবাসীর আরো অভিযোগ, স্কুল প্রতিষ্ঠার পর থেকে হাজ্বী মতিউর রহমান সরকার নিজে সভাপতি থাকার জন্য পকেট কমিটি করে সভাপতি বনে গিয়েছেন। তিনি সভাপতি থাকাবস্থায় স্কুলের আয় ব্যয়ের কোন হিসাব রাখেননি। যা আয় হয়েছে তিনি একাই ভোগ করেছেন। এছাড়াও দীর্ঘদিন পর সভাপতি পদে গত ৩০ আগষ্ট নির্বাচনে হলেও সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন স্থানীয় মোহাম্মদ আলী। প্রথমে ফলাফল মেনে নিলেও পরবর্তীতে শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ করেছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। তিনি অভিযোগ করেছেন, রাজনৈতিক প্রভাবে এ নির্বাচনে তাকে হারানো হয়েছে। এখনও তিনি নিজেই সভাপতি পদে বহাল থাকার জন্য পায়তারা করছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলের একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক বিধি মোতাবেক কোন খরচ করেন না। তাদের মনগড়া মতো টাকা আদায় করে পকেটে ভরে নিয়ে যান। স্কুলের স্টক রেজিস্টার, ক্যাশ বই, রশিদ বই বিতরণ রেজিস্টার পরিচালনা করেন না। এগুলো না থাকার কারনে স্কুলে অনিয়ম ও দূর্নীতির সুযোগ পাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি।

স্কুলের জমি দাতা আজিজুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের নামে ৩৭শতাংশ জমি দান করার দুই বছর পর জানতে পারি জমিটি মতিউর রহমান সরকার নিজের নামে সাফ কবলা করে নিয়েছেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে সঙ্গে জানিয়েছি। আমি দান করলাম স্কুলের নামে তিনি তার নিজের নামে জমি লিখে নিয়েছেন।

হাজ্বী মতিউর রহমান সরকার বলেন, স্কুলে খন্ডকালিন অতিরিক্ত শিক্ষক থাকার কারনে তাদের এমপিও না হওয়া পর্যন্ত দুজন শিক্ষককে স্কুলে যোগদান করতে মানা করা হয়েছে। তাছাড়া কম্পিউটার শিক্ষক বর্তমানে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন। অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন। জমির বিষয়ে বলেন, জমিটি আমি আজিজুলের কাছ থেকে নগদ টাকায় সাফ কবলা দলিলের মাধ্যমে ক্রয় করেছি। সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।

সোনারগাঁ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম প্রধান বলেন, হাজ্বী মতিউর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি অভিযোগ পেয়েছি। শীঘ্রই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয় হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ২৮ অক্টোবর তদন্ত করে প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হাজী মতিউর রহমান সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাকসুদুর রহমান সরকার বলেন, নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অনুমতি নিয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য ইংল্যান্ড গিয়েছিলাম।

সানজিয়া ইয়াসমিনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন। তাঁর ছুটির মেয়াদ শেষ হলেও বিদ্যালয়ে হাজির না হওয়ার কারণ দর্শানোর নোটিশ করব। তারপর হাজির না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মতামত লিখুন........

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: দুঃখিত রাইট ক্লিক গ্রহনযোগ্য নয় !!!